বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ডিভাইস
(বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ডিভাইস) কম্পিউটার নেটওয়ার্ক গড়ে তােলার জন্য নেটওয়ার্ক মিডিয়া এবং কানেক্টরই যথেষ্ট নয়। মিডিয়া ও কানেক্টরের সাহায্যে গড়ে তোলা সেই নেটওয়ার্ক কে কার্যকর করে তোলার জন্য আরাে কিছু ডিভাইস দরকার। এসব ডিভাইসের মধ্যে আছে নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড, হাব বা কনসেনট্রেটর, রিপিটার, ব্রিজ, সুইচ, রাউটার, ইত্যাদি। ভালো নেটওয়ার্ক ডিজাইন ও নেটওয়ার্ক এডমিনিস্ট্রেশন এর জন্য এসব ডিভাইসের কাজ ও সেসব ব্যবহারের নিয়মকানুন সম্পর্কে জানা দরকার। এ অধ্যায়ে আমরা বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ডিভাইস, যেমন -নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড, রিপিটার, হাব, ব্রিজ, সুইচ, রাউটার, রাউটার এবং তাদের কার্যপ্রণালী সম্পর্কে জানব।
নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড
কোনাে কম্পিউটারকে কোনাে নেটওয়ার্ক মিডিয়ার সাথে সংযােগ দেয়ার জন্য একটি বিশেষ ইন্টারফেসের দরকার পড়ে। নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড বা ল্যান কার্ড এই ইন্টারফেসের কাজ করে। এই নেটওয়ার্ক এডাপ্টার যেকোন মিডিয়ার জন্য কম্পিউটারকে কানেক্ট করার সুযােগ দিতে পারে। বিভিন্ন মিডিয়ার জন্য বিভিন্ন নেটওয়ার্ক এডাপ্টার রয়েছে এবং উপযুক্ত কানেক্টর দিয়ে সেসব কম্পিউটারকে নেটওয়ার্কে যুক্ত করা যেতে পারে। কেবল যে সার্ভার কিংবা ওয়ার্কস্টেশনেই নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড থাকে তা নয়, প্রিন্টার কিংবা অন্য ডিভাইসেও নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড থাকতে পারে। কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেমের সাথে যােগাযােগ গড়ার জন্য নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড বিশেষ সফটঅয়্যার ব্যবহার করে থাকে যাকে বলা হয় ড্রাইভার। উপযুক্ত ড্রাইভার না থাকলে সেটি অপারেটিং সিস্টেমের সাথে যােগাযােগ করতে পারে না এবং নেটওয়ার্ক ফাংশন দিতে পারে না।
প্রতিটি ইথারনেট এবং টোকেন- রিং নেটওয়ার্ক এডাপ্টারে রয়েছে একটি করে বিল্ট-ইন ফিজিক্যাল এড্রেস। এটি ওই কার্ড প্রস্তুতকারক দেয় এবং একে পরিবর্তন করা যায় না। প্রতিটি কার্ডের জন্য এই এড্রেস অবশ্যই ভিন্ন হতে হবে। এই এড্রেসকে বলা হয় ওই কার্ডের মিডিয়া একসেস কন্ট্রোল বা MAC এড্রেস। একটি নেটওয়ার্ক এডাপ্টার এর পরিবর্তে আরেকটি লাগালে তার MAC এড্রেস পরিবর্তিত হয়। এক কম্পিউটার আরেক কম্পিউটারের সাথে যােগাযােগ করতে পারে এই ইউনিক MAC এড্রেসের কারণে কোনাে নেটওয়ার্ক ডিভাইস আরেকটি ডিভাইসের সাথে যােগাযােগ করতে চাইলে সে ওই ডিভাইসের MAC এড্রেস পেতে চায়। এই MAC এড্রেস জানার জন্য ব্যবহৃত হয় এড্রেস রেজলুশন প্রটোকল বা ARP। ARP তার জানায় প্রতিটি ডিভাইসের MAC এড্রেস ARP টেবিলে সংরক্ষণ করে। কোন ডিভাইস এআরপির নিকট কোয়েরি চালালে সে তার ARP টেবিল থেকে এড্রেস সেই ডিভাইসকে জানিয়ে দেয়। এর ফলে সেই ডিভাইস অন্য ডিভাইসের সাথে যােগাযােগ করতে পারে। এই এড্রেস টেবিল একটি নির্দিষ্ট সময় পর আপডেট হতে পারে। কোনাে কম্পিউটারের MAC এড্রেস ওই টেবিলে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য রাখা হয়। ওই সময়ের মধ্যে সেই কম্পিউটারের MAC এড্রেস জানার জন্য যদি কোনো কোয়েরি না আসে তাহলে সেটিকে মুছে ফেলা হয়। এন্ট্রি মুছে ফেলার পর যদি সেই MAC এড্রেসের জন্য কোয়েরি আসে তাহলে ARP সেটি নূতন করে জেনে নেবে। ARP বা এড্রেস রেজুলেশন প্রটোকল এর কাজ হলো ফিজিক্যাল ডিভাইসের MAC এড্রেস অন্যদের জানিয়ে দেয়া।(বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ডিভাইস)
কোনাে সার্ভার বা ওয়ার্কস্টেশনের জন্য নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড নির্বাচনের সময় তিনটি বিষয়ে নজর দেয়া দরকার:
- আপনি কোন ধরনের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করবেন তার উপর নির্ভর করে নেটওয়ার্ক এডাপ্টার নির্বাচন করতে হবে। ইথারনেট ব্যবহার করতে চাইলে ইথারনেট এডাপ্টার আর টোকেন -রিং নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে চাইলে টোকেন -রিং নেটওয়ার্ক এডাপ্টার নিতে হবে। ইথারনেট নেটওয়ার্ক এডাপ্টার টোকেন রিং নেটওয়ার্কের কিংবা টোকেন রিং নেটওয়ার্ক অ্যাডাপ্টার ইথারনেট নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারবেন না।
- আপনি নেটওয়ার্কে যেধরনের মিডিয়া ব্যবহার করতে চান তার উপযুক্ত কানেক্টর নেটওয়ার্ক এডাপ্টারে থাকতে হবে। কোনো কোনাে ইথারনেট এডাপ্টার একই সাথে একাধিক ধরনের কানেক্টর থাকে। এরকম এডাপ্টার হলে আপনি কয়েক ধরনের মিডিয়া ব্যবহারের সুযােগ পাবেন। তবে মনে রাখা দরকার, সেই এডাপ্টারকে একসাথে কেবল একটি মিডিয়ার সাথেই যুক্ত করতে পারবেন। কোএক্সিয়াল ক্যাবলের জন্য BNC কানেক্টর, ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবলের জন্য RJ-45 কানেক্টর ও ফাইবার অপটিকের জন্য SC কিংবা ST কানেক্টর থাকা দরকার।
- নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড কি আপনার কম্পিউটারের মাদারবোর্ডে বসাতে হবে। মাদারবোর্ডের কোন ধরনের সুট খালি আছে সেদিকেও নজর দিতে হবে। কেননা PCI এবং ISA এ দুধরনের সুটের জন্য নেটওয়ার্ক এডাপ্টার ভিন্ন। যদি PCI স্লট ফাঁকা থাকে তাহলে PCI নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড ব্যবহার করাই উত্তম।(বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ডিভাইস)
নেটওয়ার্ক এডাপ্টারের কাজ
একটি ডিভাইস আরেকটির সাথে যােগাযােগ করার প্রথম ধাপটিই শুরু হয় নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড থেকে। এটি উৎস এবং গন্তব্য উভয় কম্পিউটারেই বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড OSL রেফারেন্স মডেলের ডাটা লিঙ্ক লেয়ার এ কাজ করে।
উৎস কম্পিউটারে এটি নিচের কাজগুলি করে থাকে:
- নেটওয়ার্ক থেকে ডাটা প্যাকেট গ্রহণ করে।
- ডেটা প্যাকেটে MAC এড্রেস যোগ করে।
- গন্তব্য ডিভাইসের MAC এড্রেস এই ডাটা প্যাকেটে যােগ করে।
- নেটওয়ার্ক একসেস মেথড কোনটি ব্যবহৃত হচ্ছে-ইথারনেট, টোকেন -রিং নাকি FDDI -তার উপর ভিত্তি করে ডাটাকে উপযুক্ত প্যাকেট ফরম্যাটে পরিবর্তন করে ।
- নেটওয়ার্কে ট্রান্সমিট করার জন্য প্যাকেটকে ইলেকট্রিক্যাল, লাইট কিংবা রেডিও সিগন্যালে পরিণত করে।
- মিডিয়ার সাথে ফিজিক্যাল কানেকশন তৈরি করে।
অন্যদিকে গন্য কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ডের কাজ হলো:
- মিডিয়ার সাথে ফিজিক্যাল কানেকশন তৈরি করে
- ইলেকট্রিক্যাল, লাইট কিংবা রেডিও সিগন্যালকে ডাটা প্যাকেটে রূপান্তর করে
- এ ডাটা পকেটে গন্তব্য এড্রেস পরীক্ষা করে দেখে সেটি ঠিক জায়গায় এসেছে কি না। যদি দেখে সেই প্যাকেটের MAC এড্রেস আর ওই কম্পিউটারের নিজের MAC এড্রেস এক নয় তাহলে সে ওই প্যাকেট ফেলে দেয়।
- গন্তব্য এড্রেস ওই কম্পিউটারের নিজের MAC এড্রেসের সাথে মিলে গেলে সেটি নেটওয়ার্ক লেয়ারে পৌঁছানো হয়।
নেটওয়ার্ক বর্ধিত করা
আপনি যখন কোনাে একটি নেটওয়ার্ক গড়ছেন তখন এতে বেশ কিছু কম্পিউটার, কিছু প্রিন্টার ও অন্যান্য রিসাের্স থাকতে পারে। এটি হলাে একটি খুবই সহজ নেটওয়ার্ক বেশিরভাগ লােকাল এরিয়া নেটওয়ার্কই এ রকম হয়। কিন্তু এ নেটওয়ার্কে কম্পিউটার ও অন্যান্য ডিভাইসের সংখ্যা বাড়তে থাকলে কী হবে? সেক্ষেত্রে আপনার নেটওয়ার্ককে বাড়ানাের ব্যবস্থা করতে হবে। এমন কিছু ডিভাইস আছে যার সাহায্যে একটি লােকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক কে বর্ধিত করা যেতে পারে। এরকম ডিভাইসের মধ্যে অন্যতম হলো রিপিটার, হাব, ব্রিজ, রাউটার, ব্রাউটার, ইত্যাদি। এসব ডিভাইস একেকটি একেক ধরনের কাজ করে। কোনােটি কাজ করে নেটওয়ার্ক লেয়ারে আবার কোনােটি বা কাজ করে ডাটালিঙ্ক কিংবা ফিজিক্যাল লেয়ারে।
নেটওয়ার্ক সেগমেন্ট
বাস্তবে আমরা একই নেটওয়ার্ক কয়েকটি ভাগে ভাগ করলে সেটিকে বলে থাকি নেটওয়ার্ক সেগমেন্ট। বিভিন্ন কারণে নেটওয়ার্ক সেগমেন্ট তৈরির দরকার পড়ে। এর প্রধান কারণ হলাে নেটওয়ার্ক ট্রাফিককে একটি গন্ডির মধ্যে রাখা। এই সেগমেন্ট তৈরি করার জন্য বেশ কিছু কানেক্ট ডিভাইস ব্যবহৃত হয়। কোন নেটওয়ার্কে কোন ডিভাইস যােগ করলে কিংবা নেটওয়ার্ক কে বর্ধিত করলে নেটওয়ার্কের পারফরম্যান্স কমে যেতে পারে। যেমন কোএক্সিয়াল ক্যাবল ব্যবহার করে বাস টপোলজি গড়ে তােলা হলে বাসের দৈর্ঘ্য হতে পারে ১৮৫ মিটার। একে আরাে বর্ধিত করতে চাইলে এর সঙ্গে বিশেষ ডিভাইস ব্যবহার করতে হবে যা সিগন্যাল বুস্ট বা এমপ্লিফাই করতে পারে। নেটওয়ার্ক বেশি করেন ডিভাইস যােগ করার অর্থই হলাে নেটওয়ার্ক ট্রাফিক বাড়ানাে। নেটওয়ার্ক ট্রাফিক বাড়লে তাতে সংঘর্ষ বা কলিশন বাড়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। সংঘর্ষ বাড়া মানে নেটওয়ার্কের পারফরম্যান্স কমে যাওয়া। এই সংঘর্ষ যাতে কম হয় সেজন্য আমরা বিভিন্ন ওয়ার্কস্টেশনের ট্রাফিককে কিছু নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ করে নিতে পারি। রাস্তায় জট লাগার হাত থেকে বাঁচার জন্য ট্রাফিক পুলিশ যেমন রিকশা ও যান্ত্রিক যানের রাস্তা ভিন্ন করে দেয়ার চেষ্টা করছেন তেমনি আমরা নেটওয়ার্কে বিভিন্ন ওয়ার্কস্টেশনের ট্রাফিক কোনটি কোন পথে যেতে পারবে তা নির্ধারণ করে দিতে পারি। বিশেষ কিছু ডিভাইস ব্যবহার করে। কোনাে নেটওয়ার্ককে কয় ভাগে ভাগ করতে হবে কিংবা আদৌ বিভক্ত করার দরকার হবে কি না তা নির্ধারিত হয় দুটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে: ব্রডকাস্ট ডোমেইন (broadcast domain) এবং কলিশন ডোমেইন (collision domain)।
প্রথমেই আমরা জানব ব্রডকাস্ট ডােমেইন সম্পর্কে। ব্রডকাস্ট বলতে আমরা বুঝি এমন সিগন্যাল যা ওই নেটওয়ার্কের সবকটি ডিভাইসের নিকট পৌছে। ব্রডকাস্টকে আমরা তুলনা করতে পারি চিৎকারের সাথে। ক্লাশের কোন ছাত্রের নাম রহিম তা জানার জন্য শিক্ষক মাঝে মাঝে চিৎকার করেন এবং সবাই সেই কথা শােনে কিন্তু। উত্তর দেয় কেবল সেজনই যার নাম রহিম। তেমনি নেটওয়ার্কে ব্রডকাস্টের ব্যবহারও হয়ে থাকে এধরনের কোনাে ক্লায়েন্টের নামের বিপরীতে তার আইপি এড্রেস ও লজিক্যাল এড্রেস পাওয়ার জন্য। কোনাে নেটওয়ার্কে একটি ব্রডকাস্ট যেসব ডিভাইসের নিকট পৌছে তাদেরকে নিয়ে যে গ্রুপ তাকেই বলা হয় ব্রডকাস্ট ডােমেইন। প্রায় সবধরনের নেটওয়ার্কেই কিছু কিছু কাজের জন্য ব্রডকাস্ট ব্যবহৃত হয়। ব্রডকাস্টের বড় অসুবিধা হলাে এই যে এটি নেটওয়ার্কে অযথা ট্রাফিক তৈরি করে। যে মেসেজ একজনকে জানানাের দরকার সেটি অযথা অনেকের নিকট পৌছে। ব্রডকাস্ট ব্যবহৃত হয় এমন নেটওয়ার্কে নােডের সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে ব্রডকাস্টের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। কোন ক্লাসের সকল ছাত্র একজন আরেকজনের নাম জানার জন্য যদি চিৎকার শুরু করে তাহলে অবস্থাটি কী দাঁড়াবে চিন্তা করুন। তেমনি যদি নেটওয়ার্কের সব স্টেশনই ব্রডকাস্ট শুরু করে তাহলে ব্রডকাস্ট ট্রাফিকেই পুরাে নেটওয়ার্ক প্লাবিত হবে। সেকারণে নেটওয়ার্ক ডিজাইনে ব্রডকাস্টকে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হয়। এটি করা হয়ে থাকে বড় নেটওয়ার্ককে বেশ কটি ছােট ছােট ব্রডকাস্ট ডডামেইনে বিভক্ত করে। এটি করার বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে জানব পরবর্তীতে।(বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ডিভাইস)
নেটওয়ার্ক সেগমেন্ট করার জন্য আরেকটি নিয়ামক হলাে কলিশন ডােমেইন। আমরা জানি একই সময়ে দুটি ডিভাইস একই মিডিয়ার মাধ্যমে সিগন্যাল ট্রান্সমিট করতে চাইলে দুই সিগন্যালে সংঘর্ষ বা কলিশন ঘটে। কোনাে নেটওয়ার্কে কলিশন ঘটলে ওই নেটওয়ার্কের সকল ডিভাইস সেই কলিশন অস্তিত্ব টের পায় এবং তারা একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করে কোনাে সিগন্যাল না পাঠিয়ে। কলিশনের কারণে এভাবে নেটওয়ার্কের পারফরম্যান্স কমে যায়। একটি কলিশন ঘটলে যেসব ডিভাইস সেই কলিশনের অস্তিত্ত্ব টের পায় তাদের নিয়ে গড়ে উঠে একটি কলিশন ডোমেইন। সাধারণত ইথারনেট নেটওয়ার্ক ব্রডকাস্ট ডোমেইন এবং কলিশন ডােমেইন একই হয়ে থাকে। কিন্তু কিছু নেটওয়ার্ক ডিভাইস, যেমন ব্রিজ, সুইচ, ইত্যাদি ব্যবহার করে কলিশন ডােমেইন ও ব্রডকাস্ট ডোমেইন ভিন্ন করে দেয়া যায়।(বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ডিভাইস)
একটি নেটওয়ার্ককে দু’ভাবে সম্প্রসারণ করা যেতে পারে:
- একই নেটওয়ার্কের মধ্যে নূতন ডিভাইস বা নােড যােগ করে তাকে বর্ধিত করা। একে বলা হয় নেটওয়ার্ক কানেক্টিভিটি।
- এক নেটওয়ার্কের সাথে অন্য নেটওয়ার্ক যুক্ত করা। একে বলা হয় ইন্টারনেটওয়ার্কিং বা ইন্টার নেটওয়ার্ক কানেক্টিভিটি।
- আমরা প্রথমে নেটওয়ার্ক কানেক্টিভিটি ও পরে ইন্টারনেটওয়ার্ক কানেক্টিভিটি ডিভাইস সম্পর্কে জানব।
লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক বিভক্তিকরণ
কোনাে LAN-কে একাধিক অংশে বিভক্ত করার জন্য বেশ কিছু ডিভাইস যেমন- সুইচ, ব্রিজ ও রাউটার ব্যবহার করা যায়। এসব ডিভাইস এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে কলিশন সিগন্যাল এসব ডিভাইসের মধ্য দিয়ে অন্য অংশে যেতে না পারে। কিন্তু কিছু কিছু ডিভাইস যেমন রিপিটার ও হাব কলিশনকে প্রতিটি সেগমেন্টে যেতে দেয় কোনাে বাধা ছাড়াই। এসব ডিভাইস ব্যবহার করার সময় নজর রাখতে হবে যাতে একই কলিশন ডােমেইনে নােডের সংখ্যা বেশি না হয়। তাত্ত্বিকভাবে একটি কলিশন ডােমেইনে ১০২৪টি নােড থাকতে পারে, আসলে তা বাস্তবে করা যাবে না। একটি কলিশন ডোমেইন ৩০টি নোড ব্যবহার করলেই সেখানে সেগমেন্ট তৈরি করা হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
হাব
বাস টপােলজি ছাড়া আর সব টপােলজিতেই এমন একটি কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা রাখতে হয় যেখানে বিভিন্ন ওয়ার্কস্টেশন থেকে আসা ক্যাবলসমূহ যুক্ত হতে পারে। আপনি যদি সেই ক্যাবলের প্রান্তগুলিকে শােল্ডারিং করে যুক্ত করেন তাহলে এক ক্যাবলের সিগন্যাল অন্য সবগুলিতে প্রবাহিত হবে এবং নেটওয়ার্ক কাজ করবে না। এটি যাতে না ঘটে সেজন্য বিভিন্ন স্টেশন থেকে আসা ক্যাবলকে একটি কেন্দ্রীয় ডিভাইসের সাথে যুক্ত করা হয়। এই ডিভাইসকে বলা হয় হাব (hub) বা কনসেনট্রেটেড (concentrator)। হাব OSI রেফারেন্স মডেলের ফিজিক্যাল লেয়ারে কাজ করে। যে সিগন্যালই তার কাছে আসুক না কেন হাব সেটিকে ওই নেটওয়ার্কের বিভিন্ন সেগমেন্টে পাঠিয়ে দেবে। এটি কাজ করে ইলেকট্রিক সিগন্যাল নিয়ে নেটওয়ার্ক এড্রেস কিংবা নেটওয়ার্ক এডাপ্টারের ম্যাক এড্রেস নিয়ে হাবের মাথাব্যাথা নেই। হাব দেখতে একটি বাক্সের মতাে হয়ে থাকে এবং এতে বিভিন্ন ক্যাবল কানেকশন দেয়ার জন্য পাের্ট থাকে। এই পােটগুলিতে সাধারণত RJ-45 কানেক্টর ব্যবহৃত হয়। এই পােটে একটি করে টুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল RJ-45 মেল কনেস্তরের মাধ্যমে যুক্ত হতে পারে। এই হন্টেড পেয়ার ক্যাবল তখন কোনাে সার্ভার বা ওয়ার্কস্টেশনকে যুক্ত করতে পারে। UTP ক্যাবল ব্যবহার করে এমন প্রতিটি নেটওয়ার্কে অবশ্যই হাব ব্যবহার করতে হয়। হাবকে আমরা একাধিক পাের্টবিশিষ্ট একটি রিপিটার (repeater) হিসেবেও চিন্তা করতে পারি। কারণ এটি একটি ক্যাবল থেকে ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যাল পেলে সেটাকে এমপ্লিফাই করে অন্য সব ওয়ার্কস্টেশন পাঠায়। এই কাজটি ঘটে থাকে OSI মডেলের ফিজিক্যাল লেয়ারে। আকৃতি বা গঠন অনুসারে হাবকে আমরা দু’ভাগে ভাগ করতে পারি: চেসিস হাব (chassis hub) ও স্ট্যাকবল (stackable hub) হাব। এছাড়া এর কার্যপ্রণালীর উপর ভিত্তি করে একে তিনভাগে ভাগ করা যেতে পারে: নিষ্ক্রিয় হাব (passive hub), সক্রিয় হাব (active hub) এবং বুদ্ধিমান হাব (intelligent hub)। আমরা এখন এসব হাব সম্পর্কে জানব।(বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ডিভাইস)
চেসিস হাব
চেসিস হাব বেশ বড় আকৃতির বাক্সের মতাে। এটিকে সাধারণত কোন নেটওয়ার্ক র্যাকে রাখার দরকার পড়ে এবং সেই র্যাকে একে যুক্ত করার ব্যবস্থা থাকে। পিসিতে যেমন কার্ড যুক্ত করার ব্যবস্থা থাকে এখানেও তেমনি বিভিন্ন ক্যাবল সংযােগ দেয়ার সুযােগ থাকে। এসব স্লটে থাকে একাধিক RJ-45 কানেক্টর যার সাথে ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবলকে যুক্ত করা যেতে পারে। একটি চেসিস হাবে কয়টি ওয়ার্কস্টেশন যােগ করা যাবে তা নির্ভর করে চেসিস হাবে কয়টি কার্ড যুক্ত আছে এবং প্রতি কার্ডে কয়টি RJ-45 কানেক্টর আছে তার উপর। সাধারণত এসব কার্ডে চার থেকে চব্বিশটি কানেক্টর থাকে। চেসিস হাবে হাব কার্ড ছাড়াও অন্যান্য কাজের জন্য যেমন ব্রিজ, সুইচ কিংবা রাউটারের জন্য কার্ড লাগানো যেতে পারে।(বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ডিভাইস)
বড় ধরনের নেটওয়ার্কে চেসিস হাব ব্যবহার করতে পারেন। কারণ এতে একসাথে দুইশটি পর্যন্ত ওয়ার্কস্টেশন যােগ করা যায়। এতগুলি হােস্টের জন্য ভিন্ন ভিন্ন হাব ব্যবহার না করে একটি চেসিস হাব ব্যবহার করলে সুবিধা হবে এই যে একটি কেন্দ্রীয় স্থান থেকে আপনি পুরাে নেটওয়ার্কের কানেকশনগুলিকে মনিটরিঙের সুবিধা পাবেন। একটি মাত্র হাবে সমস্ত কানেকশন থাকছে বলে এটি অসুবিধাও সৃষ্টি করতে পারে। চেসিস হাব কোনাে কারণে অকেজো হয়ে গেলে এর সাথে যুক্ত সব স্টেশন কাজ করবে না। আবার অন্যান্য হাবে প্রতিটি পাের্টে লাইটের ব্যবস্থা থাকায় বােঝা যায় কখন কোন পাের্টে সিগন্যাল পরিবাহিত হচ্ছে। কিন্তু চেসিস হাবে এধরনের লাইট না থাকায় বােঝা যায় না কখন কোন পাের্টে সিগন্যাল পরিবাহিত হচ্ছে। তবে চেসিস হাবে অন্য কোনাে প্রটোকল এনালাইজার ব্যবহার করে বিভিন্ন পাের্টের অবস্থা মনিটর করা যেতে পারে। এছাড়া চেসিস হাবের অসুবিধা হলাে এর প্রতিযােগী স্ট্যাকাবল হাবের চেয়ে এর দাম বেশি। সে কারণে বেশিরভাগ নেটওয়ার্কেই স্ট্যাকাবল হাব ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
স্ট্যাকাবল হাব
স্ট্যাকবল হাব বেশ ছােট আকারের বাক্স। এগুলিতে সাধারণত ছয় থেকে চব্বিশটি পাের্ট থাকে। বেশিরভাগ হাবেই প্রতিটি পাের্টের সাথে লাইট সিগন্যালের ব্যবস্থা থাকে যাতে প্রতিটি পাের্টের কোনটিতে কখন ডাটা ট্রান্সমিট হচ্ছে তা বােঝা যায়। এতে সাধারণ একটি আপলিঙ্ক (uplink) পাের্ট থাকে যা ব্যবহার করে এর সাথে আরেকটি হাবের সংযােগ দেয়া যায়।
আমরা যেসব LAN দেখে থাকি তার বেশিরভাগই স্ট্যাকবল হাব ব্যবহার করে। কারণ এটি দামে কম, সুবিধাজনক। আপনি এ মুহূর্তে কম খরচে দশটি কম্পিউটার নিয়ে নেটওয়ার্ক গড়তে চাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে স্ট্যাকাবল হাব হবে আপনার জন্য সুবিধাজনক। দশটি ওয়ার্কস্টেশন এর জন্য আপনি বারাে পপাটের একটি হাব ব্যবহার করতে পারেন। তারপর ওয়ার্কস্টেশনের সংখ্যা বেড়ে গেলে আরেকটি হাব কিনতে পারেন। নূতন হাবকে পুরনাে হাবের সাথে যুক্ত করে দেয়া যেতে পারে। এভাবে সহজেই হাবের সংখ্যা বাড়িয়ে নেটওয়ার্ককে বর্ধিত করা যেতে পারে। এতে কোনাে একটি হাব নষ্ট হয়ে গেলে কেবল ওই হাবের সাথে যুক্ত ওয়ার্কস্টেশনগুলি নেটওয়ার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন হবে। অন্যান্য হাবের সাথে যুক্ত ওয়ার্কস্টেশনে সমস্যা হবে না। স্ট্যাকাবল হাবের এটি একটি বড় সুবিধা স্ট্যাকবল হাবে সবকটি হাব যে একই কনফিগারেশনের (পাের্ট বিশিষ্ট) কিংবা একই প্রস্তুতকারকের হতে হবে তা নয়। আপনি একাধিক প্রস্তুতকারকের একাধিক মডেলের হাব ব্যবহার করতে পারেন। এর ফলে যখনই কোনাে হাব নষ্ট হয়ে যাবে তখন খুব সহজেই সেটিকে বদলাতে পারবেন।
স্ট্যাকাবল হাবকে আবার দু’ভাগে ভাগ করা যেতে পারে: ম্যানেজড (managed) ও আনম্যানেজড (unmanaged)
ম্যানেজড স্ট্যাকবল হাব
এ ধরনের হবে বিশেষ সফটঅয়্যার ব্যবহার করে মনিটর করার ব্যবস্থা থাকে। এই সফটঅয়্যারের ফলে আপনি কোনাে ওয়ার্কস্টেশনে বসে হাবের বিভিন্ন পাের্টের অবস্থা, কোনটি কী পরিমাণ ডাটা ট্রান্সফার করছে, কোন পাের্ট কত ব্যস্ত থাকে, কোনাে পাের্টে অসুবিধা হচ্ছে কি না, ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। এধরনের হাবকে অনেক সময় ইনটেলিজেন্ট হাবও বলা হয়। কোনাে কোনাে ম্যানেজড হাবের সাথেই টার্মিনাল যােগ করা থাকে যেখান থেকে আপনি এসব পর্যবেক্ষণ করতে পারেন, আবার কোনােটি অন্য কম্পিউটার থেকে মনিটর করতে হয়। এই ধরনের হাব দরকার পড়ে মাঝারি বা বড় (১০০+ স্টেশন) নেটওয়ার্কের জন্য যেখানে হাবে কোনাে সমস্যা হয়েছে কি না তা দেখার জন্য হাবের কাছে যাওয়া অসুবিধাজনক হয়ে দাড়ায়।
আনম্যানেজড স্ট্যাকবল হাব
আনম্যানেজড হাবে কোনাে ম্যানেজমেন্ট সফটঅয়্যার সিস্টেম থাকে না। এখানে বিভিন্ন পাের্টের অবস্থা বােঝা যায় এর সাথে যুক্ত লাইট সিগন্যাল দেখে। কোনাে পোর্ট ভাল থাকলে সেটিতে সাধারনত সবুজ বাতি জ্বলে। ডাটা ট্রান্সমিট হওয়ার সময় এই বাতি জ্বলে এবং নেভে। অন্যদিকে কোনাে পোর্ট একটিভ থাকলে বা খারাপ থাকলে সেটি সাধারণত লাল রঙের দেখায়। এরকম হাবে কোনাে সমস্যা হয়েছে কি না তা দেখার জন্য আপনাকে হেটে হাবের কাছে যেতে হবে। নেটওয়ার্কে ওয়ার্কস্টেশন ও হাবের সংখ্যা বেশি হলে এটি ব্যবহার করা অসুবিধাজনক। তাই ছােট নেটওয়ার্কের জন্যই এধরনের আনম্যানেজড স্ট্যাকবল হাব বেশি ব্যবহৃত হয়।
নিক্রিয় বা প্যাসিভ হাব
একটি অ্যাসিড হাব কেবল নেটওয়ার্কের বিভিন্ন ওয়ার্কস্টেশনের সিগন্যাল একটি আরেকটির নিকট পাঠানাের করে। এটিতে কোনাে সিগন্যাল প্রসেসিং কিংবা রিজেনারেশন ব্যবস্থা নেই। সিগন্যাল আসছে তাই সবদিকে বিাহিত হচ্ছে। এটি সিগন্যালকে বুস্ট করে না বলে এ ধরনের হাব ব্যবহার করলে রিপিটারের সুবিধা পাওয়া আৰে না। ছােট নেটওয়ার্কের জন্য এটি উপযােগী হলেও মাঝারি বা বড় নেটওয়ার্কে ব্যবহার করলে অসুবিধা হতে পর নেটওয়ার্কের এক অংশের সিগন্যাল অন্য অংশে যেতে দূর্বল হয়ে পড়বে। একটি নেটওয়ার্কে সর্বাধিক র যে ক্যাবল ব্যবহার করা যায়, প্যাসিভ হাব ব্যবহার করা হলে সেই দূরত্ব প্রায় অর্ধেক হয়ে আসে। যদি একটি ক্যাবল সেগমেন্ট সর্বোচ্চ ৩০০ মিটারের জন্য নির্ভরযােগ্য সিগন্যাল ট্রান্সমিশন দেয় তাহলে প্যাসিভ হারে আছে ব্যবহারের ক্ষেত্রে সেটির দূরত্ব হওয়া উচিত ১৫০ মিটার। এর বেশি হলে নির্ভরযােগ্য সিগন্যাল ট্রান্সমিশন হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। প্যাসিত হবে একটি সিগন্যাল সকল কম্পিউটারের নিকট পৌছে।
সক্রিয় বা একটিভ হাব
প্যাসিভ হাবের মতােই এধরনের হাব। তবে এখানে প্রতিটি সিগন্যাল রিজেনারেট বা বুস্ট করা হয়। ফলে এটি রপিটারের কাজ করে। রিপিটারের কাজ করে বলে এখানে হাব থেকে স্টেশনের এবং হাব থেকে হাবের দূরত্ব। বেশি হতে পারে। এটি সিগন্যালকে এমপ্লিফাই করার সাথে সাথে এর সাথের নয়েজ বা অপ্রয়ােজনীয় সিগন্যালকে এমপ্লিফাই করে। রিপিটার এর কাজ করতে পারে বলে এগুলোর দাম প্যাসিভ হাবের চেয়ে বেশি। একটিভ হাব মাল্টি পোর্ট রিপিটার বলা হয়ে থাকে।
বুদ্ধিমান বা ইনটেলিজেন্ট হাব
একটিভ হাব কেবল সিগন্যাল রিজেনারেট করতে পারে কিন্তু সেসব সিগন্যাল ফিল্টারিং কিংবা প্রসেসিং করতে পারে না। ইনটেলিজেন্ট হাব বিভিন্ন সিগন্যাল প্রসেসিং ও প্রয়ােজনে ফিল্টারিং করতে পারে। বিভিন্ন সিগন্যাল পরীক্ষা করে সেই সিগন্যাল নির্দিষ্ট গন্তব্য কম্পিউটার নিকট পাঠিয়ে দিতে পারে ইনটেলিজেন্ট হাব। এর ফলে একটি সিগন্যাল সব কম্পিউটারে যায় না এবং নেটওয়ার্কে অযথা ট্রাফিক তৈরি করে না।
আপলিঙ্ক পাের্ট ও ক্রসওভার ক্যাবল
একটি হকে অন্য হাবের সাথে যুক্ত করার জন্য আপলি পাের্ট ব্যবহৃত হয়। একটি হাবের আপলিস্ক পাের্ট থেকে সংযোগ যাবে অন্য হাতের সাধারন পোর্টে। এটি করা না হলে সিগন্যাল ট্রান্সমিশন হবে না। যদি আপনি দুটি তাকে দুই আপলিঙ্ক পাের্টকে সরাসরি যুক্ত করতে চান তাহলে বিশেষ ধরনের ক্যাবল ব্যবহার করতে হবে, যাকে ল য় ক্রসগুভার ক্যাবল (crossover cable)। হাব ব্যবহার না করে দুটি ওয়ার্কস্টেশনকে UTP ক্যাবল দিয়ে যুক্ত করার জন্যও এই ক্রসওভার ক্যাবল ব্যবহার করা যায়।
একটি সাধারণ UTP ক্যাবলে চারটি তার ব্যবহৃত হয়- দুটি সিগন্যাল পাঠানাের জন্য, দুটি সিগন্যাল গ্রহণের না। এখানে উভয় প্রান্তের পিন সমূহ কিভাবে যুক্ত থাকে। ক্রসওভার ক্যাবল এই প্রেরণ ও গ্রহণকারী তারসমুহের অবস্থান বদলে দেয়া হয়। এই ক্যাবল বিভিন্ন ট্রাবলত্যটিঙের জন্যও ব্যবহার করতে পারেন। কোনাে কম্পিউটারের নেটওয়ার্ক এডাপ্টার ঠিকমতাে কাজ করছে কি না তা জানার জন্য আপনি একটি ভাল থাযাটেশনকে সন্দেহযুক্ত ওয়ার্কশ্টেশনের সাথে যুক্ত করতে পারেন ক্রসওভার ক্যাবল দিয়ে। এতে যদি সেই ওাস্টেশনের সাথে যােগাযােগ করা না যায় তাহলে বুঝবেন নেটওয়ার্ক এডাপ্টারে সমস্যা আছে।
কোনাে কোনাে হাবে এই পার্টি নরমাল পাের্ট হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। সেক্ষেত্রে এই পাের্টের পাশে একটি সুইচ লক্ষ্য করবেন। এই সুইচ অন অফ করার মাধ্যমে সেই পাের্টকে আপলিঙ্ক অথবা নরমাল পাের্ট বানাতে পারেন।
হাব ব্যবহারের সময় বিশেষ যে বিষয়গুলোর দিকে নজর রাখা দরকার তাহলাে:
- একটি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করার জন্য সর্বোচ্চ কয়টি হাব ব্যবহার করতে পারবেন তার একটি সীমা আছে। এটি নির্ভর করে টপােলজির উপর। বেশিরভাগ নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে আপনি সর্বোচ্চ চারটি হাব ব্যবহারের সুযোগ পাবেন।
- ভালো পারফরম্যান্সের জন্য যখনই পারেন একটি হাবকে আরেকটির সাথে যুক্ত না করে কোনাে সার্ভার নেটওয়ার্ক এডাপ্টারের সাথে যুক্ত করুন।
- হাবে যুক্ত হওয়া প্রতিটি সংযোগ লেভেল যুক্ত করুন। সেই লেবেলে স্পষ্টভাবে লিখে দিন সেই ক্যাবলটি কোন স্টেশন থেকে এসেছে। এর ফলে ট্রাবলশুটিং এর সুবিধা হবে।
- একটি ডাটা সিগন্যালকে যত বেশি হাবের মধ্য দিয়ে যেতে হবে তত সেই সিগন্যাল দূর্বল হয়ে যাবে। সে কারণে বেশি হাব থাকা মানে নেটওয়ার্কের গতি কমে যাওয়া।
রিপিটার
আমরা জানি বিভিন্ন মিডিয়ায় সিগন্যাল ট্রান্সমিশনের সময় এটেনুয়েশনের কারণে সেই সিগন্যাল ক্রমশ দূর্বল হতে থাকে। নির্দিষ্ট দূরত্ব অতিক্রম করার পর এটির অস্তিত্ত্বই লােপ পায়। অস্তিত্ত্ব লােপ পাওয়ার আগেই সিগন্যালকে এমপ্লিফাই বা আরাে বলবান করে তুলতে পারলে সেটি অনেক দূর অতিক্রম করতে পারে। যেমন ধরা যাক 10Base2 নেটওয়ার্কে থিন কোএক্সিয়াল ক্যাবলের একটি বাসের দৈর্ঘ্য হতে পারে ১৮৫ মিটার। আপনার নেটওয়ার্কে এর চেয়ে বেশি দৈর্ঘ্যের বাস ব্যবহার করলে সিগন্যাল ট্রান্সমিট হবে না। এরকম সিগন্যালকে এমপ্লিফাই করার জন্য ব্যবহৃত হয় রিপিটার (repeater)। ১৮৫ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করার আগেই আপনি একটি রিপিটার ব্যবহার করে সেই সিগন্যালকে এমপ্লিফাই করে দিলে সেটি আরাে ১৮৫ মিটার অতিক্রম করতে পারবে। এটি কাজ করে OSI রেফারেন্স মডেলের ফিজিক্যাল লেয়ারে।
রিপিটার দু’ধরনের: এমপ্লিফায়ার এবং সিগন্যাল রিজেনারেটি। এমপ্লিফায়ার পুরাে সিগন্যালকেই এমিপ্লফাই করে। এই সিগন্যালের মাঝে নয়েজ বা অপ্রয়ােজনীয় সিগন্যাল থাকলে সেটিও এমপ্লিফাই করবে এমিপ্লফায়ার ব্রিটি। ধানক্ষেতে সায় দিলেন, ধানের গাছও বাড়লাে আগাছাও বাড়লাে সমানতালে- এমনটিই ঘটে এমপ্লিফS] ব্রিপিটারের ক্ষেত্রে। আপনি চাচ্ছেন আগাছা বাদ যাক কেবল ফসল বেড়ে উঠুক, এরকম ক্ষেত্রে ব্যথায় পা ব্রেন সিগন্যাল রিজেনারেটিং রিপিটার। এটি সিগন্যালকে গ্রহণ করার পর সেটিকে পুনর্গঠন করে। এবং এখন থেকে নয়েজ বা অপ্রয়ােজনীয় সিগন্যাল বাদ দেয়। এর ফলে নেটওয়ার্কের পারফরম্যান্স ভালাে হয়। একটি নেটওয়ার্কে কয়টি রিপিটার ব্যবহার করা যাবে সে সম্পর্কে একটি বিশেষ নিয়ম আছে যাকে বলা হয় ৫- ৪ ৩ নিয়ম। এই নিয়মানুসারে একটি নেটওয়ার্কে পাঁচটি (৫) সেগমেন্ট চারটি (৪) রিপিটারের মাধ্যমে যুক্ত থাকতে পারে যেখানে মাত্র তিনটি (৩) সেগমেন্ট পপুলেটেড বা নােড বিশিষ্ট হতে পারবে।
ব্রিজ
ব্রিজ (bridge) এমন একটি ডিভাইস যা দিয়ে দুটি নেটওয়ার্ক সেগমেন্টকে যুক্ত করা যেতে পারে। এটি হাবের মতােই, তবে কার্যপ্রণালী ভিন্ন। এই ডিভাইসটি কাজ করে থাকে OSI রেফারেন্স মডেলের ডাটালিঙ্ক লেয়ারে। এটি ডাটালিঙ্ক লেয়ারে কাজ করে বলে এটি নেটয়ার্ক এডাপ্টারের OSI এড্রেস নিয়ে কাজ করতে পারে। OSI এড্রেসের উপর ভিত্তি করে এটি সিদ্ধান্ত নিতে পারে নেটওয়ার্কের কোন সেগমেন্টে সেই ডাটা প্যাকেটকে পাঠাতে হবে।
ব্রিজের চারটি প্রধান কাজ হলো:
- এটি প্রতিটি সেগমেন্টে বিভিন্ন ডিভাইসের হিসেব রাখার জন্য ব্রিজিং টেবিল তৈরি করে। এতে থাকে উভয় সেগমেন্ট এর বিভিন্ন ডিভাইসের MAC এড্রেস।
- কোনাে ডাটা প্যাকেটের MAC এড্রেস দেখে এটি সিদ্ধান্ত নিতে পারে এই প্যাকেটটিকে অন্য অংশে পাঠানোর দরকার আছে কি না। এই MAC এড্রেস যুক্ত হায়েস্ট যদি একই সেগমেন্টে থাকে তাহলে ব্রিজ সেই প্যাকেটকে সেগমেন্ট অতিক্রম করতে দেবে না। এই ফিল্টারিঙের ফলে অযথা নেটওয়ার্ক ট্রাফিক তৈরি হয় না।
- কোনাে ডাটা প্যাকেটের MAC এড্রেস পরীক্ষা করে যদি দেখে এটি অন্য অংশে আছে তাহলে ব্রিজ সেটিকে ওই অংশে পাঠিয়ে দেয়।
- এটি একটি নেটওয়ার্ককে কয়েকটি কলিশন ডােমেইনে বিভক্ত করে, ফলে নেটওয়ার্কে কলিশনের সংখ্যা হ্রাস পায়।
ব্রিজ এই পথ নির্বাচন এবং তাকে বিভিন্ন সেগমেন্টে পাঠানাের জন্য ব্যবহার করে স্প্যানিং ট্রি প্রটোকল (STP)। স্প্যানিং ট্রি প্রটোকল দুটি কাজ করে: প্রথমত, এটি প্রধান ব্রিজ বা রুটকে চিহ্নিত করে যেটি সকল ব্রিজিং সিদ্ধান্ত নেবে; দ্বিতীয়ত, এটি ব্রিজিং লুপ প্রতিহত করবে। চিত্র ৮.১০- এ একটি ব্রিজের ব্যবহার দেখানাে হলাে। এখানে সেগমেন্ট A থেকে একটি ডাটা প্যাকেট যদি 2B 21 ম্যাক এড্রেস যুক্ত ওয়ার্ক স্টেশনের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয় তাহলে সেই ডাটা প্যাকেটকে ব্রিজ অতিক্রম করতে। দেবে না। কারণ ওই ওয়ার্কস্টেশনটি একই সেগমেন্টে আছে। আবার B সেগমেন্টের কোনাে কম্পিউটার যদি একটি ডাটা প্যাকেট 23-A5 ম্যাক এড্রেসযুক্ত কম্পিউটারের উদ্দেশ্যে পাঠায় তাহলে ব্রিজ সেটিকে অতিক্রম করে A সেগমেন্টে যেতে দেবে। কারণ ব্রিজ তার ব্রিজিং টেবিল থেকে জানতে পারছে যে ওই MAC এড্রেসযুক্ত কম্পিউটারটি A সেগমেন্টে রয়েছে।
এখানে ব্রিজ কলিশন কমিয়ে দিলেও নেটওয়ার্কের পারফরম্যান্স ঠিক রাখার জন্য এর প্ল্যানিং সঠিকভাবে করা দরকার। চিত্র ৮.১০- এ যদি সেগমেন্ট A থেকে সবসময় সেগমেন্ট B এর কোনাে কম্পিউটারের সাথে যােগাযােগ করতে হয় তাহলে সেই ট্রাফিককে ব্রিজ অতিক্রম করতে হবে। এভাবে প্রতিটি কম্পিউটারই যদি অন্য সেগমেন্টের সাথে সচরাচর যােগাযােগ করে থাকে তাহলে ব্রিজ অতিমাত্রায় ব্যস্ত হয়ে যাবে এবং ব্রিজ ব্যবহারের পুরাে সুবিধা আমরা পাবাে না। তাই ব্রিজ ব্যবহারের আগে নির্ধারণ করতে হবে কোন স্থানে ব্রিজ বসানাে দরকার। নেটওয়ার্কে যেসব কম্পিউটারের মধ্যে সব সময় যােগাযােগরে দরকার পড়ে সেগুলিকে নিয়ে একসাথে সেগমেন্ট তৈরি করা দরকার। যেমন আপনার অফিসের একই ডিপার্টমেন্টের কম্পিউটারগুলি নিজেদের মধ্যে বেশি যােগাযােগ করবে তাই প্রতিটি ডিপার্টমেন্টকে নিয়ে ভিন্ন সেগমেন্ট তৈরি করতে পারেন। তারপর সেসব সেগমেন্টকে যােগ করা যেতে পারে ব্রিজ ব্যবহার করে।
ব্রিজ দু’প্রকার:
- ট্রান্সপ্যারেন্ট ব্রিজ – কোথায় ডাটা পাঠাতে হবে তা নির্ধারণের জন্য একটি টেবিল মেমরিতে সংরক্ষণ করে।
- সাের্স রাউটিং ব্রিজ – এতে ট্রান্সমিশনের পুরাে পথ বলে দিতে হয় এবং কোনপথে প্যাকেট পাঠাতে হবে সে সিদ্ধান্ত ব্রিজ নিজে নিতে পারে না। আইবিএম টোকেন রিং নেটওয়ার্ক এধরনের ব্রিজ ব্যবহার করে।
মনে রাখা দরকার যে ব্রিজ দিয়ে দুটি ভিন্ন আর্কিটেকচারের, যেমন ইথারনেট ও টোকেন- রিং, নেটওয়ার্ককে যুক্ত করা যায় না। কারণ আর্কিটেকচারভেদে হার্ডঅয়্যার এড্রেসিং ভিন্ন হয়। ইথারনেটে যে MAC এড্রেস, টোকেন রিঙে সেটি ভিন্ন হওয়ায় এ দুই ধরনের প্যাকেট থেকে ব্রিজ MAC এড্রেস ব্যবহার করতে পারে না। এরকম ভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্ককে যুক্ত করার জন্য বিশেষ ধরনের ব্রিজ ব্যবহার করা যেতে পারে যাকে বলা হয় ট্রান্সলেশন ব্রিজ।
কীভাবে ব্রিজ ব্যবহার করবেন তার একটি পুরনাে নিয়ম আছে যা ৮০- ২০ নামে পরিচিত। এই নিয়মানুসারে ব্রিজ এমনভাবে ব্যবহার করতে হবে যাতে নেটওয়ার্কের ৮০% ট্রাফিককে ব্রিজ অতিক্রম করতে না হয়, কেবল ২০% ট্রাফিক ব্রিজ অতিক্রম করে। ব্রিজ ব্যবহারের ফলে নেটওয়ার্কের পারফরম্যান্স যাতে অতিমাত্রায় কমে না যায় সেজন্য এই নিয়ম। প্রতিটি ফ্রেমের সাথে যুক্ত MAC এড্রেস পরীক্ষা করে সেই ফ্রেমকে কোনদিকে পাঠাবে সেই সিদ্ধান্ত নিতে হয় বলে ব্রিজ অতিক্রমের সময় কিছুটা সময় ব্যয় হয়, যদিও তা আমাদের নজরে পড়ে না। সব ট্রাফিক যদি ব্রিজ পার হতে চায় তাহলে সেই সামান্য বিলম্ব বেশ বড় আকার নিতে পারে। ব্রিজে এই বিলম্বকে বলা হয় ব্রিজ ল্যাটেন্সি (bridge latency)। ব্রিজ ল্যাটেন্সি যাতে মারাত্মকভাবে নেটওয়ার্কের গতিকে হ্রাস করতে না পারে সেজন্য ৮০- ২০ নিয়ম।
ব্রিজ ও প্রটোকল
কোন প্রটোকল ব্যবহার করা হচ্ছে তার উপর ব্রিজ নির্ভর করে না। আপনি TCP/IP, IPX/SPX কিংবা NetBEUI যাই ব্যবহার করুন না কেন ব্রিজ এদের জন্য কাজ করবে। ৮০২.৩ স্ট্যান্ডার্ড ব্যবহার করে কোনাে কমিউনিকেশন ঘটলে সেটা ব্রিজ ব্যবহারের যোগ্য। কোনাে কোনাে ব্রিজে ডাটা প্যাকেটের CRC বা সাইক্লিক রিডান্ড্যান্সি চেক সুবিধা থাকে। এটি অন করা থাকলে ব্রিজে প্রতিটি ফ্রেমের CRC চেক করা হয় এবং কোনাে ত্রুটি ধরা পড়লে সেটি রিট্রান্সমিট করতে বলা হয়। এর ফলে ত্রুটিযুক্ত ফ্রেম অন্য সেগমেন্টে না গিয়ে কেবল এক সেগমেন্টেই সীমাবদ্ধ থাকছে। ডাটা ট্রান্সমিশনে কোনাে অসুবিধা দেখা দিলে আপনি ব্রিজের এই ফিচার চালু করতে পারেন। আর অন্য সময়ে এই ফিচার অফ করে দেয়ার সুবিধাও সেসব ব্রিজে থাকে।
স্প্যানিং ট্রি প্রটোকল ও ব্রিজ লুপিং
একটি ব্রিজ আরেকটি ব্রিজের সাথে যােগাযােগ করতে সক্ষম। এর জন্য নিয়মকানুন সংজ্ঞায়িত করা আছে স্প্যানিং ট্রি প্রটোকলে। দুই বা ততােধিক ব্রিজ যখন সমান্তরালে যুক্ত হয় তখন ডিফল্ট পথ নিজে ডাইনামিক্যালি নির্ধারণের জন্য স্প্যানিং ট্রি প্রটোকল (spanning tree protocol) ব্যবহৃত হয়। একাধিক ব্রিজ ব্যবহার করা হলে একটি বিশেষ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে যাকে বলা হয় ব্রিজ লুপিং। এই ব্রিজ লুপিং প্রতিহত করে স্প্যানিং ট্রি প্রটোকল। স্প্যানিং ট্রি সম্পর্কে জানার আগে চলুন দেখা যাক ব্রিজ লুপিং কী ও কীভাবে ঘটে।
এখানে দুটি ব্রিজ একটি আরেকটির সমান্তরালে ব্যবহৃত হয়েছে। যদি সুকান্ত একটি মেসেজ পাঠায় শ্রীকান্তের কাছে তাহলে এই দুই ব্রিজই সেই ফ্রেম পরীক্ষা করে দেখবে এবং বুঝতে পারবে না শ্রীকান্ত কোন সেগমেন্টে আছে। বুঝতে না পারলে ব্রিজ ডিফল্ট হিসেবে সেই ফ্রেমকে অন্য সেগমেন্টে পাঠিয়ে দেয়। এখানেও তাই করা হবে। তারপর দুই ব্রিজই তাদের ব্রিজিং টেবিলে এন্ট্রি দেবে যে শ্রীকান্ত খসেগমেন্টে আছে।
দুই ব্রিজের পাঠানাে ফ্রেম খ সেগমেন্ট থেকে যখন ফেরত আসবে তখন দুই ব্রিজই মনে করবে যে সুকান্ত সেই ফ্রেম আবার নূতন করে পাঠাচ্ছে। শ্রীকান্ত কোনদিকে আছে সেটি বুঝতে না পেরে দুই ব্রিজই সেই ফ্রেমকে ক সেগমেন্টে পাঠিয়ে দেবে। এবারে দুই ব্রিজই ধরে নেবে যে সুকান্ত এখন খ সেগমেন্টে এবং সে অনুসারেই তারা ব্রিজিং টেবিলে এন্ট্রি দেবে।
এ স্থানে এসে আমাদের অবস্থা আরাে খারাপ। ক সেগমেন্টে প্রথমে একটি ফ্রেম পাঠানাে হয়েছিল, এখন সেখানে হয়েছে তিনটি। একটি সুকান্তের পাঠানাে আসল ফ্রেম, আর দুইটি দুই ব্রিজের পাঠানাে। তাহলে দেখা যাচ্ছে। কালশন ডােমেইনে ট্রাফিক কমানাের চেয়ে এই দুই ব্রিজ সেটিকে তিনগুণ করে দিয়েছে। তারপর দুই ব্রিজ তাদের ব্রিজিং টেবিলে এন্ট্রি দিয়েছে যে সুকান্ত খ সেগমেন্টে আছে। খ সেগমেন্ট থেকে কেউ সুকান্তের সাথে যােগাযােগ করতে চাইলে দুই ব্রিজের কেউই সেই ফ্রেমকে অতিক্রম করতে দেবে না। কারণ তারা দেখছে সুকান্ত একই সেগমেন্ট খ- তেই আছে। ফলে খ সেগমেন্টের কেউ সুকান্তের সাথে যােগাযােগ করতে পারবে না। এরকম অবস্থায় আসার পর ব্রিজের কাজ থেমে থাকে না। তারা আবার সেই ফ্রেমকে খ সেগমেন্টে পাঠিয়ে দেয়, ওখান থেকে আবার ক সেগমেন্টে ফেরত আসে। এভাবে এ খেলা চলতে থাকে। এ খেলা অনন্তকাল ধরে চলতে থাকবে যদি না পিডিবি বদৌলতে লোডশেডিং কিংবা অন্য কোনো কারণে ব্রিজের পাওয়ার সাপ্লাই বন্ধ করা হয়। এই অনন্তকালের খেলাকে বলা হয় কাউন্ট অব ইনফিনিটি (count of infinity)। এখানে আমরা এক সুকান্ত আর এক শ্রীকান্ত বাবুর মাঝে চিঠি চালাচালির ব্যাপার দেখলাম। আপনার নেটওয়ার্কে এরকম আরো কয়েকজন যদি মেসেজ পাঠাতে থাকে, আর আল্লাহর রহমতে আরাে কয়েকটি ব্রিজ এরকম থাকে তাহলে কী হবে চিন্তা করুন!
এ রকম লুপিং থেকে রেহাই দেয়ার জন্য আছে স্প্যানিং ট্রি (spanning tree) প্রটোকল। স্প্যানিং ট্রি প্রটোকল ব্যবহার করা হলে প্রতিটি ব্রিজ অন্য ব্রিজ সম্পর্কে জানবে এবং তাদেরকে কখন কাজ করতে হবে তাও প্রত্যেকের জানা থাকবে। কোনাে ব্রিজকে স্প্যানিং ট্রি প্রটোকল ব্যবহারের জন্য কনফিগার করা হলে এটি স্টার্ট হওয়ার সময় একটি বিশেষ মেইনটেন্যান্স ফ্রেম নেটওয়ার্কে পাঠাবে। এই ফ্রেমকে বলা হয় ব্রিজ প্রটোকল ডাটা ইউনিট (BPDU)। এই ফ্রেমে ওই ব্রিজের জন্য একটি আইডি নম্বর থাকে এবং ফ্রেমটি প্রতিটি পাের্টে পাঠানাে হয়। এই আইডি নম্বরটি নেটওয়ার্ক এডমিনিস্ট্রেটর নির্ধারণ করে দেয় এবং MAC এড্রেসের ওপর ভিত্তি করে হতে পারে। আগের উদাহরণে স্প্যানিং ট্রি প্রটোকল ব্যবহার করা হলে উভয় ব্রিজ শুরুতে BPDU পাঠাবে। এর ফলে প্রতিটি ব্রিজই অন্যের কাছ থেকে একটি করে BPDU পাবে। এরপর তারা তাদের আইডি তুলনা করে দেখবে। সবচেয়ে ছােট আইডি যে ব্রিজের সেই দায়িত্ব পাবে একটিভ ব্রিজ হিসেবে কাজ করার জন্য। অন্যান্য ব্রিজ তখন স্ট্যান্ডবাই অবস্থায় থাকবে। এখন কোনাে ফ্রেম নেটওয়ার্কে পাঠানাে হলে সেই ফ্রেমকে ব্রিজিং করার দায়িত্ব পালন করবে একটিভ ব্রিজ, অন্যরা এ ব্যাপারে মাথা ঘামাতে আসবে না। তবে হ্যা, স্ট্যান্ডবাই মনিটররা যদি দেখে একটিভ মনিটর বেশ কিছুক্ষণ যাবৎ ব্রিজিঙের কাজ অর্থাৎ ফ্রেম পাস করছে না তাহলে দেখবে একটিভ ব্রিজ আসলে ‘একটিভ’ আছে কি না। না থাকলে স্ট্যান্ডবাই ব্রিজ গুলোর মধ্যকার সর্বনিম্ন আইডিযুক্ত ব্রিজ একটিভ ব্রিজ হিসেবে কাজ করবে। এখানে একসাথে কেবল একটিমাত্র ব্রিজ কাজ করতে পারছে বলে লুপিঙের সম্ভাবনা থাকছে না।
একটিভ ব্রিজ নষ্ট হয়ে গেলে অন্য ব্রিজ এত তাড়াতাড়ি একটিভ হয়ে যায় যে আপনি বুঝতে পারবেন না আগের ব্রিজ এখন কাজ করছে না, তার বদলে অন্যজন কাজ করছে। এটি বুঝতে হলে আপনাকে মনিটরিং টুলস বা ডিভাইস ব্যবহার করতে হবে।
সুইচ
সুইচ (Switch) আসলে একটি একাধিক পাের্টবিশিষ্ট ব্রিজ। এটি OSI রেফারেন্স মডেলের ডাটালিঙ্ক লেয়ারে কাজ করে। ইথারনেট, টোকেন- রিং, ফিডি, এটিএম, ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্কের জন্য ভিন্ন ভিন্ন সুইচ রয়েছে। কোনাে ডাটা ফ্রেম সুইচের নিকট আসলে সুইচ সেই ফ্রেমের গন্তব্য MAC এড্রেস দেখে এর নির্দিষ্ট পােটে সেই মেয়েকে পাঠিয়ে দিতে পারে। একটি সুইচ এর সাথে যুক্ত সকল নােডের ম্যাক এড্রেসের তালিকা সংরক্ষণ করে। এর ফলে কোন ডাটা ফ্রেম আসলে সেটা কি এর সাথে যুক্ত নির্দিষ্ট নেটওয়ার্কে পাঠিয়ে দিতে পারে সুইচ। সুইচ ব্যবহারের মাধ্যমে একটি নেটওয়ার্কে একাধিক কলিশন ডোমেইন বিভক্ত করা হয়।
বর্তমানে অনেক সুইচের দাম হাবের দামের সমান হওয়ায় নেটওয়ার্কে এটির ব্যবহার বেড়েছে। হাব কলিশন কমানাের ব্যাপারে কোনাে সাহায্য করে না, কিন্তু সুইচ করে। সে কারণে নেটওয়ার্ক এডমিনিস্ট্রেটরদের নিকট সুইচ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কোনাে কোনাে সুইচ একই পাের্টে একাধিক ম্যাক এড্রেস সাপাের্ট করে। তার মানে আপনি কয়েকটি নেটওয়ার্ক সেগমেন্টকে যুক্ত করতে পারেন সুইচ দিয়ে। পাের্ট প্রতি একটিমাত্র ম্যাক এড্রেস সাপাের্ট করে এমন সুইচ না কেনাই ভালাে। কারণ এতে আপনি কোনাে হাব ব্যবহার করতে পারবেন না। তবে এ ধরনের সুইচ এর সুবিধা হলে প্রতি পোর্টে একটিমাত্র ওয়ার্কস্টেশন যুক্ত থাকায় কোনাে কলিশনের সম্ভাবনাই থাকছে না। সুইচ একটির সিগন্যাল থেকে আরেকটির সিগন্যালকে পৃথক করে দিচ্ছে। এর ফলে অন্যান্য ওয়ার্কস্টেশন যখনই সিগন্যাল পাঠাতে চায় তখনই তারা মিডিয়া ফ্রি পায়।(বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ডিভাইস)
একটি নেটওয়ার্কের গতি ১০ এমবিপিএস হলেও এখানে সুইচ ব্যবহারের মাধ্যমে এর গতি প্রায় কয়েকগুন হয়ে যতে পারে। যদি ছয়টি কম্পিউটার একটি সুইচের মাধ্যমে যুক্ত করা হয় তাহলে যেহেতু তিনটি কম্পিউটার প্রায় একইসাথে ডাটা ট্রান্সমিট করতে পারে তাই নেটওয়ার্কের গতি হয়ে যায় ৩০ এমবিপিএস। এখানে প্রতি দুটি উভাইস নিয়ে একটি কলিশন ডােমেইন গড়ে উঠছে বলেই এটি সম্ভব। ইচসমূহ কিভাবে কাজ করে: কাট- থ্রি মেড (cut through mode) এবং স্টোর- এন্ড- ফরােয়ার্ড মােড (store ad-forward mode)। এদুটি মোড সম্পর্কে জানব এখন।
কাট -থ্রো কোড সুইচিং
কাট থ্রো মােড় অপারেশনে কোন সুইচ এর নিকট ডাটা ফ্রেমের ১৪ বাইট আসার সাথে সাথেই এটি সিদ্ধান্ত নিতে পারে কোন পাের্টে সেই ফ্রেমকে পাঠাতে হবে। তারপর পুরাে ফ্রেম আসলে সেটি সাথে সাথে চলে যাবে ওই পাের্টে। এর ফলে ট্রান্সমিশন খুব দ্রুত হয়, পুরাে ফ্রেম আসার জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। বিভিন্ন গতির নেটওয়ার্ক সেগমেন্টে কাট- থ্রে মােড সুইচিং কিছু অসুবিধার সৃষ্টি করতে পারে। যেমন ধরা যাক ১০ এমবিপিএস ও ১০০ এমবিপিএস গতির দুই সেগমেন্টকে একটি সুইচ দিয়ে যুক্ত করা হলাে। ১০ এমবিপিএস সেগমেন্ট থেকে যখনই কোনাে ডাটা ট্রান্সমিট করা হবে তখন সেসব ফ্রেমের হেডার অংশ আগেই ১০০ এমবিপিএস সেগমেন্টে চলে যাবে। এরপর ফ্রেমের বাকি অংশ পাওয়ার জন্য ১০০ এমবিপিএস সেগমেন্ট অপেক্ষা করবে। এর ফলে দুই সেগমেন্টের কাজে সিনক্রোনাইজেশন থাকবে না। তেমনি ১০০ এমবিপিএস সেগমেন্ট থেকে ১০ এমবিপিএস সেগমেন্টে ডাটা পাঠানাের সময় ফ্রেমগুলি সুইচে এসে জমা হয়ে থাকবে।
স্টোর -এন্ড ফরোয়ার্ড মেড সুইচিং
স্টোর- এন্ড- ফরােয়ার্ড (store-and-forward) মােড সুইচিঙে পুরাে ডাটা ফ্রেম পাওয়ার পর সেটি পড়ে সুইচ সিদ্ধান্ত নেয় সেই ফ্রেমকে কোন পাের্টে পাঠাতে হবে। এতে কিছু সময় লাগলেও এটি অন্যদিক দিয়ে সুবিধাজনক ব্রিজের মতো এ ধরনের সুইচ CRC বা সাইক্লিক রিডান্ডেন্সি চেক করতে পারে। যদি দেখে কোনাে ফ্রেম। ত্রুটিযুক্ত তাহলে সুইচ সেটিকে পাস না করে উৎস কম্পিউটারকে রিট্রান্সমিট করতে বলে। ফলে ত্রুটিযুক্ত ফ্রেম সুইচ অতিক্রম করে না। কাট- থ্রে মােড সুইচিঙে আগেই ফ্রেমকে অতিক্রম করতে দেয়া হয় বলে সেখানে CRC চেক সম্ভব নয়। পুরাে ফ্রেম সুইচে এসে জমা হয় বলে ন্টোর- এন্ড- ফরােয়ার্ড মােড সুইচিঙে ভিন্ন ভিন্ন গতিবিশিষ্ট সেগমেন্ট কি যুক্ত করা হলে কোন অসুবিধা হয় না।
ভার্চুয়াল লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক
দিন দিন সুইচের ব্যবহার বাড়ার সাথে সাথে এর নানারকম সুবিধা বেরিয়ে আসছে। এরকমই একটি সুবিধা হলাে ভাচুয়াল ল্যান বা VLAN । VLAN হলাে সুইচ ব্যবহার করে একটি ল্যানকে কয়েকটি অংশে বিভক্ত করা যাতে সেই অংশকে এক একটি ভিন্ন LAN বলে প্রতীয়মান হয়। একই ডিভাইস ব্যবহার করে কয়েকটি ব্রডকাস্ট ডােমেইন তৈরি করার জন্য VLAN ব্যবহৃত হয়। আমরা আগেই জেনেছি যে একটি সুইচের বিভিন্ন পাের্ট থাকে ভিন্ন ভিন্ন কলিশন ডােমেইনে। VLAN-এ কম্পিউটারসমূহকে গ্রুপ করা যেতে পারে লেয়ার ২ MAC এড্রেস কিংবা লেয়ার ৩ নেটওয়াক এড্রেস ব্যবহার করে। VLAN এর জন্য ভিন্ন স্পেসিফিকেশন রয়েছে (IEEE 802.1P ও 802.1Q) যাতে VLAN-সমূহের মাঝে রাউটার ব্যবহারের পদ্ধতি বর্ণনা করা আছে। চিত্র ৮.১২-এ একটি VLAN দেখানাে হলাে। এখানে বিভিন্ন ফ্লোরে অবস্থিত ও ভিন্ন ভিন্ন সুইচ এর সাথে যুক্ত কম্পিউটার সমূহ এক একটি ভার্চুয়াল LAN বানানো হয়েছে।(বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ডিভাইস)
রাউটার
এক নেটওয়ার্ক থেকে আরেক নেটওয়ার্কে ডাটা পাঠানাের পদ্ধতিকে বলা হয় রাউটিং (routing)। আর রাউটিঙের জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস হলাে রাউটার (router)। এটি OSI রেফারেন্স মডেলের নেটওয়ার্ক লেয়ারে কাজ করে। কয়েকটি ভিন্ন নেটওয়ার্ককে যুক্ত করার জন্য এ ডিভাইস ব্যবহার করা হয়। এটি লােকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক, মেট্রোপলিটান এরিয়া নেটওয়ার্ক ও ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক এনভায়রনমেন্টে কাজ করে। এটি ব্যবহার করা হলে আপনি আপনার নেটওয়ার্ক ও আপনার নেটওয়ার্কের বাইরের রিসাের্সের সাথে সংযােগ গড়তে পারবেন। নেটওয়ার্কের বাইরের কোনাে নেটওয়ার্কের সাথে সংযােগ গড়ার জন্য এটি উন্মুক্ত সংক্ষিপ্ততম পথ (Open Shortest Path) প্রথম ব্যবহার করে। এই ডিভাইসটি অন্য নেটওয়ার্কের সাথে সংযােগ গড়ার জন্য নেটওয়ার্ক এড্রেস (TCP/IP ব্যবহার করা হলে এটি হবে IP এড্রেস) ব্যবহার করে সংক্ষিপ্ততম পথটি বেছে নেয়। ভিন্ন ধরনের টপােলজির নেটওয়ার্ককে যুক্ত করার জন্য রাউটার ব্যবহৃত হতে পারে। যেমন ধরা যাক ইথারনেট ও টোকেন রিং নেটওয়ার্ককে আমরা যুক্ত করতে পারি রাউটার ব্যবহার করে। এক্ষেত্রে দুই নেটওয়ার্কের ভিন্নধর্মী ফ্রেম ফরম্যাটে পরিবর্তনের কাজ রাউটার করে থাকে। তবে কোন কোন ডাটা প্যাকেটকে রাউটারের মধ্য দিয়ে পাঠানাে যাবে তা নির্ভর করে ব্যবহৃত প্রটোকলের উপর। সব প্রটোকল রাউটেবল নয়। যেসব প্রটোকলের ক্ষেত্রে রাউটিং সম্ভব সেগুলো বলা হয় রাউটিং প্রটোকল (routed protocol)। এরকম কিছু প্রটোকল হলাে TCP/IP, IPX/SPX, AppleTalk, DECNet, ইত্যাদি। মাইক্রোসফটের তৈরি সহজ একটি প্রটোকল NetBEUI রাউটেবল নয়।(বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ডিভাইস)
রাউটার হতে পারে ভিন্ন কোনাে ডিভাইস অথবা কোনাে কম্পিউটারও রাউটার হিসেবে কাজ করতে পারে। সিসকো সিস্টেমসের প্রস্ততকৃত বিভিন্ন মডেলের রাউটার ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এসব রাউটারের সাথে বিভিন্ন নেটওয়ার্ক কে যুক্ত করার জন্য কয়েকটি ইন্টারফেস থাকে। সেই সাথে এটিকে কনফিগার করার জন্য থাকে একটি টার্মিনাল। সিসকো রাউটার কনফিগার করার জন্য এর সাথে থাকে সিসকো ইন্টারনেটওয়ার্ক অপারেটিং সিস্টেম (IOS)। হার্ডঅয়্যার রাউটার ছাড়া মাল্টিহােন্ড উইন্ডােজ এনটি/২০০০/২০০৩/২০০৮ সার্ভার ও লিনাক্স কম্পিউটারকে রাউটার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। কোনাে সার্ভারের সাথে দুটি নেটওয়ার্ক এডাপ্টার দুই নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত থাকলে সেটিকে বলা হয় মাল্টিহােল্ড সিস্টেম। মাল্টিহােল্ড উইন্ডােজ এনটি সার্ভার প্রধানত স্ট্যাটিক সার্ভার হিসেবে কাজ করে। তবে এতে রাউটিং ইনফরমেশন প্রটোকল (RIP) এবং ওপেন শর্টেস্ট পাথ ফার্স্ট (OSPF) প্রটোকল ব্যবহার করে উইন্ডােজ এনটি/২০০০/২০০৩/২০০৮ সার্ভারকে ডাইনামিক রাউটার হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
রাউটারের দুটি প্রধান কাজ হলাে: কোন পথ দিয়ে আরেকটি নেটওয়ার্কে পৌছা যাবে তা নির্ধারণ এবং আবিষ্কৃত সেই পথের তথ্য অন্য রাউটারকে জানিয়ে দেয়া। কোন পথ দিয়ে অন্য নেটওয়ার্কে ডাটা পাঠানাে হবে তা নির্ধারণের জন্য রাউটার দু’ধরনের রাউটিং পদ্ধতি ব্যবহার করে: স্ট্যাটিক রাউটিং ও ডাইনামিক রাউটিং। যে রাউটিং পদ্ধতিই ব্যবহার করুক না কেন এটি আবিষ্কৃত বিভিন্ন পথের তথ্য জমা রাখে রাউটিং টেবিলে। এই সারণির তথ্য অন্যদের সাথে শেয়ার করতে পারে। যখন অন্য কোন নেটওয়ার্কে ডাটা পাঠানাের দরকার হয় তখন রাউটার দেখে নেয় সে নেটওয়ার্কে পৌঁছার জন্য রাউটিং টেবিলে কোনাে পথ উল্লেখ করা আছে কি না। রাউটিং টেবিলে হয়তাে কয়েকটি পথ পেতে পারে। এর মধ্যে কোনটি সে বেছে নেবে তা নির্ধারিত হয় বেশ কয়েকটি নিয়ামকের উপর। সাধারণত প্রতিটি পথের জন্য একটি করে আপেক্ষিক মান দেয়া হয় যাকে বলা হয় কস্ট (cost)। কোন ধরনের রাউটিং প্রটোকল ব্যবহৃত হচ্ছে তার উপর নির্ভর করে নির্ধারণ করা হয় এই কস্ট। যে পথের কস্ট সবচেয়ে কম রাউটার সেই পথই ব্যবহার করবে ডাটা প্যাকেট পাঠানাের জন্য।(বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ডিভাইস)
আপনাকে ধানমন্ডি থেকে গুলিস্তান যেতে বলা হলো। সেখান থেকে আপনি কমপক্ষে দশটি পথ দিয়ে গুলিস্তান পৌঁছুতে পারেন। কোন পথটি আপনি বেছে নেবেন? যেটিতে কম খরচ হবে, যেটি দিয়ে শীঘ্রই পৌছুতে পারবেন, ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে আপনি একটি পথ বেছে নিতে পারেন। কখনও আপনার নিকট খরচটি প্রধান নিয়ামক হতে পারে আবার কখনো বা সময়টা হতে পারে প্রধান নিয়ামক। রাউটিং প্রটোকলের ক্ষেত্রেও এভাবেই কষ্ট নির্ধারিত হয়। সাতটি ভিন্ন নেটওয়ার্ক রাউটারের মাধ্যমে যুক্ত আছে এখানে দেখা যাচ্ছে এক নেটওয়ার্ক থেকে অন্য নেটওয়ার্কে যাওয়ার অনেক পথ আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে কম দূরত্বের এবং কম খরচের পথটিই বেছে নেবে রাউটার। যদি নেটওয়ার্ক ১ থেকে কোন ডাটা নেটওয়ার্ক ৭ এ পাঠানাে হয় তাহলে সেটি সরাসরি নেটওয়ার্ক ১ থেকে নেটওয়ার্ক ৭ এ যাবে। যদিও এটি অন্যভাবে যেতে পারতাে। যদি নেটওয়ার্ক ১ থেকে নেটওয়ার্ক ২ এর কানেকশন কোনাে কারণে নষ্ট থাকে তাহলে রাউটার যে পথে সেটিকে পাঠাবে সেটি হলাে নেটওয়ার্ক ১ => নেটওয়ার্ক ৪ => নেটওয়ার্ক ৭। কারণ এটিই কার্যকর পথগুলাের মধ্যে সংক্ষিপ্ততম পথ।
ব্রাউটার
রাউটার ও ব্রিজের সমন্বয় হলাে ব্রাউটার (brouter)। এটি একই সাথে ব্রিজ এবং রাউটারের কাজ করতে পারে। একটি নেটওয়ার্কে কয়েক ধরনের প্রটোকল ব্যবহার করা হলে সেখানে ব্রাউটার উপযােগী। যেসব প্রটোকল রাউটেবল সেগুলিকে ব্রাউজার রাউট করবে, আর যে গুলো রাউটেবল না সেগুলো ব্রিজ করবে। সুইচের মতােই ব্রাউটারকেও কনফিগার করে দেয়া যায় কোন কোন প্রটোকলকে ব্রিজ করবে। যেসব প্রটোকল রাভটেবল না, যেমন NetBEUL, সেগুলিকে ব্রিজ করার জন্য কনফিগার করা যেতে পারে। এই ব্রিজ কাজ করবে OSI রেফারেন্স মডেল ডাটা লিঙ্ক লেয়ারে। যেসব প্রটোকল রাউটেবল সেগুলিকে ব্রাউজার আপনি আপনি রাউটিং করবে। এই রাউটিং ঘটে OSI রেফারেন্স মডেলের নেটওয়ার্ক লেয়ারে। তাহলে দেখা যাচ্ছে ব্রাউটার একই সাথে লেয়ার ২ (Datalink) ও লেয়ার ৩ (Network) এ কাজ করে। চিত্র ৮.১৪-এ ওয়ার্কস্টেশন A একটি ডাটা প্যাকেট পাঠাচ্ছে ওয়ার্কস্টেশন E এর উদ্দেশ্যে। ওয়ার্কস্টেশন A নন-রাউটেবল প্রটোকল NetBEUI ব্যবহার করছে তাই ব্রাউটার এটিকে ব্রিজিঙের মাধ্যমে ওয়ার্কস্টেশন E এর নিকট পাঠান। একই ওয়ার্ক স্টেশনের উদ্দেশ্যে আরেকটি ওয়ার্কস্টেশন E ডাটা প্যাকেট পাঠাতে TCP/IP প্রটোকল ব্যবহার করলে ব্রাউটার সেই প্যাকেটকে গন্তব্যে পৌঁছাবে রাউটিঙের মাধ্যমে। ব্রাউজার একসাথে ব্রিজিং টেবিলে প্রতিটি ওয়ার্কস্টেশন MAC এড্রেস এবং রাউটিং টেবিলে এর বিভিন্ন ইন্টারফেসের সাথে যুক্ত নেটওয়ার্কসমূহের নেটওয়ার্ক এড্রেস সংরক্ষণ করে।(বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ডিভাইস)
বলা হচ্ছে ব্রাউটার একবার ব্রিজিং করে আরেকবার করে রাউটিং। ব্রাউটারের এই দুই ভূমিকা বােঝার জন্য আমরা এখন দেখব ব্রিজ ও রাউটারের কাজের মধ্যে পার্থক্য কী।
ব্রিজ | ব্রাউটার |
সকল পােটের একই নেটওয়াক এড্রেস ব্যবহার করে। | প্রতিটি পাের্টের জন্য ভিন্ন নেটওয়ার্ক এড্রেস ব্যবহার করে। |
ম্যাক এড্রেস এর উপর ভিত্তি করে ব্রিজিং টেবিল গড়ে তােলে। | নেটওয়ার্ক এড্রেস এর উপর ভিত্তি করে রাউটিং টেবিল গড়ে তােলে। |
ব্রডকাস্ট ট্রাফিক অতিক্রম করতে দেয় । | ব্রডকাস্ট ট্রাফিক অতিক্রম করতে দেয় না |
অজানা ঠিকানার ডাটা প্যাকেট কে অতিক্রম করতে দেয়। | অজানা ঠিকানার ডাটা প্যাকেটের অতিক্রম করতে দেয় না। |
ডাটা ফ্রেমে কোনো পরিবর্তন আনে না। | ডাটা ফ্রেমে নূতন হেডার যােগ করে। |
কেবল ফ্রেমের হেডার দেখেই তাকে নির্দিষ্ট পাের্টে পাঠিয়ে দিতে পারে। | ট্রাফিককে অন্য প্রান্তে পাঠানাের আগে ডাটা ফ্রেমকে অবশ্যই রাউটার পৌঁছাতে হবে । |
ব্রিজ কাজ করে লেয়ার ২ বা ডাটা লিঙ্ক লেয়ারে | রাউটার কাজ করে লেয়ার ৩ বা নেটওয়ার্ক লেয়ারে |
গেটওয়ে
গেটওয়ে (gateway) হলো এমন ধরনের ডিভাইস যেগুলো ভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্ক সমূহকে যুক্ত করার জন্য ব্যবহৃত হয়। রাউটার, ব্রিজ, হাব, সুইচ ইত্যাদি ডিভাইস প্রটোকল ট্রান্সলেশনের সুবিধা দেয় না, কিন্তু গেটওয়ে এই সুবিধা দেয়। কোন ধরনের ট্রান্সলেশন সুবিধা দিচ্ছে তার উপর ভিত্তি করে এটি OSI রেফারেন্স মডেলের সকল স্তরে কাজ করতে পারে। তবে বেশিরভাগ গেটওয়ের কাজই ঘটে থাকে OSI মডেলের উপরের স্তর অর্থাৎ এপ্লিকেশন, প্রেজেন্টেশন, সেশন ও ট্রান্সপোর্ট লেয়ারে। কোন ধরনের কাজ করছে তার উপর ভিত্তি করে গেটওয়েকে কয়েক প্রকারে ভাগ করা যেতে পারে। এর মধ্যে অন্যতম হলাে এড্রেস গেটওয়ে, প্রটোকল গেটওয়ে, এপ্লিকেশন গেটওয়ে, ইত্যাদি। (বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ডিভাইস)
ভিন্ন নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত হওয়ার সময় এটি প্রটোকল ট্রান্সলেশনের কাজ করে থাকে। যেমন আইবিএম মেইনফ্রেম কম্পিউটারের সাথে সংযােগ গড়ার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে SNA সার্ভার, যা মাইক্রোসফট ব্যাকঅফিস সার্ভারের একটি অংশ। আইবিএম নেটওয়ার্ক যেহেতু সিস্টেমস নেটওয়ার্ক আর্কিটেকচার বা SNA প্রটোকল ব্যবহার করে তাই এর সাথে। TCP/IP নেটওয়ার্ক যুক্ত হতে পারবে না। এর মাঝে SNA সার্ভারকে গেটওয়ে হিসেবে রাখলে সেটি দুই নেটওয়ার্কের ভাটাকে দু’জনের কাছে বোধগম্য করে তুলবে। মনে রাখবেন, সচরাচর গেটওয়ে শব্দটি ব্যবহার করে অনেক কিছুই বােঝানাে হয়ে থাকে। কেউ কেউ গেটওয়ে বলতে রাউটার কিংবা ব্রিজকেও বুঝিয়ে থাকেন। আসলে তা নয়। ট্রান্সলেশন বা দোভাষীর কাজ যে করবে তাকেই বলতে পারেন গেটওয়ে।
সারকথা
নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত বিভিন্ন ডিভাইস ও সেগুলির কার্যপ্রণালী সম্পর্কে এ অধ্যায়ে আলােচনা করা হয়েছে। এসব ডিভাইসের মধ্যে কিছু আছে যা নেটওয়ার্ক তৈরির জন্য অবশ্যই দরকার, যেমন- নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড, হাব। আবার কিছু ডিভাইস আছে যেগুলি নেটওয়ার্ককে বর্ধিত করার কাজে ব্যবহৃত হয়। এরকম কিছু ডিভাইস হলাে রিপিটার, হাব, ব্রিজ, রাউটার এবং গেটওয়ে। এসব ডিভাইসের কার্যপ্রণালী সম্পর্কে ভাল ধারণা থাকা দরকার।