Friday , 13 December 2024
Home » Networking » নেটওয়ার্ক মিডিয়া এবং কানেক্টর

নেটওয়ার্ক মিডিয়া এবং কানেক্টর

নেটওয়ার্ক মিডিয়া এবং কানেক্টর

নেটওয়ার্ক মিডিয়া

(নেটওয়ার্ক মিডিয়া এবং কানেক্টর ) নেটওয়ার্ক এক কম্পিউটার থেকে আরেক কম্পিউটারে ডাটা পরিবহনের জন্য কোন না কোনাে মাধ্যম দরকার। যে মাধ্যমে নেটওয়ার্কের ডিভাইসসমূহ সংযুক্ত থাকে তাকে বলা হয় নেটওয়ার্ক মিডিয়া। এই নেটওয়ার্ক মিডিয়ার মধ্য দিয়েই ডাটা প্রবাহিত হয় এবং এর উপর নেটওয়ার্কের পারফরম্যান্স অনেকাংশে নির্ভর করে। তাই নেটওয়ার্কের প্রয়ােজনানুসারে উপযুক্ত নেটওয়ার্ক মিডিয়া ব্যবহার করা প্রয়ােজন। প্রতিটি নেটওয়ার্ক মিডিয়ারই আছে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য। এসব বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে সেসব মিডিয়ার উপযুক্ততা যাচাই করা যেতে পারে। বিভিন্ন ধরনের মিডিয়ার মধ্যে নেটওয়ার্কে ব্যবহার করা যেতে পারে তামা, কাঁচ ও বাতাস। এর প্রতিটির কিছু সুবিধা ও অসুবিধা আছে। এ অধ্যায়ে আমরা জানব বিভিন্ন নেটওয়ার্ক মিডিয়ার সুবিধা-অসুবিধা, সেসব মিডিয়া ব্যবহারের পদ্ধতি এবং সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে।

নেটওয়ার্ক মিডিয়া এবং কানেক্টর

নেটওয়ার্কে বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্ক মিডিয়া ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে আছে তামা, কাচ এবং বাতাস। বেশিরভাগ নেটওয়ার্কেই মিডিয়া হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে তামা বা কপার। এই ধাতুটি শুধু নেটওয়ার্কে নয় আরাে অনেক ক্ষেত্রেই পরিবাহী হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই তামার তার দিয়ে নেটওয়ার্ক ডিভাইসমূহকে সংযুক্ত করা হয়। তামার তারের মধ্যে আবার বিভিন্ন প্রকারভেদ আছে। একেক ধরনের তার একেক রকম বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। এর চেয়ে দ্রুতগতি পাওয়ার জন্য কাচকে ব্যবহার করা হয়। কাঁচের তৈরি তার, যাকে বলা হয় ফাইবার অপটিক, দিয়ে অনেক দ্রুত ডেটা প্রবাহিত হতে পারে।

নেটওয়ার্ক মিডিয়া এবং কানেক্টর

কোনােরকম তার ব্যবহার না করেও নেটওয়ার্ক তৈরি করা যেতে পারে। একে বলা হয় অয়্যারলেস নেটওয়ার্ক। এক্ষেত্রে মিডিয়া হিসেবে কাজ করে বাতাস। বাতাসের মধ্য দিয়ে ডাটা সিগন্যাল পাঠানাের বিভিন্ন পদ্ধতি আছে, যার বেশিরভাগই এখন শৈশব অতিক্রম করছে। তবে এসব প্রযুক্তি ব্যবহার করে মােবাইল কম্পিউটিঙের সুবিধা। পাওয়া যাচ্ছে। নেটওয়ার্ক ক্যাবল বা অন্য যেকোনাে মিডিয়া ব্যবহার করি না কেন সেই মিডিয়াকে কম্পিউটার ও অন্যান্য ডিভাইসের সাথে যােগ করার জন্য দরকার পড়ে বিভিন্ন কানেক্টর। এসব কানেক্টর মিডিয়াভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্ক কানেক্টরের মধ্যে আছে: BNC, RJ-45, SC, ST, SMA, FDDI এবং IBM কানেক্টর। (নেটওয়ার্ক মিডিয়া এবং কানেক্টর )

নেটওয়ার্ক মিডিয়াকে প্রধান দুই ভাগে ভাগ করে নেয়া যায়: ক্যাবল মিডিয়া এবং অয়্যারলেস মিডিয়া। ক্যাবল মিডিয়ায় সেন্ট্রাল কন্ডাক্টর থাকে এবং এর বাইরে প্লাস্টিকের জ্যাকেট মোড়ানো থাকে। ছােটখাটো নেটওয়ার্কে এ ধরনের ক্যাবল মিডিয়াই বেশি ব্যবহৃত হয় এবং এটি সুবিধাজনক। অন্যদিকে অয়্যারলেস মিডিয়ায় ইলেকট্রোম্যাগনেটিক সিগন্যাল পাঠানাে হয় বাতাসের মাধ্যমে। এখানে কোনাে তার বা ক্যাবল থাকে না। নেটওয়ার্ক ডিজাইনের প্রথমে চিন্তা করে নেয়া উচিত নেটওয়ার্কের মিডিয়া কী হবে। কারণ এর উপরই নেটয়াবে অনেক কিছু নির্ভর করছে এবং এটি হবে একটি দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়ােগ। এর উপর ভিত্তি করে অন্যান্য ডিভাই ব্যবহার করতে হবে। তাই সহজে মিডিয়া পরিবর্তনের সুযােগ পাবেন না। কোন ধরনের মিডিয়া ব্যবহার করা সে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য বিভিন্ন মিডিয়া সম্পর্কে জানা দরকার।

আগেই বলা হয়েছে প্রতিটি নেটওয়ার্ক মিডিয়ার আছে কিছু বৈশিষ্ট্য যা বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্কের জন্য উপযােগী। কোন মিডিয়া ব্যবহার করবাে তা নির্ভর করছে সেই নেটওয়ার্কের প্রয়ােজনীয়তার উপর। আপনার নেটওয়ার্কের জন্য উত্তম মিডিয়া কোনটি হবে তা জানার জন্য আপনি সেই মিডিয়াকে নিয়নােক্ত নিয়ামকগুলির সাথে মিলিয়ে নিতে পারেন:

  • ব্যয়
  •  ইনস্টলেশন পদ্ধতি
  • পরিবহন ক্ষমতা
  • এটিনুয়েশন

ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ইন্টারফারেন্স বা EMI প্রতিরোধ ক্ষমতা এসব নিয়ামক নেটওয়ার্ককে কীভাবে প্রভাবিত করে তা জানব এখন।

ব্যয়

নেটওয়ার্ক মিডিয়ার ব্যয় মাপার সময় কেবল এর বাজার দর দেখলেই চলবে না, সেইসাথে এর পারফরম্যাপও দেখতে হবে। অনেকেই অনেক সময় কোন বিল্ডিং অব্যবহৃত টেলিফোন তার নেটওয়ার্কিঙের জন্য ব্যবহারে প্রলুদ্ধ হন এই ভেবে যে, এতে ক্যাবল ইনস্টলেশনের জন্য কোনাে খরচ হবে না। কিন্তু এধরনের নেটওয়াকের পারফরম্যান্স মোটেই সন্তোষজনক হবে না এবং এক সময় দেখা যাবে নৃতন ক্যাবল ইনস্টল করার দরকার পড়ছে। (নেটওয়ার্ক মিডিয়া এবং কানেক্টর )সেক্ষেত্রে নূতনভাবে ক্যাবল ইনস্টল করতে যাওয়ার খরচ পড়বে বেশি। আপনি কী চান এবং কত কম খরচে কত বেশি সুবিধা পাচ্ছেন সেটি বিবেচনা করতে হবে নেটওয়ার্ক ব্যয় নিরূপনের সময়। কারণ আগেই বলা হয়েছে নেটওয়ার্ক বা সার্ভার ডাউন থাকা মানেই আপনার কোম্পানি লােকসান। একশ কর্মচারী যদি একঘন্টা নেটওয়ার্ক ব্যবহার করার সুযােগ না পেয়ে কোন কাজ করতে না পারে তাহলে কী বিশাল ক্ষতি হবে সেটি হিসেব করতে পারেন সহজেই। সে তুলনায় মিডিয়া সিলেকশনের সময় এক বেশি দাম হলেও ভাল পারফরম্যান্স দেয় এমন মিডিয়া নেয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

ইনস্টলেশন

বিভিন্ন মিডিয়া ইনস্টলেশনের জন্য বিভিন্ন স্তরের দক্ষতার দরকার পড়ে। যেমন কোএক্সিয়াল ক্যাবল কিংবা UTP ক্যাবল সহজেই ইনস্টল করা যায়। কিন্তু ফাইবার অপটিক ইনস্টল করার জন্য দরকার পড়ে অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ানের। আবার দু’টুকরাে ফাইবার অপটিক ক্যাবল জোড়া লাগানাের জন্য দরকার হতে পারে ইলেকট্রিক ফিউশন কিংবা এপােক্সি ব্যবহারের।

ব্যান্ডউইথ

একটি মাধ্যমে কী পরিমাণ ডাটা একক সময়ে পরিবাহিত হতে পারে তাকে বলা হয় ব্যান্ডউইডথ। যদি কোনাে ক্যাবলে সেকেন্ডে ১০ মে.বা. ডাটা পরিবাহিত হতে পারে তাহলে তার ব্যান্ডউইডথ হলাে ১০ মেগাবিট/সে. বা ১০ এমবিপিএস। মিডিয়ার ব্যান্ডউইডথ যত বেশি হবে তত ভালাে। আপনার নেটওয়ার্কে হয়তাে নির্দিষ্ট কোনাে। ব্যান্ডউইডথ দরকার। তাহলে সে অনুসারে মিডিয়া নির্বাচন করুন। তামার ক্যাবল ব্যবহার করে সাধারণত ব্যান্ডউইডথ হয় ১০-১০০ এমবিপিএস। এর চেয়ে বেশি ব্যান্ডউইথ দরকার হলে মিডিয়া হিসেবে ফাইবার অপটিক ব্যবহার করতে পারেন।

নােড ক্যাপাসিটি

একটি নেটওয়ার্ক ক্যাবলে কয়টি কম্পিউটার যােগ করতে পারেন সেটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রতিটি ক্যাবল সিস্টেমে কয়টি কম্পিউটার যােগ করতে পারেন তার কিছু নিয়ম আছে। আপনার প্রয়ােজনের সাথে সেটি মালয়ে নেয়া দরকার। যেমন UTP ক্যাবল ব্যবহার করে একটি ক্যাবলের সাথে কেবল দুটি কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারেন। এর অধিক কম্পিউটারকে UTP ক্যাবল দিয়ে যুক্ত করতে চাইলে হাব কিংবা কনসেনট্রেটর দরকার হবে।

এটিনুয়েশন

কোনাে মিডিয়ার মধ্য দিয়ে সিগন্যাল কিছুদূর গিয়ে সাধারণত দুর্বল হয়ে পড়ে। এভাবে বেশিদূর গেলে একেবারে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। দূরত্ব অতিক্রমের সাথে সাথে সিগন্যাল দূর্বল হয়ে যাওয়ার এই স্বভাবকে বলা হয় এটেনুয়েশন। (attenuation)। এটেনুয়েশনের কারণে সে সিগন্যাল গন্তব্যে পৌঁছুতে নাও পারে। তাই দেখতে হবে যে মিডিয়া ব্যবহার করছেন তার এটেনুয়েশন কীরকম। যে মিডিয়ার এটেনুয়েশন যত কম সেটি তত ভালাে।

EMI প্রতিরোধ ক্ষমতা

কোন ইলেকট্রিক সিগন্যাল আশেপাশে অন্য কোনো সিগন্যাল থাকলে একটি আরেকটিকে প্রভাবিত করে। একে বলা হয় ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ইন্টারফের্যান্স বা EMI। যে মিডিয়ার EMI প্রতিরােধ ক্ষমতা যত বেশি, সে মিডিয়া তত ভালো। EMI ইভস ডুপিং (eavesdropping) এর মতো নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণ হতে পারে। কোনাে মিডিয়ার EMI প্রতিরােধ ক্ষমতা কম হলে সেই মিডিয়ার পাশে অন্য কোনাে সিগন্যাল ট্র্যাপ সেট করে মিডিয়ার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত সিগন্যাল ক্যাপচার ও সেখান থেকে ডাটা পুনরুদ্ধার করতে পারে। এভাবে আপনার গােপনীয় তথ্য ফাঁস হয়ে যেতে পারে। তাই নিরাপত্তা চাহলে ভগও প্রাতরােধ ক্ষমতাসম্পন্ন মিডিয়া ব্যবহার করা দরকার।

মিডিয়া হিসেবে তামা

কোন ইলেকট্রিক সিগন্যাল আশেপাশে অন্য কোনো সিগন্যাল থাকলে একটি আরেকটিকে প্রভাবিত করে। একে বলা হয় ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ইন্টারফের্যান্স বা EMI। যে মিডিয়ার EMI প্রতিরােধ ক্ষমতা যত বেশি, সে মিডিয়া তত ভালো। EMI ইভস ডুপিং (eavesdropping) এর মতো নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণ হতে পারে। কোনাে মিডিয়ার EMI প্রতিরােধ ক্ষমতা কম হলে সেই মিডিয়ার পাশে অন্য কোনাে সিগন্যাল ট্র্যাপ সেট করে মিডিয়ার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত সিগন্যাল ক্যাপচার ও সেখান থেকে ডাটা পুনরুদ্ধার করতে পারে। এভাবে আপনার গােপনীয় তথ্য ফাঁস হয়ে যেতে পারে। তাই নিরাপত্তা চাহলে ভগও প্রাতরােধ ক্ষমতাসম্পন্ন মিডিয়া ব্যবহার করা দরকার। (নেটওয়ার্ক মিডিয়া এবং কানেক্টর )

কোএক্সিয়াল ক্যাবল

ইন্টারনেট লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত হয় কোএক্সিয়াল (coaxial) ক্যাবল, যাকে সংক্ষেপে কোক্স (coax) বলা হয়ে থাকে। বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্কে এটি ব্যবহৃত হতে পারে। কোএক্সিয়াল ক্যাবলের মধ্যখান দিয়ে একটি সলিড তামার স্ট্র্যান্ড চলে যায় আর এর বাইরে থাকে ফোম ইনসুলেশন। ফোম ইনসুলেশন ঘিরে থাকে আরেকটি পরিবাহী তামার অয়্যার মেশ টিউব। অয়্যার মেশ মূল তারকে EMI থেকে রক্ষা করে। সব বাইরে থাকে প্লাস্টিক জ্যাকেট।

নেটওয়ার্ক মিডিয়া এবং কানেক্টর

বিভিন্ন সাইজের কোএক্লিয়াল ক্যাবল পাওয়া যায়। এর সাইজকে RG দিয়ে প্রকাশ করা হয় এবং AC বা DC কারেন্টে এই ক্যাবলের রােধক্ষমতা (resistance) দিয়ে একে বিভিন্ন ক্লাসে ভাগ করা হয়। বর্তমান নেটওয়ার্কিঙে ব্যবহৃত এরকম কিছু কোএক্সিয়াল ক্যাবল হলাে:

  • ৫০ ওহম, RG-8 ও RG-11 ক্যাবল যা থিক ইথারনেটে ব্যবহৃত হয়।
  • ৫০ ওহম, RG-58, যা থিন ইথারনেটে ব্যবহৃত হয়।
  • ৭৫ ওহম, RG-59, এটি ক্যাবল টিভিতে ব্যবহৃত হয় (ডিশের লাইন টানা হয় এই ক্যাবল দিয়ে)।
  • ৯৩ ওহম, RG-62, এই ক্যাবল ব্যবহৃত হয় আর্কনেটে।

কোএক্সিয়াল ক্যাবলের বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নরূপ:

  • কোএক্সিয়াল ক্যাবলের দাম তুলনামূলকভাবে কম। থিন কোএক্সিয়াল ক্যাবলের দাম STP ও UTP 5
  • এর চেয়ে কম। আবার থিক কোএক্সিয়াল ক্যাবলের দাম STP ও UTP 5 এর চেয়ে বেশি, কিন্তু ফাইবার অপটিকের চেয়ে কম।
  • কোএক্সিয়াল ক্যাবল সহজেই ইনস্টল করা যায়। সামান্য চেষ্টাতেই এটি ইনস্টল করা যায় এবং নাড়াচাড়ায় এ ক্যাবল কোন ক্ষতি হয় না। বাস টপোলজিতে সাধারণত কোএক্সিয়াল ক্যাবল ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন ডিভাইসের সাথে এ ক্যাবলকে যুক্ত করার জন্য BNC T কানেক্টর কিংবা ভ্যাম্পায়ার ট্যাব ব্যবহৃত হয়। এ ধরনের ক্যাবল টার্মিনেট করার দরকার পড়ে।
  • বর্তমানে কোএক্সিয়াল ক্যাবলের মধ্যে ডাটা পরিবহনের ক্ষমতা হলাে ১০ এমবিপিএস। কোএক্সিয়াল ক্যাবলের ভেতরের পরিবাহীর ডায়ামিটার বাড়ার সাথে সাথে এর পরিবহন ক্ষমতাও বাড়ে।
  • থিননেট একটি সেগমেন্টে ৩০ টি কম্পিউটার এবং থিকনেট একটি সেগমেন্টে ১০০ টি কম্পিউটার যুক্ত করা যেতে পারে।
  • কোএক্সিয়াল ক্যাবল তামার তৈরি হওয়ার কারণে এতে এটেনুয়েশন রয়েছে। তবে এটি ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবলের চেয়ে কম।
  • তামার তৈরি বলে এতে EMI সমস্যা রয়েছে এবং এর ফলে কোএক্সিয়াল ক্যাবলে ইভসড্রপিং ঘটতে পারে।

নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত কোএক্সিয়াল ক্যাবল কি প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা হয়: থিন কোএক্সিয়াল ও থিক কোএক্সিয়াল এসব ক্যাবল ব্যবহার করে যে নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠে তাকে বলা হয় থিননেট ও থিকনেট।

থিননেট

থিন কোএক্সিয়াল ক্যাবল ব্যবহার করে যে নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠে তাকে বলা হয় থিননেট। থিন কোএক্সিয়াল ক্যাবলে ব্যাস হয়ে থাকে প্রায় ০.২৫ ইঞ্চি এবং কোনাে প্রকার রিপিটার ছাড়া ১৮৫ মিটার দৈর্ঘ্যের ক্যাবল ব্যবহার করা যায়। এ ধরনের নেটওয়ার্ককে ১০বেজ২ (10Base2) নেটওয়ার্কও বলা হয়ে থাকে। এখানে ১০ হলাে এর ব্যান্ডউইডথ (১০ এমবিপিএস) এবং ২ হলাে ক্যাবল দৈর্ঘ্য (২০০ মিটার)। বাস্তবে ২০০ মিটার ক্যাবল ব্যবহার করা না গেলে বোঝার সুবিধার জন্য ২ ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের নেটওয়ার্ক বেশ জনপ্রিয়। কারণ এটি সহজে ইনস্টল করা যায় এবং ক্যাবলের সাথে ডিভাইসের সংযোগের জন্য বিএনসি কানেক্টর ব্যবহার করা হয়। বাস নেটওয়ার্কের জন্য এটি ব্যবহৃত হয়। (নেটওয়ার্ক মিডিয়া এবং কানেক্টর )

thicknet & thinnet coaxial cable

থিকনেট

থিক কোএক্সিয়াল ক্যাবল ব্যবহার করে গড়ে ওঠা নেটওয়ার্ককে থিকনেট বা 10Base5 নেটওয়ার্ক বলা হয় থিক। কোএক্সিয়াল ক্যাবলের ব্যাস প্রায় ০.৫ ইঞ্চি এবং রিপিটার ছাড়া ক্যাবল সেগমেন্ট ৫০০ মিটার পর্যন্ত যেতে পারে। এ ধরনের ক্যাবলের সাথে ডিভাইসকে যুক্ত করার জন্য ভ্যাম্পায়ার ট্যাপ (vampire tap) ও ড্রপ ক্যাবল ব্যবহৃত হয়। ড্রপ ক্যাবল ডিভাইস থেকে ভ্যাম্পায়ার ট্যাপের সাথে যুক্ত থাকে। আর ভ্যাম্পায়ার ট্যাপ যুক্ত থাকে থিক কোএক্সিয়াল ক্যাবলের সাথে। এই ট্যাপ যুক্ত করা বেশ কঠিন কাজ। থিক কোএক্সিয়াল ক্যাবলের দাম বেশি কিন্তু থিন কোএক্সিয়ালের সমান ব্যান্ডউইথ দেয়। এর ব্যয়বাহুল্য এবং কঠিন ইনস্টলেশনের কারণে বর্তমানে থিকনেট প্রায় দেখাই যায় না।

টুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল

টুইস্টেড পেয়ার ক্যাবলে একসাথে কয়েক জোড়া ক্যাবল পাকানাে অবস্থায় থাকে যার মধ্য দিয়ে ডাটা সিগন্যাল প্রবাহিত হয়। এ ধরনের ক্যাবলই সাধারণত টেলিকমিউনিকেশন এর জন্য ব্যবহৃত হয়। তামার তার একটি আরেকটির কাছে থাকলে একটির সিগন্যাল আরেকটির সিগন্যালকে প্রভাবিত করে যাকে বলা হয় ক্রসটক (cross-talk)। ক্রসটক এবং অন্যান্য ইন্টারফেরেন্স কমাতে তারগুলিকে পাকানাে হয়। তারকে পাকানাে হলে একটির সিগন্যাল আরেকটির সিগন্যালকে নিউট্রাল করে দেয়। টুইস্টেড পেয়ারে কালার কোডিং ব্যবদ্ধত হয় এবং প্রতিটি তারে একটি করে ইনসুলেশন বা আচ্ছাদন থাকে। এসব আচ্ছাদিত তারকে টুইস্ট করা বা পাকানাে হয়। পাকানে তারের জোড়কে আবার প্লাস্টিক জ্যাকেটে মোড়ানো হয় সুরক্ষিত করার জন্য।

টুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল দু’ধরনের:

  • শিল্ডেড টুইস্টেড পেয়ার (ST) এবং
  • আনশিল্ডেড ট্যুইস্টেড পেয়ার (UTP)

শিল্ডেড টুইস্টেড পেয়ার (STP)

শিল্ডেড ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবলে প্রতিটি ট্যুইস্ট জোড় থাকে একটি করে শিল্ড বা শক্ত আচ্ছাদনের ভেতর। এর ফলে সেই তার অনেক সুরক্ষিত এবং ইলেট্রিক ইন্টারফের্যান্স অনেক কম হয়। এই শিল্ড সাধারণত এলুমিনিয়াম/পলিয়েস্টারের হয়ে থাকে। প্রতিটি শিল্ডেড পেয়ার আবার প্লাস্টিক জ্যাকেটের মাঝে থাকে।

stp cable

শিল্ডেড কারণে STP ক্যাবল EMI এফেক্টের শিকার হয় না বা এই প্রভাব কমে যায়। যদি শিল্ডিং ঠিকমতাে গ্রাউন্ড এর সাথে যোগ (grounding) করা হয় তাহলে এখান থেকে কোনো সিগন্যাল বাইরে যেতে কিংবা বাইরে থেকে কোনাে সিগন্যাল এর ভেতর আসার সম্ভাবনা থাকে না। এ কারণে STP ক্যাবল লােকাল এরিয়া নেটওয়ার্কের জন্য বেশ উপযোগী। আইবিএম এবং এপল কম্পিউটার নিয়ে নেটওয়ার্ক গড়তে চাইলে মিডিয়া হিসেবে STP ক্যাবল সুপারিশ করা হয়। টোকেন রিং নেটওয়ার্ক STP ক্যাবল ব্যবহার করে এবং আইবিএম বিভিন্ন ক্যাপাসিটির নেটওয়ার্কে বিভিন্ন ধরনের STP ব্যবহারের পরামর্শ দেয়। আরেক ধরনের STP ক্যাবল হলাে এপল কম্পিউটার্সের এপলটক (AppleTalk) নেটওয়ার্কের জন্য। এভাবে ভেন্ডর নির্ধারিত নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত বিভিন্ন ক্যাবলের জন্য রয়েছে বিভিন্ন কানেক্টর ও অন্যান্য ডিভাইস।(নেটওয়ার্ক মিডিয়া এবং কানেক্টর )

শিল্ডেড ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবলের বৈশিষ্ট্য গুলি হল:

  • STP ক্যাবলের মূল্য UTP এবং থিন কোএক্সিয়াল ক্যাবলের চেয়ে বেশি, কিন্তু ফাইবার অপটিক কিংবা থিক কোএক্সিয়াল ক্যাবলের চেয়ে কম।
  • বিশেষ ধরনের কানেক্টর ব্যবহার করতে হয় বলে ইউটিপি’র চেয়ে STP ক্যাবল ব্যবহারে অসুবিধা দেখা দেয়। প্রতিটি কানেক্টরে অবশ্যই একটি করে ইলেকট্রিক গ্রাউন্ড তৈরি করতে হবে। STP ক্যাবল পুরু ও শক্ত (প্রায় ১.৫ ইঞ্চি ডায়ামিটার) হওয়ায় এটি নাড়াচাড়া করা অসুবিধাজনক।
  • ১০০ মিটার দৈর্ঘ্যের STP ক্যাবলে তাত্ত্বিকভাবে ডাটা ট্রান্সফার রেট হতে পারে ৫০০ Mbps তবে বর্তমানে বিভিন্ন STP ক্যাবল নেটওয়ার্ক ব্যান্ডউইথ হলে ১৬ এমবিপিএস।
  • STP ক্যাবলে কয়টি নােড বা ডিভাইস যােগ করা যাবে তা নির্ভর করে এর সাথে যুক্ত হাবের উপর। হাব এর পোর্ট সংখ্যা যত বেশি হবে তত বেশি সংখ্যক ডিভাইস যোগ করা যায়। STP ক্যাবলে তৈরি টোকেন রিং নেটওয়ার্ক একটি রিং এ সর্বোচ্চ ২০০ ওয়ার্কস্টেশন যুক্ত হতে পারে।
  • শিল্ড ব্যবহার করা হলেও STP ক্যাবলে এটেনুয়েশন যে খুব বেশি কমে তা নয়, এতে সর্বোচ্চ ১০০
  • মিটার দৈর্ঘ্যের ক্যাবল কোনাে রিপিটার ছাড়াই ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • STP’র বড় সুবিধা হলাে এতে EMI হ্রাস পায়, তবে EMI পুরাে দূর হয় না। সেকারণে এটিও কোএক্সিয়াল ক্যাবলের মতাে ইভসড্রপিঙের শিকার হতে পারে।

আনশিল্ডেড টুইস্টেড পেয়ার) UTP

আনশিন্ডেড টুইস্টেড পেয়ার ক্যাবলে পেয়ারের বাইরে অতিরিক্ত কোনাে শিল্ডিং থাকে না, কেবল সবকটি পেয়ারের বাইরে থাকে প্লাস্টিক জ্যাকেট। আনশিল্ডেড টুইস্টেড পেয়ার বা UTP ক্যাবল সাধারণত টেলিফোন সিস্টেমে ব্যবহৃত হয়।

utp cable

ইলেকট্রিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল এসােসিয়েশন বা EIA ইউটিপি ক্যাবলকে কয়েক ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করেছে। এসব ক্যাটাগরি প্রতিটির আছে কিছু বৈশিষ্ট্য। ক্যাটাগরি গুলো হলো:

  • ক্যাটাগরি ১ ও ২ আসলে ভয়েস কম্যুনিকেশনের জন্য এবং কেবল খুব কম গতিতে ডাটা ট্রান্সফার করতে পারে। এর গতি হতে পারে ৪ এমবিপিএস বা তার কম। পুরনাে টেলিফোন সিস্টেমে ক্যাটাগরি ১ ইউটিপি ক্যাবল ব্যবহৃত হতাে। উচ্চগতির ডাটা ট্রান্সফার দরকার পড়ে এমন নেটওয়ার্কের জন্য ক্যাটাগরি ১ ও ২ ইউটিপি ক্যাবল উপযোগী নয়।
  • ক্যাটাগরি ৩ হলে কম্পিউটার নেটওয়ার্কের উপযোগী। এটি সাধারণত ১৬ এমবিপিএস গতিসম্পন্ন হয়ে থাকে, তবে ক্ষেত্রবিশেষে বেশিও হতে পারে। এই ক্যাটাগরির ইউটিপি ক্যাবল ই বর্তমান টেলিফোন সিস্টেমে ব্যবহৃত হয়। ১০ বেজে (10BaseT) নেটওয়ার্কে এই ক্যাবল ব্যবহৃত হয়।
  • ক্যাটাগরি ৪ ইউটিপি ক্যাবলে ডাটা ট্রান্সফার রেট হতে পারে ২০ এমবিপিএস।
  • ক্যাটাগরি ৫ হলাে ক্যাটাগরি ৩ এর পরিবর্ধন। এতে রয়েছে ফাস্ট ইথারনেট সাপাের্ট, উন্নত ইনসুলেশন, প্রতি ফুটে অধিক টুইস্ট এবং ১০০ এমবিপিএস ও তার অধিক ডাটা ট্রান্সফার রেট। এ ক্যাবল ব্যবহারের আগে দেখে নিতে হবে এর সাথে ব্যবহৃত বিভিন্ন কানেক্টর ও ডিভাইস এর উপযােগী কি না। বর্তমানে ক্যাটাগরি ৫ এনহান্সড ইউটিপি ক্যাবলের মাধ্যমে ১ গিগাবিট/সে. স্পিড পাওয়া যেতে পারে। তবে অন্যান্য ডিভাইস, যেমন হাব, কানেক্টর, ইত্যাদি এখনও এত গতির হয়নি বলে ক্যাটাগরি ৫ই (Cat5e) ইউটিপি ক্যাবল ব্যবহারের কোনো সুবিধা নাও পাওয়া যেতে পারে। তবে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এখনই এ মিডিয়া বেছে নিতে পারেন। (নেটওয়ার্ক মিডিয়া এবং কানেক্টর )

ক্যাটাগরি ৫ ইউটিপি ক্যাবলের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে ১০০বেজটি (100BaseT) নেটওয়ার্ক। ডাটা- গ্রেড ইউটিপি ক্যাবল অর্থাৎ ক্যাটাগরি ৩, ৪ ও ৫ ক্যাবলে চার অথবা আটটি তার থাকে। চারটি তার নিয়ে যে ইউটিপি ক্যাবল তাকে বলা হয় টু- পেয়ার ক্যাবল, আর আটটি তার নিয়ে হয় ফোর- পেয়ার ক্যাবল। ইউটিপিতে অন্তত দুই পেয়ার তার লাগবে। টেলিফোন ক্যাবল ইনস্টলেশন মতো UTP ক্যাবলের ইনস্টলেশন। চার পেয়ার UTP ক্যাবল কম্পিউটারের সাথে যুক্ত করার জন্য ব্যবহৃত হয় RJ-45 টেলিফোন কানেক্টর, আর টু- পেয়ার ইউটিপি ক্যাবলের জন্য লাগে RJ-11 টেলিফোন কানেক্টর। এই কানেক্টর প্যাচ ক্যাবলের উভয় প্রান্তে যুক্ত থাকে এবং একটি যুক্ত হয়। কম্পিউটার নেটওয়ার্ক অ্যাডাপ্টার, অন্যটি ওয়াল জ্যাকে।

নেটওয়ার্ক মিডিয়া এবং কানেক্টর

UTP ক্যাবলের বৈশিষ্ট্য সমূহ হলো:

  • ক্যাটাগর ৫ UTP ক্যাবল ছাড়া অন্য সবকটি UTP ক্যাবলের ইনস্টলেশন খরচ খুবই কম।
  • UTP ক্যাবল ইনস্টল করা বেশ সহজ। টেলিফোন সিস্টেমের জন্য এই ক্যাবল ব্যবহার করা হয় বলে। অনেকেই এর ইনস্টলেশনের ব্যাপারে সাহায্য করতে পারে।
  • বর্তমানে UTP ক্যাবল ব্যবহার করে ব্যান্ডউইডথ ১ থেকে ১৫৫ এমবিপিএস পর্যন্ত পেতে পারি। একটি ক্যাবল সেগমেন্টের সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য হতে পারে ১০০ মিটার বা ৩২৮ ফুট। এ ধরনের ক্যাবলে বেশিরভাগ নেটওয়ার্কের গতি ১০ এমবিপিএস।
  • এক টুকরাে UTP ক্যাবল ব্যবহার করে দু’প্রান্তে কেবল দুটো ডিভাইস যােগ করা যেতে পারে। তাই এ ধরনের নেটওয়ার্কে কনসেনট্রেটেড বা হাব দিয়ে স্টার টপোলজি ব্যবহার করা হয়। এ নেটওয়াকে কয়টি নােভ বা ডিভাইস যুক্ত হতে পারবে তা নির্ভর করে হাবের পাের্ট সংখ্যার উপর। ইচ্ছে করলে একাধিক হাব ব্যবহার করা যেতে পারে। ইথারনেট নেটওয়ার্কে একটি কলিশন ডোমেইন নােড বা ডিভাইসের সংখ্যা হতে পারে ৭৫, তবে সর্বোচ্চ ১০২৪ টি নােডের বেশি ব্যবহার করতে পারবেন না।
  • UTP ক্যাবলেও এটেনুয়েশন রয়েছে, আর তাই এর দূরত্ব ১০০ মিটার পর্যন্ত সীমাবদ্ধ।
  • UTP ক্যাবলে EMI প্রভাব খুব বেশি। ট্যুইস্টের ফলে ক্রসটক কমলেও EMI -এর ব্যাপারে তেমন সুবিধা নেই। EMI প্রবল বলে এটি ইভসড্রপিঙেরও শিকার।

গ্লাস মিডিয়া

আজকের দিনের ফাইবার অপটিক ক্যাবলের প্রধান উপাদান হলাে গ্লাস বা কাচ। তামার তারের চেয়ে কাচকে মিডিয়া হিসেবে ব্যবহারের বহুবিধ সুবিধা আছে। সে তুলনায় অসুবিধা সামান্যই। এর ব্যয়ের কারণে বেশিরভাগ সময় নেটওয়ার্ক ব্যাকবোন ফাইবার অপটিক ক্যাবল ব্যবহার করা হয়। তবে লােকাল এরিয়া নেটওয়ার্কেও এর ব্যবহার বাড়ছে।

আমরা আগে জেনেছি তামার তারের একটি প্রধান অসুবিধা হলাে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ইন্টারফেরান্স বা EMI। এই EMI- এর কারণে ঘটতে পারে ইভসড্রপিং। কাচকে মিডিয়া হিসেবে ব্যবহারের বড় সুবিধা হলাে এই যে, এতে EMI নেই। সে কারণে ডাটা সিগন্যাল পরিবর্তিত হওয়ার ভয়ও নেই। তবে কাচের ভেতর আলােক সংকেতের মাধ্যমে ডেটা প্রবাহিত হয় বলে এতে অন্য ধরনের ইন্টারফেরেন্স ঘটতে পারে, যাকে বলা হয়। ক্রামাটিক ডিসপার্সন (chromatic dispersion)। কাচের মধ্য দিয়ে আলােক সংকেতরূপে ডাটা প্রবাহিত হয় বলে এর গতি অনেক বেশি হয়। ফাইবার অপটিকের মধ্যে আলােক সংকেত দু’ভাবে যেতে পারে: লেজার (laser) এবং লেড (light-emitting diode)। ফাইবার অপটিক ক্যাবলে লেজার কাঙ্ক্ষিত হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে লেড ব্যবহৃত হয়। কারণ লেজার ডিভাইসের চেয়ে লেড ডিভাইসগুলির ব্যয় কম, টেকেও অনেক বেশি।(নেটওয়ার্ক মিডিয়া এবং কানেক্টর ) ফাইবার অপটিক ক্যাবলে কেন্দ্রের মূল তারটি গড়ে ওঠে সিলিকা, কাচ অথবা প্লাস্টিক দিয়ে। এর মধ্য দিয়ে আলােক সংকেতরূপে ডাটা পরিবাহিত হতে পারে সিগন্যাল লস ছাড়াই। একটি মাল্টিমােড ফাইবার অপটিক ক্যাবলের ডায়ামিটার হলাে ১২৫ মাইক্রন (125u) যা মানুষের দু’টো চুলের সমান মােটা। চিত্র ৭.৮- এ একটি ফাইবার অপটিক ক্যাবল দেখানাে হলাে। কেন্দ্রের অপটিক্যাল ফাইবারকে আচ্ছাদিত করে আছে ক্ল্যাডিং (cladding) বা কেবলার (kevlar), যা এমন এক পদার্থ দিয়ে তৈরি যে আলােক প্রতিফলন করতে পারে। এর ফলে আলােক সংকেত ফাইবার অপটিক ক্যাবলের মধ্য দিয়ে বাঁকা পথে যেতে পারে। এরপর থাকে ইনসুলেশন যেটা ফাইবার অপটিক কে সুরক্ষিত করে। সবার বাইরে থাকে প্লাস্টিকের শক্ত জ্যাকেট।

নেটওয়ার্ক মিডিয়া এবং কানেক্টর

ফাইবার অপটিক ক্যাবল বিভিন্ন আকারের হতে পারে। এটি নির্ভর করে এর কোর ফাইবার অপটিকের আকারের উপর। সচরাচর ব্যবহৃত ফাইবার অপটিক ক্যাবলের কোর ফাইবারের সাইজ হয় ৬২.৫/১২৫ মাইক্রন। এখানে ৬২.৫ মাইক্রন হলাে কোর ফাইবারের ডায়ামিটার, আর ১২৫ হলাে ক্ল্যাডিঙের সাইজ। এ ধরনের ফাইবারকে বলা হয় মাল্টিমোড (multimode) ফাইবার অপটিক ক্যাবল। মাল্টিমোড ফাইবারে একই সাথে একাধিক আলােক সংকেত প্রেরণের পথ থাকে এবং এসব পথ দিয়ে সবকটি সিগন্যাল একইসাথে গন্তব্যে পৌছুতে পারে। এর ফলে গ্রহীতার কাছে মনে হয় একটিমাত্র আলােক তরঙ্গের মাধ্যমে পুরাে ডাটা এসেছে। এটি লেড (light-emitting diode) ব্যবহার করতে পারে বলে মাল্টিমোড ফাইবার খরচ কম হয়। সিঙ্গলমােড (single-mode) ফাইবার ব্যবহার করা হয় দীর্ঘ দূরত্ব অতিক্রম করার জন্য। সিঙ্গল- মােড ফাইবারে একসাথে কেবল একটি আলােক সংকেত প্রেরণের পথ থাকে এবং সাধারণত লেজার সিগন্যালিঙের জন্য ব্যবহৃত হয়। এসব ফাইবার অপটিক ক্যাবলের কোর ফাইবারের ডায়ামিটার হলাে ৮/১২৫ মাইক্রন। কোনাে রিপিটার ছাড়াই সিঙ্গল-মােড ফাইবার অপটিক ক্যাবলকে ৩ মাইল পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যায়। লােকাল এরিয়া নেটওয়ার্কে ইথারনেট, ১০বেজএফ (10BaseF), FDDI, অপটিক্যাল টোকেন রিং ও ATM নেটওয়ার্ক তৈরির জন্য এ ধরনের ফাইবার অপটিক ক্যাবল ব্যবহৃত হয়।

নিমে সিঙ্গল-মেড ও মাল্টিমোড ফাইবার ব্যবহার দেখানো হলাে।

 

কোন প্রকারের ক্যাবল কোরের সাইজ বৈশিষ্ট্য/ব্যবহার
সিঙ্গেল – মোড ফাইবার ৮/১২৫মাইক্রন উচ্চগতি দরকার পড়ে এমন নেটওয়ার্কে ব্যবহার করা হয়। এতে একসাথে কেবল একটি ট্রান্সমিশন ঘটতে পারে।
মাল্টিমোড ফাইবার ৬২.৫/১২৫ মাইক্রন সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ফাইবার অপটিক ক্যাবল। বেশিরভাগ নেটওয়ার্ক এপ্লিকেশনের উপযোগী। একই সাথে একাধিক ট্রান্সমিশন ঘটতে পারে।

ফাইবার অপটিক ক্যাবল ব্যবহারের জন্য বিশেষ ধরনের নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড দরকার পড়বে যাতে থাকবে ফাইবার অপটিক ক্যাবল কানেক্টর। ফাইবার অপটিক ক্যাবলের এক প্রান্ত কানেক্ট এর মাধ্যমে নেটওয়ার্ক এভাস্টারের সাথে যুক্ত থাকে, আরেক প্রান্ত অন্য কোন স্লাইসিং ডিভাইসের সাথে যুক্ত হয়। মনে রাখা দরকার UTP কিংবা কোএক্সিয়াল ক্যাবলের মতাে ফাইবার অপটিক ক্যাবলকে অত সহজে স্লাইস বা টুকরাে করা যায় না এর স্লাইসিঙের জন্য দরকার পড়ে ইলেকট্রিক ফিউশন কিংবা কেমিক্যাল এপােক্সি।

ফাইবার অপটিক ক্যাবলের বৈশিষ্ট্য সমূহ হলো:

  • ফাইবার অপটিক ক্যাবল দাম ইউটিপি, এসটিপি ও কোএক্সিয়াল ক্যাবলের চেয়ে বেশ বেশি। তা বর্তমানে এর দাম কমছে এবং ব্যবহারও বাড়ছে। এই ক্যাবলের দামের সাথে সাথে আছে এর সাথে ব্যবহৃত অন্যান্য ইকুইপমেন্ট এর ব্যয়। আবার মাল্টিমোড ফাইবার অপটিকের তুলনায় সিঙ্গল- মােড ফাইবার অপটিক ক্যাবলে ইনস্টলেশন ও অন্যান্য ব্যয় অধিক।
  • ফাইবার অপটিক ক্যাবল ইনস্টল করা বেশ কঠিন। প্রতিটি কানেকশন এবং স্লাইস পয়েন্ট এমনভাবে স্থাপন করা দরকার যাতে আলােক পথ রুদ্ধ না হয়। তাছাড়া ক্যাবলকে কী পরিমাণ বাঁকানাে যাবে তারও নিয়ম আছে। একে প্রয়ােজনমতাে বাঁকানাে যায় না বলে ইনস্টলেশন বেশ কঠিন হয়ে পড়ে।
  • ফাইবার অপটিক ক্যাবলের প্রধান সুবিধা হলাে এতে অনেক উচ্চগতি পাওয়া যায়। বর্তমানে এতে ১০০ এমবিপিএস থেকে ২ জিবিপিএস বা ২ গিগাবিট/সে. গতি পাওয়া যেতে পারে। কয়েক কিলােমিটার। ব্যাপী সাধারণ মাল্টিমোড ফাইবার অপটিক ক্যাবল ব্যবহার করলে ১০০ এমবিপিএস স্পীড পাওয়া যায়।
  • টুইস্টেড পেয়ার ক্যাবলের মতোই ফাইবার অপটিক ক্যাবলে নোটের সংখ্যা নির্ভর করে হাবের পোর্টের উপর। তবে ইন্টারনেট ব্যবহার করা হলে একই কলিশন (collision) ডােমেইনে ৭৫ নােডের নিয়ম মেনে চলা দরকার। অন্যান্য ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক, যেমন FDDI নেটওয়ার্কে ব্যাকবােনে ফাইবার অপটিক ক্যাবল ব্যবহার করা হয়, ল্যানের ভেতর থাকে STP। তাই নেটওয়ার্ক ডিভাইসের সংখ্যা নিয়ে চিন্তা করার দরকার পড়ে না।
  • ইলেকট্রিসিটির মতাে আলােক সংকেত বাইরে ছড়িয়ে পড়ে না বলে এতে এটেনুয়েশন নেই বললেই চলে। এটেনুয়েশন না থাকায় এর মাঝ দিয়ে সিগন্যাল অনেক দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে। এটেনুয়েশন না থাকলেও ফাইবার অপটিক ক্যাবলে আরেকটি অসুবিধা রয়েছে যাকে বলা হয়। ক্রোমাটিক ডিসপারসন (chromatic dispersion)। বিভিন্ন তরঙ্গের আলোক সংকেত একই ক্যাবলের মধ্য দিয়ে পরিবাহিত হওয়ার সময় কিছু কিছু তরঙ্গ এদিক ওদিক হতে পারে। এটিই গােলমাল তৈরি করে। এই একই পদ্ধতিতে রঙধনুর সৃষ্টি হয়। অনেক দূরত্ব অতিক্রম করতে হলে একটি পর্যায়ে এসে এক আলােকতরঙ্গ আরেকটির সাথে মিশে যেতে পারে এবং ডাটা হারিয়ে যেতে পারে। সেজন্য দীর্ঘ দূরত্বের জন্য ব্যবহার করা হয় সিঙ্গেল- মোড ফাইবার অপটিক। সিঙ্গেল- মােড ফাইবার অপটিকে একসাথে কেবল একটি আলােকতরঙ্গ প্রবাহিত হতে পারে বলে এর মধ্য দিয়ে অনেক দূর সিগন্যাল যেতে পারে।

ফাইবার অপটিক ক্যাবলে EMI নেই বলে এটি এমন সব স্থানে ব্যবহার করা যায় যেখানে অনেক ইলেকট্রিক্যাল ইন্টার্যাগ বর্তমান। যেমন কোনো ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কশপের মাঝে নেটওয়ার্ক তৈরি করতে হলে একমাত্র ফাইবার অপটিকই দিতে পারে EMI থেকে মুক্তি। EMI না থাকার কারণে এটি ইভসড্রপিঙের সমস্যা থেকেও মুক্ত।

ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কিং

ক্যাবল বা তার ব্যবহার করে নেটওয়ার্ক গড়তে হলে আগে সেসব তার দিয়ে প্রতিটি ডিভাইসকে সংযুক্ত করার দরকার পড়ে। কিন্তু এমন কিছু পরিবেশ থাকে যেখানে ক্যাবল ইন্সটল করা মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়। যেমন ধরা যাক আপনি কোনাে প্রদর্শনীতে নেটওয়ার্ক গড়তে চাচ্ছেন যেখানে কম্পিউটারগুলাের অবস্থান স্থির থাকবে না। সেক্ষেত্রে আপনি ক্যাবল ইনস্টল করার সুযােগ পাচ্ছেন না। আবার এমন যদি হয় যে আপনার নেটওয়ার্ক ইউজাররা সবসময় এক স্থান থেকে আরেক স্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তারা চান যেখানেই থাকুক না কেন নেটওয়ার্কের সাথে সংযােগ থাকবে। এরকম পরিস্থিতিতে ক্যাবল ব্যবহার করা যায় না। এসব দিক বিবেচনা করে অনেকদিন থেকে চেষ্টা করে আসা হচ্ছে ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক তৈরির। এর কিছু প্রযুক্তি সম্পর্কে আমরা এখন জানব। এখন পর্যন্ত প্রধানত তিন ধরনের ওয়্যারলেস মিডিয়া নেটওয়ার্কের জন্য ব্যবহৃত হয়। এগুলি হলাে: রেডিও ওয়েভ, মাইক্রোওয়েভ ও ইনফ্রারেড।

রেডিও ট্রান্সমিশন

রেডিওতে যেমন সিগন্যাল ট্রান্সমিট করা হয় ঠিক সেভাবেই নেটওয়ার্কের ডাটা ট্রান্সমিট করা হয় রেডিও ট্রান্সমিশনের মাধ্যমে। এক্ষেত্রে প্রতিটি কম্পিউটার একই ফ্রিকোয়েন্সিতে সেট করা থাকে যাতে তারা অন্য কম্পিউটার কর্তৃক পাঠানাে সিগন্যাল গ্রহণ করতে পারে। রেডিও ওয়েভের ফ্রিকোয়েন্সি ১০ কিলােহার্টজ (KHz) থেকে ১ গিগাহার্টজ (GHz) হয়ে থাকে। এই রেঞ্জের মধ্যকার ইলেকট্রোম্যাগনেটিক স্পেকট্রাম কি বলা হয় রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি (RF)। বেশিরভাগ রেডিও ফ্রিকোয়েন্সিই নিয়ন্ত্রিত। অর্থাৎ ইচ্ছে করলেই আপনি এসব ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে রেডিও ট্রান্সমিশন করতে পারেন না। এর জন্য সরকারি অনুমতি দরকার হবে। কোনাে নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সিতে সিগন্যাল ট্রান্সমিট করার জন্য সরকারের কাছ থেকে আপনাকে লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে। লাইসেন্স নিলে সেই ফ্রিকোয়েন্সি আপনার জন্য সাৱক্ষিত করে এবং আইনত অন্য কেউ সেই ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করতে পারবে না। অন্য কেউ সেই ফিকোয়েন্সি ব্যবহার করে ন্সিমিশন করলে দুহঁ নেটওয়ার্ক কাজ করবে না। অনিয়ন্ত্রিত রেডিও ট্রান্সমিশন ইকুইপমেন্টের মাধ্যমে আপনি অনিয়ন্ত্রিত রেনি ফ্রিকোয়েন্সিতে ডাটা ট্রান্সমিট করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে অসুবিধা হলাে যে ওই একই ফ্রিকোয়েন্পি ব্যবহার করে অন্য কেউ সেটি ট্রান্সমিট করতে পারে। যদি পাশাপাশি দুটি নেটওয়ার্ক একই ফ্রিকোয়েন্সিতে সিগন্যাল ট্রান্সমিট করে তাহলে সমস্যা হবে। এ সমস্যার সমাধানে অনিয়ন্ত্রিত রেডিও ট্রান্সমিশনের জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসের ট্রান্সমিশন আওতা অল্প দূরত্বের মধ্যেই রাখা হয়।

RF সিগন্যালের শক্তি নির্ধারিত হয় এন্টেনা এবং ট্রান্সসিভারের মাধ্যমে। কম্পিউটার নেটওয়ার্কের জন্য তিন ধরনের ট্রান্সমিশন ব্যবহৃত হয়:

  • লো পাওয়ার, সিঙ্গল ফ্রিকোয়েন্সি
  • হাই -পাওয়ার, সিঙ্গল ফ্রিকোয়েন্সি
  • স্প্রেড স্পেকট্রাম

আমরা এখন এসব রেডিও ট্রান্সমিশন সম্পর্কে জানব।

লো-পাওয়ার সিঙ্গল ফ্রিকোয়েন্সি বা ন্যারাে ব্যান্ড ট্রান্সমিশন

লো- পাওয়ার সঙ্গে ফ্রিকোয়েন্সি ট্রান্সমিশন ন্যারো ব্যান্ড (narrow band) নামেও পরিচিত। এটি একটি অনিয়ন্ত্রিত ফ্রিকোয়েন্সি এবং অল্প দূরত্বের মধ্যে ট্রান্সমিশনে উপযোগী। এর ফ্রিকোয়েন্সি হলাে ৯০২-৯২৮ মেগাহার্টজ, ২.৪ গিগাহার্টজ এবং ৫.৭২-৫.৮৫ গিগাহার্টজ। এই ট্রান্সমিশনে সিগন্যাল সর্বোচ্চ ৭০ মিটার বা ২৩০ ফুট পর্যন্ত যেতে পারে। তবে বেশিরভাগ লো ফ্রিকোয়েন্সি ট্রান্সমিশন ইকুইপমেন্টের আওতা হলাে ২০৩০ মিটার। অন্যান্য সিগন্যাল এ ধরনের ট্রান্সমিশনে বাধা সৃষ্টি করতে পারে এবং এই ফ্রিকোয়েন্সিতে ট্রান্সমিট করা সিগন্যাল যে কেউ রিসিভ করতে পারে তাদের কম্পিউটারে যথার্থ ফ্রিকোয়েন্সি টিউন করে। এর ফলে ডাটার নিরাপত্তা মোটেই থাকে না।

ন্যারো ব্যান্ড রেডিও ট্রান্সমিশনের বৈশিষ্ট্য সমূহ হলো:

  • অন্যান্য ওয়্যারলেস মিডিয়ার চেয়ে ন্যারাে ব্যান্ড ট্রান্সমিশন সিস্টেমের খরচ তুলনামূলকভাবে কম।
  • বেশিরভাগ ন্যারো ব্যান্ড ট্রান্সমিশন ইকুইপমেন্ট ইনস্টল করা বেশ সহজ। এর এন্টেনা উপযুক্ত ফ্রিকোয়েন্সি সেট করার জন্য খুব বেশি বেগ পেতে হয় না।
  • ন্যারো ব্যান্ড রেডিও ট্রান্সমিশন গতি পাওয়া যেতে পারে ১ থেকে ১০ এমবিপিএস। এই নেটওয়ার্কে ইথারনেট নেটওয়ার্কের মতােই সর্বোচ্চ কটি নােড রাখা যাবে সে রীতি মেনে চলা দরকার।
  • ন্যারো ব্যান্ড ট্রান্সমিশন ও এটিনুয়েশন ভোগে। কারণ এর সিগন্যাল খুবই কম শক্তির।
  • ন্যারাে ব্যান্ড ট্রান্সমিশনে ইএমআই প্রভাব পড়ে, বিশেষ করে আশেপাশে যদি ইলেকট্রিক মােটর কিংবা এ ধরনের কোন যন্ত্র থাকে।

হাই-পাওয়ার সিঙ্গল ফ্রিকোয়েন্সি ট্রান্সমিশন

হাই-পাওয়ার সিঙ্গল ফ্রিকোয়েন্সি ট্রান্সমিশনে অনেক বেশি জায়গা পর্যন্ত সিগন্যাল পাঠানাে যায়। তবে এ ধরনের ট্রান্সমিশন হলাে লাইন অব সাইট অর্থাৎ কোনাে কম্পিউটার উৎস থেকে সরাসরি দেখা গেলেই কেবল সে ওই সিগন্যাল রিসিভ করতে পারবেন। তবে আয়ন স্তরে প্রতিফলিত হয়ে অন্যত্র এটি যেতে পারে। এতে ট্রান্সমিশন ফ্রিকোয়েন্সি ন্যারাে ব্যান্ডের মতােই, তবে এটি অনেক বিস্তৃত জায়গায় যেতে পারে। এ ধরনের রেডিও ট্রান্সমিশ মোবাইল কম্পিউটারের উপযোগী।

হাই পাওয়ার সঙ্গে ফ্রিকোয়েন্সি ট্রান্সমিশন বৈশিষ্ট্যসমূহ হলাে:

  • এর ট্রান্সসিভার দাম কম হলেও এন্টেনা ও অন্যান্য ইকুইপমেন্ট এর কারণে হাইপাওয়ারড সিঙ্গল ফ্রিকোয়েন্সি ট্রান্সমিশন খরচ বেশি পড়ে।
  • এর ইনস্টলেশন জটিল এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান দরকার পড়ে।
  • ব্যান্ডউইথ পাওয়া যায় ১ থেকে ১০ এমবিপিএস।
  • ইথারনেট নেটওয়ার্কের মতো সর্বোচ্চ নোট সংখ্যা হতে পারে।
  • এ ট্রান্সমিশন এটিনুয়েশন অনেক কম হয়। রিপিটার ব্যবহার করে সিগন্যালকে অনেক দূর পর্যন্ত পাঠানো যায়।
  • ন্যারাে ব্যান্ডের মতােই এখানেও EMI প্রভাব ফেলে এবং ইভসড্রপিঙের সমস্যা থাকে।

স্প্রেড স্পেকট্রাম রেডিও ট্রান্সমিশন

সিঙ্গল ফ্রিকোয়েন্সি ট্রান্সমিশনের জন্য ব্যবহৃত একই ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করা হয় স্প্রেড স্পেকট্রাম রেডিও ট্রানস্মিশন। তবে সঙ্গে ফ্রিকোয়েন্সি ট্রান্সমিশন আর প্রেড স্পেকট্রামের পার্থক্য হলো এই যে সিঙ্গল। ফ্রিকোয়েন্সি ট্রান্সমিশনে কেবল একটি ফ্রিকোয়েন্সিই ব্যবহৃত হয়, আর প্রেড স্পেকট্রাম ট্রান্সমিশনে একসাথে। মডুলেশন ও ফ্রিকোয়েন্সি হপিং। একাধিক ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহৃত হতে পারে। এর জন্য দু’ধরনের ম্যুলেশন ব্যবহৃত হয়: ডিরেক্ট সিকোয়েন্স ডিরেক্ট ফ্রিকোয়েন্সি মডুলেশন সচরাচর ব্যবহৃত হয়। এতে ডাটাকে বিভিন্ন অংশে, যাকে বলা হয় চিপ (chip), বিভক্ত করে বিভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সি পাঠানাে হয়। ইভস ড্রপিং প্রতিরোধ করার জন্য বিভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সিতে ফলস সিগন্যালও পাঠানাে হয়। রিসিভারের জানা থাকে কোন কোন ফ্রিকোয়েন্সি সঠিক, সে কারণে সে আসল ফ্রিকোয়েন্সি থেকে চিপগুলিকে সংগ্রহ করে ডাটা পুনর্গঠন করতে পারে। বর্তমানে ৯০০ মেগাহার্টজ ডিরের সিকোয়েন্স ফ্রিকোয়েন্সিতে ব্যান্ডউউথ পাওয়া যায় ২ থেকে ৬ এমবিপিএস।

এ পদ্ধতিতে একটি সিগন্যালকে আরেকটি সিগন্যাল প্রভাবিত করতে পারে, কিন্তু বিভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সির সব কী সিগন্যাল সংগ্রহ করে ডাটা পুনর্গঠন কোনাে ইভসড্রপারের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। ফ্রিকোয়েন্সি হপিঙে খুব দ্রুত সিগন্যাল কয়েকটি ফ্রিকোয়েন্সিতে পরিবর্তিত হতে থাকে। এতে ট্রান্সসিভার এ রিসিভার দুটোই খুব ভালভাবে সিনক্রোনাইজড থাকা দরকার।

স্প্রেড স্পেকট্রাম রেডিও ট্রান্সমিশনের বৈশিষ্ট্য সমূহ হলো:

  • অন্যান্য ওয়্যারলেস মিডিয়ার চেয়ে এখানে খরচ তুলনামূলকভাবে কম।
  • ব্যবহৃত ইকুইপমেন্ট এর উপর ভিত্তি করে ইনস্টলেশন মোটামুটি কঠিন হতে পারে।
  • কম ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহৃত হয় বলে স্প্রেড স্পেকট্রাম ট্রান্সমিশনে এটিনুয়েশন বেশি।
  • এতে EMI প্রতিরােধ ব্যবস্থা নেই, তবে বিভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সিতে সিগন্যাল ট্রান্সমিট হয় বলে ইভসড্রপিং ঘটে না।

এতক্ষণ আমরা বিভিন্ন রেডিও ট্রান্সমিশনের পদ্ধতি সম্পর্কে জানলাম। এসব পদ্ধতির একটি তুলনামূলক দেখতে পাবেন নিচের সারণিতে।

সিগনালের ধরণ ফ্রেকুয়েন্সি রেঞ্জ সর্বোচ্চ দূরত্ব ব্যান্ডউইডথ
ন্যারো ব্যান্ড , সিঙ্গেল ফ্রেকুয়েন্সি 902-928 Mhz

2.4 Ghz
5.72-5.85 Ghz

5-70 meter 1-10 Mbps
হাই পাওয়ার সিঙ্গেল ফ্রেকুয়েন্সি 902-928 Mhz

2.4 Ghz

5.72-5.85 Ghz

লাইন অফ সাইট 1-10 Mbps
ফ্রেকুয়েন্সি – হপিং স্প্রেড স্পেকট্রাম 902-928 Mhz

2.4 Ghz

কয়েক মাইল 1-2 Mbps
ডাইরেক্ট – সিকোয়েন্স মডুলেশন স্প্রেড স্পেকট্রাম 902-928 Mhz

2.4 Ghz

কয়েক মাইল 2-6 Mbps

মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশন

ইলেকট্রোম্যাগনেটিক স্পেকট্রাম গিগাহার্জ ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশন। এসব ফ্রিকোয়েন্সি রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির চেয়ে বেশি হওয়ায় পারফরম্যান্স ও গতি বেশি পাওয়া যায়। মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশন দু’ধরনের হতে পারে: টেরেস্ট্রিয়াল এবং স্যাটেলাইট।

টেরেস্ট্রিয়াল মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশন

টেরেস্ট্রিয়াল মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশনে লাইন অব সাইট ট্রান্সমিশন ঘটে থাকে। দুটি ডিভাইসের মধ্যে এভাবে ডাটা ট্রান্সমিশনের জন্য তাদের এন্টেনাকে অবশ্যই একই রেখা বরাবর থাকতে হবে এবং মাঝখানে কোনাে বাধা থাকতে পারবে না। এ ধরনের ট্রান্সমিশনে ডিশের মতাে এন্টেনা ব্যবহৃত হয়। এতে রেডিও ট্রান্সমিশনের চেয়ে অনেক বেশি ফ্রিকোয়েন্সি- ৪ থেকে ৬ গি.হা. এবং ২১ থেকে ২৩ গি.হা. – ব্যবহৃত হতে পারে। তবে এর জন্য সরকারি কর্তৃপক্ষের অনুমোদন লাগবে। মাঝখানে কোনো বাধা না থাকলে টেরেস্ট্রিয়াল মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশন সিগন্যাল ১- ৫০ মাইল পর্যন্ত যেতে পারে। এর মাঝে রিলে টাওয়ার ব্যবহার করা যেতে পারে। সাধারণত এক বিল্ডিং থেকে আরেক বিল্ডিং, যেখানে ক্যাবলিং সম্ভব হয় না সেখানে টেরেস্ট্রিয়াল মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশন ব্যবহার করে দুই বিল্ডিং এর নেটওয়ার্ক কে যুক্ত করা হয়।

টেরেস্ট্রিয়াল মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশন বৈশিষ্ট্যসমূহ হলাে:

  • অল্প দূরত্বের জন্য এ পদ্ধতি ব্যবহার করতে চাইলে খরচ তুলনামূলকভাবে কম। কিন্তু বেশি দূরত্বের জন্য করতে গেলে বেশ ব্যয়বহুল হয়ে দাড়ায়।
  • এ ট্রান্সমিশন লাইন অব সাইট ব্যবহার করে বলে ইনস্টলেশন কঠিন হয়ে দাড়ায়। ইনস্টলেশনের সময়
  • নিশ্চিত করতে হবে যে দুই এন্টেনার মাঝে কোনাে বাধা নেই বা ভবিষ্যতে থাকবে না।
  • ব্যবহৃত ফ্রিকোয়েন্সি, সিগন্যাল ও, এন্টেনার আকারের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন মাত্রার এটেনুয়েশন দেখা দিতে পারে। কুয়াশা, বৃষ্টি ইত্যাদিও সিগন্যাল ট্রান্সমিশনে বাধা হয়ে দাড়ায়।
  • মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশন EMI প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেই। সে কারণে এই ট্রান্সমিশন ইভসড্রপিঙের শিকার হতে পারে। তবে অনেক মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশনে এনক্রিপশন ব্যবহার করে ডাটা সুরক্ষিত রাখা হয়। EMI -এর পাশাপাশি আবহাওয়ার কারণে মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশন বিঘ্নিত হতে পারে।

স্যাটেলাইট মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশন

স্যাটেলাইট মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশনের মাধ্যমে অনেক দূরবর্তী নেটওয়ার্কের সাথে ডাটা ক্যুনিকেশন গড়ে তােলা যায়। এক্ষেত্রে সিগন্যাল পাঠানাের জন্য ভূপৃষ্ঠে স্যাটেলাইট ডিশ এবং শূণ্যে স্যাটেলাইট ব্যবহার করা হয়। শূণ্যের স্যাটেলাইট এবং ভূপৃষ্ঠের স্যাটেলাইট ডিশের মধ্যে দূরত্ব থাকে প্রায় ৫০,০০০ কিলোমিটার। এ ধরনের ট্রান্সমিশনে ল্যানের কোনাে কম্পিউটার ক্যাবলের মাধ্যমে সিগন্যাল পাঠায় এন্টেনা বা স্যাটেলাইট ডিশের কাছে। স্যাটেলাইট ডিশ সেই সিগন্যাল বীম পাঠায় পৃথিবীর অক্ষে অবস্থিত স্যাটেলাইটের নিকট। সেই স্যাটেলাইট তখন ভুপৃষ্ঠের অন্য কোনাে স্যাটেলাইট ডিশের নিকট সেই সিগন্যাল পাঠিয়ে দেয়। গন্তব্য স্যাটেলাইট ডিশ যদি পৃথিবীর অন্যপ্রান্তে থাকে কিংবা স্যাটেলাইট থেকে সরাসরি সেটিকে দেখা না যায় তাহলে সেই স্যাটেলাইট ওই সিগন্যালকে অন্য স্যাটেলাইটের নিকট পাঠিয়ে দিতে পারে। দ্বিতীয় স্যাটেলাইট যদি গন্তব্য স্যাটেলাইট ডিশকে দেখতে পায় তাহলে সেই সিগন্যাল গন্তব্যে পৌঁছে দেয়।

নেটওয়ার্ক মিডিয়া এবং কানেক্টর

লক্ষ্য করুন, এ ধরনের ট্রান্সমিশনে সিগন্যালকে প্রথমে ৫০,০০০ কিলােমিটার অতিক্রম করে ভূপৃষ্ঠ থেকে স্যাটেলাইটে পৌছুতে হচ্ছে, তারপর আবার ৫০,০০০ কিলােমিটার অতিক্রম করে ভূপৃষ্ঠে ফেরত আসতে হচ্ছে। এই দূরত্ব অতিক্রমের ফলে সিগন্যাল ট্রান্সমিশনে কিছু বিলম্ব ঘটে। এই বিলম্বকে বলা হয় প্রােপাগেশন ডিলে (propagation) .

স্যাটেলাইট মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশনের বৈশিষ্ট্য সমূহ হলো:

  • এতে বেশ উচ্চমাত্রার ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহৃত হয়। এর ফ্রিকোয়েন্সি সাধারণত ১১ থেকে ১৪ গিগাহার্টজ হয়ে থাকে।
  • স্যাটেলাইট মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশনের ব্যয় অত্যধিক। খুব বড় ধরনের নেটওয়ার্ক না হলে এবং একান্তই দরকার না হলে এধরনের নেটওয়ার্ক কেউ ব্যবহার করে না। তবে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিশনের মাধ্যমে যে কভারেজ দেয়া যায় সেখানে ক্যাবল ইনস্টল করতে গেলে অনেক অনেকগুণ বেশি ব্যয় হবে।
  • এ ধরনের ইনস্টলেশন সত্যিই বেশ কঠিন এবং এটি কেবল বহু বছরের অভিজ্ঞ লােকের হাতেই দেয়া যেতে পারে।
  • এটি এটেনুয়েশনের শিকার হতে পারে। কুয়াশা, বৃষ্টি ও প্রতিকূল আবহাওয়া এই ট্রান্সমিশনকে বিঘ্নিত করতে পারে।
  • এ ট্রান্সমিশনে EMI প্রভাব ফেলে এবং এতে ইভসডুপিঙের সম্ভাবনা থাকে।

ইনফ্রারেড ট্রান্সমিশন

দৈনন্দিন জীবনে আমরা রিমোট কন্ট্রোল ব্যবহারের সময় ইনফ্রারেড ব্যবহার করে থাকি। টেলিভিশন সেটের রিমােট কন্ট্রোলে এ ধরনের ট্রান্সমিশন ব্যবহার করা হলেও কম্পিউটার নেটওয়ার্কের জন্য এটি তেমন উপযােগী নয়। একসাথে একইদিকে কিংবা উভয় দিকে ইনফ্রারেড সিগন্যাল প্রেরণ ও গ্রহণ করা যেতে পারে। একমুখী ট্রান্সমিশনের ক্ষেত্রে গতি হতে পারে ১৬ এমবিপিএস, আর উভয়মুখী ট্রান্সমিশনের জন্য গতি হবে ১ এমবিপিএস বা তারও কম। এ ধরনের ট্রান্সমিশন সিগন্যাল সর্বোচ্চ ৩০ মিটার পর্যন্ত যেতে পারে এবং মাঝখানে কোনাে বাধা থাকলে তা ভেদ করে যেতে পারে না। তাহলে দেখা যাচ্ছে ছােট ধরনের ল্যানের জন্যই এটি উপযােগী হতে পারে। উজ্জ্বল আলো থাকলে ইনফ্রারেড ট্রান্সমিশন বাধাগ্রস্ত হয়। ইনফ্রারেড ট্রান্সমিশন দু’ধরনের হতে পারে: পয়েন্ট টু পয়েন্ট এবং ব্রডকাস্ট।

পয়েন্ট টু পয়েন্ট ইনফ্রারেড ট্রান্সমিশন

এ ধরনের ট্রান্সমিশনে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে সিগন্যাল ট্রান্সমিট করা হয়ে থাকে। এর জন্য লেজার ট্রান্সমিটার ব্যবহার করা হয় এবং সেটি লাইন অব সাইট (line of sight) ট্রান্সমিশন ব্যবহার করে। লাইন অব সাইট ট্রান্সমিশন ব্যবহৃত হলেও এই সিগন্যাল হাজার মিটার পর্যন্ত যেতে পারে। ইনফ্রারেড পয়েন্ট টু পয়েন্ট ট্রান্সমিশনের সুবিধা হলাে এর জন্য কোনাে লাইসেন্স দরকার হয় না। এসব ডিভাইস দেখতে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত রিমােটযুক্ত ডিভাইসসমূহের মতােই। এক্ষেত্রে ট্রান্সমিটার ও রিসিভারকে এমনভাবে স্থাপন করা দরকার যাতে তারা লাইন অব সাইটে থাকে এবং এদের মাঝে কোনাে কিছু বাধা হয়ে না দাড়ায়।

পয়েন্ট টু পয়েন্ট ইনফ্রারেড ট্রান্সমিশন বৈশিষ্ট্যসমূহ হলাে:

  • এ ধরনের ট্রান্সমিশন ১০০ গিগাহার্জ থেকে ১০০০ টেরা হার্জ ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করতে পারে।
  • কোন ধরনের ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে তার উপর নির্ভর করে ব্যয় কত হবে। দূরপাল্লার জন্য। শক্তিশালী লেজার ডিভাইস দরকার হবে। সেক্ষেত্রে ব্যয় বেশি হবে। কিন্তু অল্প দূরত্বে সিগন্যাল। পাঠানাের জন্য সাধারণ রিমােট কন্ট্রোল ডিভাইস ব্যবহার করা যেতে পারে এবং খরচ বেশ কম হবে।
  • ইনফ্রারেড ট্রান্সমিশন ইকুইপমেন্ট ইনস্টল করা খুব কঠিন নয়, তবে প্রতিটি ডিভাইস লাইন অব সাইটে। আছে কি না তা নিশ্চিত করতে হবে।
  • ইকুইপমেন্টের উপর ভিত্তি করে ব্যান্ডউইডথ ১০০ কেবিপিএস থেকে ১৬ এমবিপিএস পর্যন্ত হতে পারে।
  • আশপাশের আলো এবং আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে এটিনুয়েশন কতটুকু প্রভাব ফেলবে।
  • উজ্জ্বল আলাে দ্বারা ইনফ্রারেড ট্রান্সমিশন বিঘ্নিত হয়। তবে ইভসড্রপিঙের সম্ভাবনা এতে থাকে না।

ব্রডকাস্ট ইনফ্রারেড ট্রান্সমিশন

ব্রডকাস্ট ইনফ্রারেড ট্রান্সমিশনে এক জায়গা থেকে সিগন্যাল ট্রান্সমিট করা হয় এবং বিভিন্ন ওয়ার্কস্টেশন সে সিগন্যাল রিসিভ করতে পারে। এতে ট্রান্সমিশনের আওতা বাড়ে এবং সহজে ওয়ার্কস্টেশনসমূহ স্থানান্তর করা যায়। ব্রডকাস্ট ইনফ্রারেড ট্রান্সমিশনে গতি বেশ ধীর হয়ে থাকে। এতে সর্বোচ্চ গতি পাওয়া যেতে পারে ১ এমবিপিএস। সে কারণে নেটওয়ার্ক উপযোগী ট্রান্সমিশন এটি নয়।

ব্রডকাস্ট ইনফ্রারেড ট্রান্সমিশনের বৈশিষ্ট্য সমূহ হলো:

  • এর ফ্রিকোয়েন্সি হতে পারে ১০০ গিগাহার্জ থেকে ১০০০ টেরাহার্জ।
  • কোন ধরনের ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করছি তার উপর নির্ভর করে এর ব্যয় কমবেশি হতে পারে।
  • ইনস্টলেশন বেশ সহজ। এখানে লক্ষ্য রাখতে হবে ট্রান্সমিটারের সাথে যেন সব ওয়ার্কস্টেশন লাইন অব সাইটে থাকে। বেশি আলাে যাতে না পড়ে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
  • পয়েন্ট টু পয়েন্ট ইনফ্রারেড ট্রান্সমিশন মতো এখানে এটিনুয়েশন ও EMI দেখা দিতে পারে।

আমরা এতক্ষণ বিভিন্ন নেটওয়ার্ক মিডিয়া সম্পর্কে আলােচনা করেছি। প্রতিটি মিডিয়ারই আছে কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট্য। এসব বৈশিষ্ট্য এবং নেটওয়ার্কের প্রয়ােজনীয়তার দিকে লক্ষ্য রেখে আমাদের নেটওয়ার্ক মিডিয়া নির্বাচন করা দরকার। সহজে নেটওয়ার্ক মিডিয়ার বৈশিষ্ট্যসমূহ দেখানাে হলাে পরবর্তী সারণিতে।

broadcast infrared transmission

বিভিন্ন কানেক্টর

যেকোন ক্যাবলকে কোনাে নেটওয়ার্ক এডাপ্টারের সাথে সংযােগ দেয়ার জন্য ওই ক্যাবলের উপযােগী কানেক্টর। প্রয়ােজন হবে। নেটওয়ার্ক কার্ডে কোন ধরনের কানেক্টর আছে তার ওপর নির্ভর করে আপনার ক্যাবল সিলেক্ট করতে হবে। কোনাে নেটওয়ার্ক এডাপ্টারে একইসাথে কয়েক ধরনের ক্যাবল কানেক্টর থাকতে পারে। কিন্তু মনে রাখা দরকার একসাথে কেবল একটি ক্যাবলের সাথেই সেই এডাপ্টারকে যােগ করা যাবে। চিত্র ৭.১০- এ বিভিন্ন ধরনের কানেক্টর দেখানো হলো। বহুল প্রচলিত কানেক্টরগুলো সম্পর্কে নিম্নে আলোকপাত করা হলো।

  • বিএনসি কানেক্টর: ব্রিটিশ ন্যাভাল কানেক্টর বা BNC কানেক্টর ব্যবহার করা হয় থিন কোএক্সিয়াল ক্যাবলের ক্ষেত্রে। BNC কানেক্টর আবার কয়েক ধরনের। বিএনসি টি কানেক্টর ইংরেজি টি (T) অক্ষরের অনুরূপ এবং এটি ব্যবহার করে কোএক্সিয়াল ক্যাবলের সাথে কোনাে ডিভাইসের সংযােগ দেয়া হয়। এবং এটি থেকে ক্যাবল বেরিয়ে যায়। বিএনসি ক্যাবল কানেক্টর ক্যাবলের সাথে যুক্ত থাকে এবং ক্যাবল ও T-কানেক্টরের সংযোগ দেয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়।
  • ব্যারেল কানেক্টর: ব্যারেল কানেক্টর দিয়ে দুটি ক্যাবলস সেগমেন্ট কি জোড়া দেয়া হয়।
  • টার্মিনেটর: কোএক্সিয়াল ক্যাবল ব্যবহার করে বাস তৈরির সময় বাসের দুই প্রান্তে এই টার্মিনেটর ব্যবহার করা হয়।
  • আরজে- ৪৫ কানেক্টর: একটি টেলিফোন জ্যাক এর মতো একটি কানেক্টর যা ১০বেজটি নেটওয়ার্কে টুইস্টেড পেয়ার ক্যাবলের সাথে ব্যবহৃত হয়।
  • ফাইবার অপটিক এসটি কানেক্টর: ফাইবার অপটিক ক্যাবলের সাথে ব্যবহার করা হয়।

নেটওয়ার্ক মিডিয়া এবং কানেক্টর

সারকথা

যে ধরনের নেটওয়ার্কই তৈরি করি না কেন সেখানে সিগন্যাল পরিবহনের জন্য একটি মিডিয়া বা মাধ্যম দরকার হবে। নেটওয়ার্ক মিডিয়া হিসেবে ব্যবহৃত হয় তামা, কাচ কিংবা বাতাস। এর মধ্যে সবচেয়ে সহজলভ্য ও বহুল ব্যবহৃত মিডিয়া হলাে তামা। ফাইবার অপটিক ক্যাবল হলাে কাচের তৈরি একটি মাধ্যম যা বেশ দ্রুতগতির। তামা কিংবা ফাইবার অপটিক ক্যাবল ছাড়াও নেটওয়ার্ক গড়া যায়। এক্ষেত্রে বাতাস মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। এ ধরনের নেটওয়ার্কে তার ব্যবহৃত হয় না বলে একে ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক বলা হয়। কোন ধরনের নেটওয়ার্ক মিডিয়া ব্যবহার করবেন তা নির্ভর করে বেশ কিছু নিয়ামকের উপর। এসব নিয়ামকের মধ্যে অন্যতম হলাে সেই মিডিয়ার ব্যয়, গতি এবং সহজলভ্যতা। এসব দিক বিবেচনায় তামার ক্যাবলই হলাে। উপযুক্ত মিডিয়া। তবে উচ্চগতি চাইলে ফাইবার অপটিক ক্যাবল ব্যবহার করা যেতে পারে। ওয়্যারলেস মিডিয়া এখনও পরিপক্ক নয় এবং এটি ব্যয়বহুল। মিডিয়ার সাথে নেটওয়ার্কের বিভিন্ন ডিভাইসকে যুক্ত করার জন্য ব্যবহৃত হয় বিভিন্ন কানেক্টর। কোন ধরনের কানেক্টর ব্যবহার করবেন তা নির্ভর করে ব্যবহৃত মিডিয়ার উপর। নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত কয়েকটি কানেক্টর হলাে BNC কানেক্টর, RJ-11 কানেক্টর, RJ-45 কানেক্টর, ভ্যাম্পায়ার ট্যাপ এবং ফাইবার অপটিক ST কানেক্টর।

Check Also

NETWORK LOOP

NETWORK LOOP

NETWORK LOOP A network loop is a situation in which data packets in a computer …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »