সার্ভারের প্রকারভেদ
সার্ভারের প্রকারভেদ আপনার নেটওয়ার্কের আকার বৃদ্ধির সাথে সাথে নেটওয়ার্ক সার্ভারের সংখ্যা বাড়তে থাকবে। আর সেসব ক্ষেত্রে। একেকটি সাভারের কাজ ভিন্ন করে দেয়া যেতে পারে। প্রতিটি সার্ভার থাকবে বিশেষ ধরনের কাজের জন্য। যেমন। কোনাে সার্ভারকে ব্যবহার করতে পারেন কেবল লগ- অন সার্ভার হিসেবে, কোনােটি প্রিন্ট সার্ভার হিসেবে, আর কোনােটি বা ফাইল সার্ভার হিসেবে। যখন কোনাে ইউজার নেটওয়ার্কে লগ-ইন করছে তখন তার ইউজার নেম। এবং পাসওয়ার্ড যাচাই করবে লগ- অন সার্ভার, যখন প্রিন্ট করতে চায় তখন সে প্রিন্ট সার্ভারের সাথে সংযুক্ত। প্রিন্টারে প্রিন্ট পাঠাবে, আর যখন কোনাে ফাইলে একসেস করতে চাইবে তখন ফাইল সার্ভারের সাথে সংযােগ । করবে। এভাবে একেকটি সার্ভারের রােল বা ভূমিকা ভিন্ন করে দিয়ে নেটওয়ার্কের পারফরম্যান্স উন্নত করা যেতে পারে।
একটি নেটওয়ার্কে সার্ভারের ভূমিকা বা কাজ অনুসারে সার্ভারসমূহকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়। এরকম কয়েকটি সার্ভার সম্পর্কে জানব এখন।
ফাইল সার্ভার
ফাইল সার্ভারের কাজ হলাে নেটওয়ার্ক ইউজারদের জন্য বিভিন্ন ফাইল শেয়ার করা যাতে ইউজাররা সহজে যেকোন সময় তাদের প্রয়োজনীয় ফাইলে প্রবেশ করতে পারে। ফাইল সার্ভার চলে এমন এক নেটওয়ার্ক সার্ভিস যার মাধ্যমে কোনাে সার্ভার ডাটা স্টোর করা যায়, সেই ডাটাকে পড়া যায় এবং প্রয়ােজনে অন্যত্র স্থানান্তর করা যায়। বেশিরভাগ নেটওয়ার্কেই এধরনের সার্ভার ব্যবহার করা হয়। কারণ ডাটা শেয়ারিঙই বেশিরভাগ নেটওয়ার্কের উদ্দেশ্য। ফাইল সার্ভিস থাকার ফলে আপনি সেই সার্ভারে ডাটা জমা রাখতে পারবেন, সেই ডাটা পড়তে পারেন, যেখানে প্রয়োজনীয় পারমিশন সেট করতে পারবেন এবং প্রয়োজনমতো সেই ডাটার ব্যাকআপ নিতে পারবেন। বাজারে বিভিন্ন ধরনের ফাইল সার্ভার রয়েছে, যেমন উইন্ডােজ এনটি, উইন্ডােজ ২০০০, উইন্ডােজ ২০০৩, লিনাক্স, নভেল নেটওয়ার্ক, এপ শেয়ার এবং ব্যানিয়ান ভাইনস।(সার্ভারের প্রকারভেদ)
ফাইল সার্ভারের জন্য সেই সার্ভারে পর্যাপ্ত হার্ডডিস্ক স্পেস থাকতে হবে। সেইসাথে দরকার পড়ে প্রচুর মেমরি বা RAM। কারণ ফাইল সার্ভারে কোনাে ইউজার যখন কোনাে ফাইলে প্রবেশ করে তখন সার্ভার সেই ফাইলটি প্রথমবার হার্ড ডিস্ক থেকে ইউজারকে দেয় এবং সেই ফাইলকে ক্যাশে (cache) রাখে যাতে পরবর্তীতে কেউ সেই ফাইল চাইলে পুনরায় হার্ডডিস্কে সেই ফাইল খুঁজতে যেতে না হয়। এই ক্যাশিঙের জন্য প্রচুর RAM দরকার পড়ে। আপনার সার্ভারে যত বেশি RAM থাকবে তত ফাইল ক্যাশিং বেশি হবে এবং সচরাচর ব্যবহৃত ফাইলগুলিতে ইউজাররা খুব দ্রুত প্রবেশ করতে পারবে। উইন্ডােজ এনটি সার্ভার, উইন্ডােজ ২০০০ ও উইন্ডােজ ২০০৩ এ পদ্ধতিতে ফাইল সার্ভারের কাজ করে।
প্রিন্ট সার্ভার
একটি প্রিন্টার ব্যবহার করে নেটওয়ার্ক সবাই যাতে প্রিন্ট করতে সেজন্য নেটওয়ার্কে প্রিন্টার শেয়ার করা হয়। প্রিন্ট সার্ভারের কাজ হলাে নেটওয়ার্কের জন্য প্রিন্ট সার্ভিস দেওয়া। সার্ভার ব্যবহারের মাধামে আপনি নিচের সুবিধাগুলি পেতে পারেন:
- একটি বা দুটি প্রিন্টার নেটওয়ার্কের সব ইউজারের জন্য শেয়ার করতে পারেন।
- প্রতিটি কম্পিউটারের সাথে প্রিন্টার যোগ না করে একটি স্থানে সকল প্রিন্টারকে এ ফলে প্রিন্টারসমূহ ম্যানেজ করতে সুবিধা হয়।
- প্রিস্টিঙের কাজ একটি সার্ভারের ওপর ন্যস্ত থাকায় ওয়ার্কশ্টেশনগুলোে প্রিন্টিং, স্পুলিং, প্রিন্টার কিউ ম্যানেজ করা ইত্যাদি কাজ থেকে রেহাই পায় বলে অনা কাজ ভালভাবে করতে পারে।
প্রিন্ট সার্ভারে নেটওয়ার্কের বিভিন্ন ইউজার একইসাথে লন্ট পাঠাতে পারে। প্রিন্ট সার্ভার সেই সব প্রিন্ট জব গ্রহণ করে এবং প্রিন্ট কিউ তৈরি করে। প্রিন্ট কিউ- এর প্রতিটি ডকুমেন্ট পুল হয়ে জমা থাকে প্রিন্ট যতক্ষণ না পুরাে প্রিষ্ট জবটি শেষ হয়। (সার্ভারের প্রকারভেদ) ইউডার ওয়ার্কস্টেশন থেকে প্রিন্ট জবটি প্রিন্ট সার্ভারের প্রিন্ট কিউ- এ চলে গেলেই ইউজার ওয়ার্কস্টেশন ফ্রি হয়ে যায়। প্রিন্ট সার্ভারে সেই জবটি প্রিন্ট হবে আগের জবগুলি শেষ হওয়ার পর। তবে কোন ইউজারের প্রিন্ট জব আগে প্রিন্ট হবে তাও নির্দেশ করা যেতে পারে কোনাে কোনাে প্রিন্ট সার্ভারে। আরেক ধরনের প্রিন্ট সার্ভার হিসেবে ফ্যাক্স সার্ভারের উল্লেখ করা যেতে পারে। এধরনের প্রিন্ট সার্ভার আসলে ফ্যাক্স মেশিন হিসেবেই কাজ করে। ধরা যাক আপনি একটি ফ্যাক্স পাঠাতে চান। তাহলে সেই ডকুমেন্টটি ফ্যাক্স সার্ভারে পাঠান। ফ্যাক্স সার্ভার সেটি উপযুক্ত ফ্যাক্স মেশিনে পাঠিয়ে দেবে। এর ফলে আপনাকে সেই ডকুমেন্টটি প্রথমে সাধারণ প্রিন্টারে প্রিন্ট করে নিয়ে আবার স্ক্যান করে ফ্যাক্স মেশিন দিয়ে পাঠানোর দরকার পড়ে না। এধরনের ফ্যাক্স সার্ভার ব্যবহার করা হলে নেটওয়ার্ক ইউজাররা সহজেই ফ্যাক্স পাঠাতে ও গ্রহণ করতে পারেন।
মেসেজিং সার্ভার
নেটওয়ার্ক ইউজারদের মেসেজিং সুবিধা দেয়ার জন্য ব্যবহার করা হয় মেসেজিং সার্ভার। এই মেসেজিং সার্ভার। বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। কোনটি ইলেকট্রনিক মেসেজ ট্রান্সফারের সুবিধা দেয়, কোনটি দেয় গ্রুপওয়্যার চালানাের সুবিধা। মেসেজিং সার্ভিসের মাধ্যমে বিভিন্ন ফরম্যাটে, যেমন গ্রাফিক্স, ডিজিটাইজড ভিডিও, অডিও এবং টেক্সট হিসেবে ডাটা প্রবাহিত হতে পারে। মেসেজ সার্ভিসের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক নােট, সংযুক্ত ভয়েস। মেইল, ইত্যাদি অন্য ইউজারের নিকট পাঠাতে পারেন। মেসেজিং সার্ভারকে দুটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যেতে পারে: ইলেকট্রনিক মেইল ও ওয়ার্কগ্রুপ এপ্লিকেশন। ইলেকট্রনিক মেইল সার্ভিস নেটওয়ার্ক ইউজাররা একজন আরেকজনের নিকট ইলেকট্রনিক ফরম্যাট মেসেজ পাঠাতে পারে। মাইক্রোসফট মেইল, লোটাস সিসি মেইল, মাইক্রোসফট এক্সচেঞ্জ সার্ভার, নেটস্কেপ মেসেজিং সার্ভার, ইত্যাদি এ ধরনের সার্ভার হিসেবে কাজ করে।(সার্ভারের প্রকারভেদ)
ওয়ার্কগ্রুপ এপ্লিকেশনসমূহে শুধু ইলেকট্রনিক মেইলই আদান-প্রদান করা যায় না, সেই সাথে বিভিন্ন ডকুমেন্ট শেয়ার ও রিভিউ, টাস্ক শিডিউল মেইনটেইন, মিটিং প্ল্যানিং, ইত্যাদি কাজ করা যায়। মাইক্রোসফট এক্সচেঞ্জ সাভার, লোটাস সিসি মেইল ও নভেল গ্রুপ ওয়াইজ- কে এই ধরনের মেসেজ সার্ভার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। ওয়ার্কগ্রুপ ক্লায়েন্ট এপ্লিকেশন হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে মাইক্রোসফট আউটলুক ৯৭/৯৮/২০০০/এক্সপি।
এপ্লিকেশন সার্ভার
নেটওয়ার্কের ইউজাররা যাতে একটি সার্ভার থেকে বিভিন্ন এপ্লিকেশন ব্যবহার করতে পারে সেজন্য এপ্লিকেশন। সার্ভার ব্যবহার করা হয়। নেটওয়ার্কে প্রতিটি মেশিনে একই এপ্লিকেশন ভিন্নভাবে ইনস্টল করা ও তা ম্যানেজ করলার বহুবিধ সমস্যা আছে। প্রথম সমস্যা হলে এভাবে প্রতিটি মেশিনের জন্য ওই সফটঅয়্যার ভিন্নভাবে কিনতে হবে। দ্বিতীয় সমস্যা হলে প্রতিটি মেশিনে তা ইনস্টল করা, মেইনটেইন করা ও প্রয়ােজনে আপগ্রেড করা। পাঁচটি মেশিনে মাইক্রোসফট অফিস ২০০৭ ইনস্টল করা সহজ হলেও আপনার নেটওয়ার্কে যদি একহাজার মেশিন। থাকে এবং এসব মেশিন ব্যবহারকারীদের মাঝে মধ্যে মাইক্রোসফট অফিসের কোনাে এপ্লিকেশন ব্যবহার করার দরকার হয় তাহলে কী করবেন? এক হাজার মেশিনে শুধু অফিস ইনস্টল করতেই কয়েকদিন লেগে যাবে। আবার কখনও আপগ্রেড করার দরকার পড়লে আরেক ঝামেলা। এ সমস্যার সমাধান হলাে নেটওয়ার্ক থেকে সেই। এপ্লিকেশন ব্যবহার। নেটওয়ার্কের এপ্লিকেশন সার্ভারে অফিস ইনস্টল করে তা অন্যদের জন্য শেয়ার করে দেয়া। যেতে পারে। তাহলে যখন যার প্রয়োজন সার্ভার থেকে সেই এপ্লিকেশন চালাতে পারবে।(সার্ভারের প্রকারভেদ)
কিছু কিছু এপ্লিকেশন আছে যা নেটওয়ার্কে ব্যবহারের জন্য তৈরি, আবার কোনটির জন্য নেটওয়ার্ক ভার্সন রয়েছে। প্রতিটি মেশিনের ভিন্ন ভাবে এসব সফটওয়্যার ইনস্টল করার চেয়ে নেটওয়ার্ক থেকে চালানাে সুবিধাজনক। ওয়েব। সার্ভার, এফটিপি সার্ভার এগুলো এক ধরনের এপ্লিকেশন সার্ভার।। এপ্লিকেশন সার্ভার যেহেতু বিভিন্ন ইউজারের জন্য এপ্লিকেশন চালায় তাই এর কনফিগারেশন হওয়া দরকার। উঁচুমানের। এপ্লিকেশন সার্ভার কনফিগারেশনে মূল গুরুত্ব হলাে প্রসেসরে, তারপর আছে মেমরি। কারণ প্রতিটি এপ্লিকেশন চালানোর জন্য অবশ্যই সার্ভারকে প্রসেসিং শক্তি ব্যয় করতে হয়। এপ্লিকেশন সার্ভার হিসেবে ডিজাইনকৃত সাভার সাধারনত একাধিক প্রসেসরযুক্ত হয়ে থাকে।
ডাটাবেজ সার্ভার
ডাটাবেজ সার্ভার অন্য ক্লায়েন্ট ওয়ার্কস্টেশন এর জন্য ডাটাবেজ ব্যবহারের সুযোগ করে দেয়। ডাটাবেজ সার্ভারে বিভিন্ন ক্লায়েন্ট সার্ভার রিলেশনাল ডাটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (RDBMS) চলে যা সাধারণ ওয়ার্কস্টেশনে চালানাে সম্ভব হয় না। এরকম ডাটাবেজ এপ্লিকেশন হলাে মাইক্রোসফট এসকিউএল সার্ভার এবং ওরাকল সার্ভার। ক্লায়েন্ট সার্ভার আরডিবিএমএস- এ ডাটাবেজ দুটি ভিন্ন অংশে চলে:
- ডাটাবেজের ক্লায়েন্ট অংশ চলে ক্লায়েন্ট ওয়ার্কস্টেশন। এখান থেকে ডাটাবেজে কোয়েরি চালানাে, নৃতন ডাটা এন্ট্রি, ইত্যাদি কাজ সারা হয়।
- ডাটাবেজ অপারেশনের প্রসেসিং নির্ভর পুরাে কাজটি করে থাকে ডাটাবেজ সার্ভার। যেমন কোনাে ক্লায়েন্ট থেকে কোনো কোয়েরি আসলে সেই কোয়েরি পালন করেন ডাটাবেজ সার্ভার এবং কোয়েরির ফলাফল ক্লায়েন্ট এর নিকট পাঠাবো।
বড় বড় কোম্পানির বিভিন্ন তথ্য রাখার জন্য ডাটাবেজের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। তাই বড় নেটওয়ার্কে দু’একটি ডাটাবেজ সার্ভার নজরে পড়বে। ডাটাবেজের ক্রমবর্ধমান চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে ডাটাবেজ সার্ভারগুলাে ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠছে। বর্তমানে দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী ডাটাবেজ সার্ভার হলাে মাইক্রোসফট এসকিউএল সার্ভার ২০০৮। এবং ওরাকল ১১জি। দুটোতেই নিরাপত্তা, ডাটা অপটিমাইজেশন এবং ডাটা ডিস্ট্রিবিউশনের সুযােগ রয়েছে। লিনাক্স ও ইউনিক্স কম্পিউটারে এরকম দুটি ডাটাবেজ সার্ভার হলাে PostgreSQL ও MySQL। ডাটাবেজ সার্ভার হিসেবে কোনাে কম্পিউটারকে ব্যবহার করতে চাইলে সেটিতে ডাটা স্টোরেজের জন্য পর্যাপ্ত হার্ডডিস্ক স্পেস, উচ্চশক্তির প্রসেসর এবং সাধারণ ওয়ার্কস্টেশনের চেয়ে বেশি মাত্রার মেমরি থাকা দরকার।(সার্ভারের প্রকারভেদ)
টার্মিনাল ও হোস্ট
ক্লায়েন্ট সার্ভার মডেল এর আগে ছিল মেইনফ্রেম ভিত্তিক কম্পিউটার। এক্ষেত্রে বড় মেইনফ্রেম কম্পিউটার ব্যবহার করা হয় সকল এপ্লিকেশন চালানোর জন্য। অন্যদিকে এই মেইনফ্রেম কোনো এপ্লিকেশন চালানাের কমান্ড দেয়ার জন্য প্রতিটি ইউজার ব্যবহার করে একটি টার্মিনাল। টার্মিনাল হলাে কম্পিউটার মনিটর ও অন্যান্য ইনপুট ডিভাইসের সমন্বয় যেখান থেকে ইউজার কোন মেইনফ্রেম কম্পিউটারে কোন এপ্লিকেশন চালানাের কমান্ড দিতে পারে। টার্মিনালের নিজের কোনাে প্রসেসিং শক্তি নেই, এটি প্রসেসিঙের জন্য পুরােপুরি মেইনফ্রেমের ওপর নির্ভরশীল। এটির কোনাে হার্ড ডিস্কও থাকে না, কেবল আউটপুট ও ইনপুট ডিভাইস হিসেবে মনিটর, কীবাের্ড, মাউস ইত্যাদি থাকতে পারে। এখানে মেইনফ্রেম কম্পিউটার হলাে হােস্ট। কারণ এখান থেকেই ইউজাররা বিভিন্ন এপ্লিকেশন চালিয়ে থাকে।
মেইনফ্রেম কম্পিউটার বেশ ব্যয়বহুল এবং পার্সোনাল কম্পিউটার সহজলভ্য হওয়ায় বর্তমানে টার্মিনাল ব্যবহারের চেয়ে ওয়ার্কস্টেশনের ব্যবহারই বেশি। ওয়ার্কস্টেশন নিজেই একটি পূর্ণাঙ্গ কম্পিউটার। এতে থাকে প্রসেসর, হার্ডডিস্ক, মেমরিসহ অন্যান্য অংশ। এটি নিজেই কোনাে এপ্লিকেশন চালাতে পারে এবং প্রয়ােজনে সাভার থেকে কোনো এপ্লিকেশন চালায়। ক্লায়েন্ট- সার্ভার অ্যাপ্লিকেশন সার্ভারের কিছু প্রসেসিং পাওয়ার সুবিধা ক্লায়েন্ট ওয়ার্কস্টেশন নিতে পারলেও এখানে কোন এপ্লিকেশন চালানোর জন্য ওয়ার্কস্টেশন পুরোপুরি সার্ভারের প্রসেসিং পাওয়ার কিংবা মেমরি ব্যবহার করতে পারে না।
ক্লায়েন্ট- সার্ভার নেটওয়ার্ক কখন দরকার?
কোন ক্ষেত্রে ক্লায়েন্ট, সার্ভার নেটওয়ার্ক ব্যবহার করবেন সে সিদ্ধাজ নেয়ার জনয বেশি চিন্তা করার দরকার নেই। আপনার নেটওয়ার্ক হাজার যদি দশজনের বেশি হয় কিংবা ভবিষ্যতে বাড়তে পারে তাহ ” ক্লায়েন্ট- সার্ভার নেটওয়ার্ক। তবে কীভাবে সেই ক্লায়েন্ট-সার্ভার নেটওয়ার্ক গড়ে তুলবেন সে সিদ্ধান্ত নেয়া সাত্যই বেশ কঠিন। কারণ বেশ কয়েক প্রকারে ক্লায়েন্ট- সার্ভার নেটওয়ার্ক গড়ে তােলা যায়। নিম্নোক্ত কারণে আপনি ক্লায়েন্ট- সার্ভার নেটওয়ার্ক গড়ে তুলবেন:
- যদি আপনার ফাইল ও ডাটা কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করার দরকার পড়ে তাহলে ক্লায়েন্ট- সাভার মডেল বিকল্প নেই।
- যদি আপনার নেটওয়ার্কে নিরাপত্তা চান এবং প্রতিটি রিসাের্সে বিভিন্ন ধরনের পারমিশন দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চান তাহলে ক্লায়েন্ট- সার্ভার নেটওয়ার্ক দরকার হবে।
- নেটওয়ার্কের ইউজাররা যদি একই এপ্লিকেশন ও ডাটায় কাজ করতে চায় তাহলে ক্লায়েন্ট- সাভার
- নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তা সার্ভার থেকে এপ্লিকেশন চালানোর সুবিধা নিতে পারেন।
- যদি আপনার নেটওয়ার্ক এডমিনিস্টার করার মতো যোগ্য নেটওয়ার্ক এডমিনিস্ট্রেটর থাকে।
- যদি আপনার নেটওয়ার্কের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০ জনের বেশি হয় এবং ভবিষ্যতে নেটওয়ার্কটি বড় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ক্লায়েন্ট- সার্ভার নেটওয়ার্কের সুবিধাসমূহ হলাে:
- ডাটাকে কেন্দ্রীয়ভাবে সংরক্ষণ করা যায় এবং কেবল সার্ভার ব্যাকআপ করলেই পুরাে ডাটা ব্যাকআপ হয়ে যায়। প্রতিটি ওয়ার্কস্টেশন ভিন্নভাবে ব্যাকআপ করার দরকার পড়ে না।
- সার্ভারে উচ্চমাত্রার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যেতে পারে।
- সার্ভারের শক্তিশালী ইকুইপমেন্টসমূহ নেটওয়ার্ক ইউজারদের সাথে শেয়ার করা যেতে পারে।
- সার্ভারের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার ক্লায়েন্ট সার্ভার নেটওয়ার্কের জন্য অপটিমাইজড বলে নেটওয়ার্কের ভাল পারফরম্যান্স পাওয়া যায়।
- নেটওয়ার্ক ম্যানেজ করার বােঝা ইউজারদের ঘাড়ে থাকে না।
- ইউজার একাউন্ট ও রিসোর্স পারমিশন কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
ক্লায়েন্ট- সার্ভার নেটওয়ার্কের অনেক সুবিধার মধ্যে অসুবিধা গুলো হলো:
- নেটওয়ার্ক প্ল্যানিং, ডিজাইন ও ম্যানেজমেন্ট পিয়ার-টু-পিয়ার নেটওয়ার্কের চেয়ে জটিল।
- সার্ভার ম্যানেজ করার জন্য নিবেদিত কর্মীর দরকার হয়।
- ক্লায়েন্ট সার্ভার নেটওয়ার্কের সার্ভার হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার ব্যয়বহুল।