নেটওয়ার্ক ও টপােলজি
(নেটওয়ার্ক ও টপােলজি) আমরা বায়োলজি জুওলজি ইত্যাদি শব্দের সাথে পরিচিত। বায়োলজি হলাে জীব সম্পর্কিত জ্ঞান। নেটওয়ার্কের জগতে এরকম একটি ‘লজি’ হলাে টপােলজি (topology)। একটি নেটওয়ার্কের টপ বা উপর থেকে দেখলে নেটওয়ার্কটি যেমন দেখা যায় তাই হলাে টপােলজি। উপর থেকে তাকালে দেখা যাবে নেটওয়ার্কে কম্পিউটারসমূহ কীভাবে সংযুক্ত আছে, ক্যাবল কীভাবে একটি আরেকটির সাথে যুক্ত হয়েছে। নেটওয়ার্কে কম্পিউটারসমূহ একটি আরেকটির সাথে সংযুক্ত থাকার পদ্ধতিকে বলা হয় টপােলজি। নেটওয়ার্ক ডিজাইনের ক্ষেত্রে এই টপােলজি বিশেষ ভূমিকা রাখে। কোন কাজের জন্য নেটওয়ার্ক ব্যবহার করব তার ওপর ভিত্তি করে উপযুক্ত টপােলজি বাছাই করা দরকার। প্রতিটি টপােলজিরই কিছু সুবিধা ও অসুবিধা আছে। এসব বিবেচনা করে উপযুক্ত টপােলজি বেছে। নিতে হবে। এখন আমরা বিভিন্ন নেটওয়ার্ক টপােলজি ও সেগুলির সুবিধা অসুবিধা সম্পর্কে জানব।
ফিজিক্যাল এবং লজিক্যাল টপোলজি
নেটওয়ার্কে ফিজিক্যাল টপােলজি বলতে বােঝায় বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ডিভাইস ও মিডিয়ার লেআউট বা পরস্পর সংযোগ পদ্ধতি। এই মিডিয়ায় ডাটা প্যাকেট কিভাবে প্রবাহিত হয় তা বােঝানাে হয় লজিক্যাল টপােলজির। মাধ্যমে। প্রথমদষ্টে আপনার মনে হতে পারে ফিজিক্যাল টপােলজি দেখলেই তাে লজিক্যাল টপােলজি বােঝা যায়। তাহলে ভিন্ন করার দরকার কী? আসলে ব্যাপারটি এত সহজ নয়। ফিজিক্যাল টপােলজি দেখে লজিক্যাল টপােলজি সবসময় বােঝা যায় না। যেমন ধরা যাক আপনি দেখছেন পাঁচটি কম্পিউটার থেকে ক্যাবল বেরিয়ে একটি অয়্যারিং ক্লোজেটে যােগ হয়েছে। এটি দেখে আপনি হয়তাে ধরে নিতে পারেন এটি লজিক্যাল স্টার টপােলজি। কিন্তু এটি নির্ভর করছে ক্লোজেটে কোন ডিভাইস ব্যবহার করা হয়েছে- হাব (hub) নাকি মাউ (MAU) – তার উপর। এখানে যদি MAU ব্যবহৃত হয় তাহলে সেটি হবে লজিক্যাল বাস অথবা রিং টপােলজি, আর যদি হাব (hub) ব্যবহৃত হয় তাহলে হবে লজিক্যাল স্টার টপোলজি। অন্যদিকে লজিক্যাল ও ফিজিক্যাল এই দুই টপোলজি একটি আরেকটির উপর নির্ভরশীল। নেটওয়ার্কের কার্যপ্রণালী ভালভাবে বোঝার জন্য উভয় ধরনের টপোলজি বোঝা দরকার। ক্যাবল টানা, বিভিন্ন ডিভাইস সংযােগ, ইত্যাদির উপর নির্ভর করে ফিজিক্যাল এবং লজিক্যাল উভয় ধরনের টপোলজি। আমরা প্রথমে জানব বিভিন্ন ফিজিক্যাল টপােলজি, সেগুলির বৈশিষ্ট্য, সুবিধা-অসুবিধা এবং বাস্তবায়নের উপায় সম্পর্কে। তারপর আলোচনা করব বিভিন্ন লজিক্যাল টপোলজি ও তাদের কার্যপ্রণালী সম্পর্কে।
বিভিন্ন ফিজিক্যাল টপোলজি
নেটওয়ার্কিং মিডিয়া বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ডিভাইসের সাথে যেভাবে যুক্ত থাকে সেই লেআউটকে বলা হয় ফিজিক্যাল টপােলজি। একটি নেটওয়ার্কের বাইরে দেখেই আমরা এর ফিজিক্যাল টপােলজি বলে দিতে পারি। চারটি প্রধান ফিজিক্যাল টপোলজি হলে: বাস, স্টার, রিং এবং মেশ।
কোন ধরনের ফিজিক্যাল টপােলজি ব্যবহার করছেন তার উপর নির্ভর করছে নিম্নোক্ত বিষয়গুলাে:
- নেটওয়ার্ক তৈরি করতে কী পরিমাণ ব্যয় হবে।
- নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণযােগ্য হবে কি না ।
- নেটওয়ার্কে ডাটা স্পিড বা ব্যান্ডউইডথ কতাে হবে
- ক্যাবল ইনস্টল করতে কী পরিমাণ বেগ পেতে হবে
- ট্রাবলশুটিং কি সুবিধা হবে।
এসব দিকে নজর রেখে বিভিন্ন কোম্পানি স্টার, এক্সটেন্ডেড স্টার কিংবা হাইব্রিড টপােলজি ব্যবহার করে। আমরা এখন বিভিন্ন ফিজিক্যাল টপোলজি সম্পর্কে জানব।
বাস টপোলজি
ছােট, সহজে ইনস্টলযােগ্য ও কম ব্যয়ের মধ্যে নেটওয়ার্ক করতে চাইলে বাস টপােলজি ব্যবহার করা হয়। বাস। টপােলজিতে একটি মূল ক্যাবল সরাসরি চলে যায় এবং এর সাথে যুক্ত থাকে প্রতিটি কম্পিউটার। এখানে মূল ক্যাবল যেটি একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে চলে যায় তাকে বলা হয় বাস (bus)। বাসের দু’প্রান্তে থাকে টার্মিনেটর যা ইলেকট্রিক সিগন্যালকে শুষে নেয়। চিত্র ৩.১৪- এ এরকম একটি বাস টপােলজি দেখানাে হলাে।
সাধারণ বাস নেটওয়ার্ক সচরাচর একটি মাত্র ক্যাবল কোন প্রকার ইলেকট্রনিক ডিভাইস, যেমন রিপিটার বা এমপ্লিফায়ার, ছাড়া ব্যবহৃত হয় যাতে এক কম্পিউটারের সিগন্যাল আরেক কম্পিউটারে সরাসরি যেতে পারে। তাই এই টপােলজিকে প্যাসিভ টপােলজি (passive topology) বলা হয়। যখন একটি কম্পিউটার অন্য কোনাে কম্পিউটারের উদ্দেশ্যে মেসেজ পাঠায় তখন সেই মেসেজ সিগন্যাল ক্যাবলের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়ে সব কটি। কম্পিউটারের নিকট পৌঁছে। যে কম্পিউটারের উদ্দেশ্যে সেটি পাঠানাে হয় কেবল সেটিই সে মেসেজ গ্রহণ করে আর অন্যরা কেবল সেই প্যাকেটকে বাতিল করে দেয়, সেটির দিকে কোনাে নজর না দিয়েই। বাস টপােলজিতে একসাথে কেবল একটি কম্পিউটার মেসেজ পাঠাতে পারে। কোনাে কম্পিউটার যখন মেসেজ পাঠাচ্ছে তখন অন্যদের অপেক্ষা করতে হয় তার পাঠানাে শেষ না হওয়া পর্যন্ত। তার মেসেজ পাঠানাে শেষ হলে অন্য কম্পিউটার মেসেজ পাঠাতে পারে। তাই এ নেটওয়ার্কে কম্পিউটারের সংখ্যা বেড়ে গেলে নেটওয়ার্ক পারফরম্যান্সের অবনতি ঘটে। অবশ্য এ সমস্যা স্টার ও রিং টপোলজির ঘটে। বাস নেটওয়ার্কে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলাে টার্মিনেশন (termination)। বাস একটি প্যাসিভ টপােলজি হওয়ার কারণে এর একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পর্যন্ত সিগন্যাল অবাধে যেতে পারে। যদি ক্যাবলের প্রান্তকে টার্মিনেট করা না হয় তাহলে দেখা যাবে সিগন্যাল একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যাচ্ছে কিন্তু সেখান থেকে ধাক্কা খেয়ে আবার ফেরত আসছে। এভাবে ক্রমাগত ইলেকট্রিক সিগন্যাল যাতায়াত করতে থাকবে এবং এর পরের সিগন্যালের সাথে মিশে ভজঘট পাকাবে। প্রান্ত থেকে সিগন্যাল ফিরে আসাকে বলা হয় রিংগিং (ringing)। এই রিংগিং যাতে ঘটতে না পারে সেজন্য ক্যাবলের প্রান্তে টার্মিনেটর নামের একটি রােধক ব্যবহার করা হয়। এই টার্মিনেটর ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যাল কে নিঃশেষ করে দেয়, ফলে তা প্রতিফলিত হতে পারে না। প্রান্তে টার্মিনেটর ব্যবহার করা না হলে সমস্যা হবে। আপনার বাস টপােলজি নেটওয়ার্কে সমস্যা দেখা দিলে আগে দেখে নিন। বাসের দু’প্রান্ত ঠিকমতাে টার্মিনেট করা হয়েছে কি না।
বাস টপোলজির সুবিধা হলো:
- বাস নেটওয়ার্কে সবচেয়ে কম দৈর্ঘ্যের ক্যাবল লাগে। এর ফলে ব্যয় কম হয়।
- বাস নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করা যেতে পারে বাসের সাথে বিএনসিসি ব্যারেল কানেক্টর ব্যবহার করে আরেকটি বাসের সাথে সংযােগ করে দিয়ে। এর ফলে অধিক সংখ্যক কম্পিউটার নেটওয়ার্কে যােগ দিতে পারে।
- বাসকে বেশিদূর সম্প্রসারণ এবং সিগন্যাল পারফরম্যান্স সমুন্নত রাখতে রিপিটার ব্যবহার করা যেতেপারে। রিপিটার ইলেকট্রিক সিগন্যাল কি এমপ্লিফাই করে।
বাস নেটওয়ার্কের অসুবিধা গুলো হলো:
- নেটওয়ার্ক ব্যবহার বেশি হলে পারফরম্যান্স খুব খারাপ হতে পারে। একইসময়ে কেবল একটিমাত্র কম্পিউটার মেসেজ পাঠাতে পারে। তার মেসেজ পাঠানো শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্যদের অপেক্ষা করতে হয়। কম্পিউটারের সংখ্যা বেড়ে গেলে এ সমস্যা ব্যাপক হয়ে উঠতে পারে।
- প্রতি ব্যারেল কানেক্টর ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যাল দুর্বল করে দেয়। তাই বেশি সংখ্যক ব্যারেল কানেক্টর ব্যবহার করে বাসকে সম্প্রসারণ করা হলে তাতে নেটওয়ার্ক পারফরম্যান্স খারাপ হয়।
- বাস নেটওয়ার্ক ট্রাবলশু্যট করা কষ্টকর। যদি বাসের কোনােখানে ক্যাবল ব্রেক করে তাহলে সেটি সহজে বের করা যায় না। বাস নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে পুরাে নেটওয়ার্ক অকেজো হয়ে যায়। তখন একটি । কম্পিউটার আরেকটির সাথে যােগাযােগ করতে পারে না। এই ক্যাবল ব্রেক বের করার জন্য বাসের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পর্যন্ত টেস্ট করতে হয় ক্যাবল টেস্টার বা অন্য কোনাে ডিভাইস দিয়ে।
বাস টপােলজি ব্যবহার করে গড়ে ওঠা একটি জনপ্রিয় নেটওয়ার্ক হলাে ১০বেজ২ (10Base2)।
স্টার টপোলজি
স্টার টপোলজিতে সকল কম্পিউটার থেকে ক্যাবল এসে একটি কেন্দ্রীয় স্থানে যুক্ত হয় (চিত্র ৩.১৫)। এই সেন্ট্রাল । লােকেশনে থাকে একটি ডিভাইস যাকে বলা হয় কনসেনট্রেটর বা হাব (hub)। এই টপােলজিতে সবকটি কম্পিউটারের সংযােগ এক জায়গায় যুক্ত থাকে বলে একে কনসেনট্রেটেড টপােলজিও বলা হয়। নেটওয়ার্ককে। সম্প্রসারণ করার পরিকল্পনা থাকলে এই টপোলজি বেশি সুবিধাজনক। এতে সহজেই নেটওয়ার্ককে সম্প্রসারণ করা যায় কেবল হাবের সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়ে।
স্টার টপোলজিতে কোন কম্পিউটার অন্য কম্পিউটারে নিকট মেসেজ পাঠাতে চাইলে সিগন্যাল পাঠায় সরাসরি হাব এর নিকট। হাব এই সিগন্যালকে সব কম্পিউটারে কিংবা ওই গন্তব্য কম্পিউটারের নিকট পাঠায়। যদি সেই নেটওয়ার্ক হয়ে থাকে ব্রডকাস্ট বেজড তাহলে হাব থেকে সিগন্যাল যাবে সবক’টি কম্পিউটারে। আর যদি সেটি সুইচড নেটওয়ার্ক হয় তাহলে হাব বা সুইচ নেই সিগন্যালকে ওই নির্দিষ্ট কম্পিউটারের নিকট পাঠিয়ে দেবে। স্টার টপোলজিতে বিভিন্ন ধরনের ক্যাবল ব্যবহার করা যায়। কোন ধরনের ক্যাবল ব্যবহার করবাে তার উপর নির্ভর করে বিশেষ ধরনের হাব দরকার হবে। কোনাে কোনাে হাবে একইসাথে কোএক্সিয়াল ক্যাবল এবং ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল ব্যবহার করা যায়।
স্টার টপোলজির সুবিধা হলো:
- সহজেই নেটওয়ার্ক অধিক সংখ্যক কম্পিউটার যোগ করা যেতে পারে। স্টার টপোলজিতে কম্পিউটারের সংখ্যা নির্ভর করে হাবে কয়টি পাের্ট আছে তার উপর। একটি হাবের সবকটি পাের্ট ব্যবহৃত হলে এই নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করা যেতে পারে আরেকটি হাব সেই হাবের সাথে যােগ করে। এভাবে হাবের সংখ্যা বাড়িয়ে নেটওয়ার্ক অধিক সংখ্যক কম্পিউটার যোগ করা যেতে পারে।
- নেটওয়ার্কে কোনাে সমস্যা দেখা দিলে সহজেই কেন্দ্রীয় অবস্থান অর্থাৎ হাব থেকে সমস্যা অনুসন্ধান। শুরু করা যায়। ইনটেলিজেন্ট হাব ব্যবহার করা হলে সেটি নেটওয়ার্ক মনিটরিঙের কাজও করতে পারে।
- নেটওয়ার্কের কোনাে একটি কম্পিউটার বিকল হয়ে গেলে তা নেটওয়ার্কের উপর কোনাে প্রভাব ফেলে না। অন্যান্য কম্পিউটার নিজেদের মধ্যে ঠিকমতো যােগাযােগ করতে পারে। কোন কম্পিউটার সমস্যাযুক্ত তাও বের করা যায় সহজেই।
- হাব বিভিন্ন ধরনের ক্যাবল সাপাের্ট করলে একইসাথে কয়েক ধরনের ক্যাবল ব্যবহারের সুবিধা পওয়া যায়।
স্টার টপােলজির অসুবিধা হলাে:
- কেন্দ্রের হার অকেজো হয়ে গেলে পুরাে নেটওয়ার্কই বিকল হয়ে পড়ে।
- এই টপােলজিতে অধিক ক্যাবল লাগে। কারণ প্রতিটি কম্পিউটার থেকে ক্যাবলকে কেন্দ্রীয় হাবের নিকট নিয়ে যেতে হয়। ক্যাবল বেশি লাগায় খরচ বেশি হয়।
স্টার টপােলজি ব্যবহার করে গড়ে ওঠা একটি জনপ্রিয় নেটওয়ার্ক হলাে ১০বেজটি (10BaseT) নেটওয়ার্ক।
রিং টপোলজি
রিং টপোলজিতে একটি কম্পিউটার আরেকটির সাথে যুক্ত থাকে এবং শেষ কম্পিউটারটি যুক্ত হয় প্রথম। কম্পিউটারের সাথে (চিত্র ৩.১৬)। এভাবে এটি একটি রিং বা বলয় তৈরি করে। এই বলয়ের প্রতিটি কম্পিউটার। সমান অধিকার পায় ডাটা প্রবাহের ক্ষেত্রে। উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন নেটওয়ার্ক তৈরির জন্য এ ধরনের টপোলজি ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের নেটওয়ার্কের বড় সবিধা হলাে এখানে প্রতিটি কম্পিউটার সমান অধিকার পায় এবং অধিক কম্পিউটারের কারণে নেটওয়ার্কের পারফরম্যান্স কমে গেলে সেটি সবার জন্যই প্রযােজ্য হয়। রিং টপােলজিকে বলা হয় একটিভ টপােলজি। এ টপােলজিতে কোনাে কম্পিউটার অন্য কোনাে কম্পিউটারের নিকট মেসেজ পাঠাতে চাইলে সেটি এর নিকটবর্তী কম্পিউটারের নিকট যাবে। সে কম্পিউটার দেখবে সেই মেসেজটি তার জন্য কি না। সেটি তার জন্য না হলে সে ওই মেসেজকে পরবর্তী কম্পিউটারের নিকট পাঠাবে, এভাবে সেটি গন্তব্যে পৌঁছাবে। প্রতিটি কম্পিউটার সেই সিগন্যালকে বর্ধিত করে পরের কম্পিউটারের নিকট | পাঠায়। আর এ টপােলজিতে ডাটা প্যাকেট সবসময় একই দিকে (সাধারণত ঘড়ির কাঁটার দিকে) প্রবাহিত হয়। বাস নেটওয়ার্কের মতাে এখানে কোন টার্মিনেটর ব্যবহারের দরকার পড়ে না, কারণ এখানে উন্মুক্ত প্রান্ত বলে কিছু। থাকে না।
বিশেষ ধরনের রিং নেটওয়ার্ক হলাে টোকেন রিং নেটওয়ার্ক। টোকেন রিং নেটওয়ার্কে টোকেন পাসিং বলে একটি পদ্ধতি আছে। এতে একটি সংক্ষিপ্ত মেসেজ, যা টোকেন নামে পরিচিত, রিঙে ঘুরতে থাকে। ওই টোকেনটি যখন যে কম্পিউটারের কাছে থাকে তখন সেই কম্পিউটার নেটওয়ার্কে ডাটা পাঠাতে পারে। ডাটা পাঠানাে শেষ হলেই টোকেনটি আবার ছেড়ে দিতে হবে এবং সেটি রিং বা বলয়ে আবর্তিত হতে থাকবে। যে কম্পিউটারের ডাটা পাঠানাের দরকার পড়বে সে ওই টোকেন ক্যাপচার করবে এবং ডাটা পাঠাবে।
এই টোকেন পাসিং খুব দ্রুত ঘটে থাকে। একটি ২০০ মিটার ব্যাসের বলয়ে একটি টোকেন সেকেন্ডে ১০,০০০। বারেরও বেশি ঘুরতে পারে। ফাইবার ডিস্ট্রিবিউটেড ডাটা ইন্টারফেস (FDDI) বা ফিডি নেটওয়ার্ক এধরনের রিং টপোলজি ব্যবহার করে গড়ে উঠেছে।
রিং টপোলজির সুবিধা হলো:
- প্রতিটি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সমান ভাবে প্রবেশের সুযোগ পায়, কারণ টোকেন প্রত্যেক কম্পিউটারের কাছেই যায়। সে কারণে কোনাে একটি কম্পিউটার পুরাে নেটওয়ার্কে আধিপত্য চালাতে পারে না।
- সব কম্পিউটারের সমানাধিকার থাকার ফলে নেটওয়ার্ক ডিগ্রেডেশেনও হয়ে থাকে সমানভাবে। তার মানে কম্পিউটারের সংখ্যা বেশি হয়ে গেলে নেটওয়ার্কের পারফরম্যান্স হ্রাস পায়, এবং হ্রাস পাওয়ার ফল সবাই সমানভাবে ভাগ করে।
রিং টপোলজি নেটওয়ার্কের অসুবিধা হলে:
- রিঙের একটি কম্পিউটার অকেজো হলে নেটওয়ার্ক অকেজো হয়ে যায়।
- রিং নেটওয়ার্কে কোনাে সমস্যা হলে ত্রুটি খুঁজে বের করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
- নেটওয়ার্ক রিং থেকে কোনাে কম্পিউটার সরিয়ে নিলে কিংবা এতে কোনাে কম্পিউটার যােগ করলে নেটওয়ার্কের কাজ বিঘ্নিত হয়।
মেশ টপোলজি
মেশ টপােলজিতে প্রতিটি কম্পিউটার প্রতিটির সাথে যুক্ত থাকে। এতে অনেক সংযােগ তৈরি করতে হয়। এখানে সংযােগের সংখ্যা বেশি হওয়ায় বড় ধরনের নেটওয়ার্কে মেশ টপােলজি ম্যানেজ করা প্রায় অসাধ্য হয়ে পড়ে। তাই দেখা যায় বেশিরভাগ মেশ টপোলজিতে সত্যিকার মেশ ব্যবহার না করে হাইব্রিড মেশ ব্যবহৃত হয়।
মেশ টপােলজি ইনস্টল ও ম্যানেজ করা কঠিন। নেটওয়ার্ক ডিভাইস বাড়ার সাথে সাথে এটির সংখ্যা বাড়তে থাকে। যেমন একটি নেটওয়ার্কে যদি ৫ টি ডিভাইস থাকে এবং সেগুলিকে মেশ টপােলজির অধীনে আনতে চান তাহলে সংযােগ তৈরি করতে হবে ১৫টি (৫+৪+৩+২+১)। তেমনি ডিভাইসের সংখ্যা ১০টি হলে সংযােগের সংখ্যা হবে ৫৫টি (১০+৯+৮+৭+৬+৫+৪+৩+২+১)। এভাবে ডিভাইস বাড়ার সাথে সাথে সংযােগও বাড়বে। মেশ টপােলজির বড় সুবিধা হলাে এটি ফল্ট টলারেন্ট অর্থাৎ এতে কোনাে একটি সংযােগ অকেজো হলে। নেটওয়ার্ক অকেজো হওয়ার সম্ভাবনা নেই। প্রতিটি ডিভাইস প্রতিটির সাথে সবসময় সংযােগ রক্ষা করতে পারবে। এ টপোলজিতে। তবে অসুবিধা হলে এটি ম্যানেজ করা এবং কনফিগার করা। এটি ব্যয়বহুলও বটে।
হাইব্রিড টপােলজি
এখানে উল্লেখিত বিভিন্ন টপােলজির একাধিক টপােলজি নিয়ে গড়ে ওঠে হাইব্রিড টপােলজি। এতে একইসাথে কোন অংশে স্টার কোন অংশে বাস কিংবা রিং টপোলজি ব্যবহৃত হতে পারে। একে প্রধান দুইভাগে ভাগ করা যেতে পারে: স্টার বাস এবং স্টার রিং।
স্টার বাস
এই টপোলজি বাস এবং স্টার উভয় টপোলজির সমন্বয় ঘটানো হয়। এখানে কয়েকটি স্টার টপােলজির হাবকে এক বাসে সংযুক্ত করা হয় (চিত্র ৩.১৯)। এতে যদি কোনাে কম্পিউটার বিকল হয় তাহলে শুধু সেই কম্পিউটার নেটওয়ার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়। আর যদি কোনাে হাব বিকল হয় তাহলে সেই হাবের সাথে যুক্ত কম্পিউটারসমূহ নেটওয়াক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং এতে বাস নেটওয়ার্ক দুটি অংশে বিভক্ত হয়ে পড়তে পারে।
স্টার রিং
এ টপােলজিতে স্টার টপােলজির মতাে করেই নেটওয়ার্ক ক্যাবল যুক্ত থাকে কিন্তু হাবগুলি যুক্ত থাকে রিং আকারে (চিত্র ৩.২০)। টোকেন রিং নেটওয়ার্ক এধরনের স্টার রিং নেটওয়ার্ক। এটি দেখতে যদিও স্টারের মতাে কিন্তু কাজ স্টার রিঙের।
বিভিন্ন লজিক্যাল টপোলজি
আমরা এতক্ষণ বিভিন্ন ফিজিক্যাল টপোলজি সম্পর্কে জেনেছি। এখন জানি লজিক্যাল টপােলজি সম্পর্কে। ফিজিক্যাল টপোলজিতে জেনেছি কিভাবে একটি ডিভাইস আরেকটির সাথে যুক্ত থাকে। এসব ডিভাইস কীভাবে ডাটা ট্রান্সমিট করে তা বুঝতে পারলেই পেয়ে যাব লজিক্যাল টপােলজি। লজিক্যাল টপােলজি হতে পারে মাত্র দু’প্রকার:বাস এবং রিং। কোনাে নেটওয়ার্কে ডিভাইসগুলি বাসে যুক্ত থাকলে আমরা সহজেই বুঝতে পারি যে এটি একটি বাস নেটওয়ার্ক এবং এখানে ডাটা পরিবাহিত হচ্ছে একটি কম্পিউটার থেকে আরেকটিতে সিরিয়্যালি। এতে কোনাে কম্পিউটার ডাটা পাঠাতে চাইলে সেটি সকল কম্পিউটারের কাছেই পৌঁছে। তেমনি ফিজিক্যাল রিং দেখে আমরা সহজেই ধরে নিতে পারি সেটিতে ডাটা প্রবাহিত হচ্ছে রিং টপােলজির নিয়মানুসারে। কিন্তু সমস্যা হয় যখন সেটি ফিজিক্যাল স্টার টপোলজি ব্যবহার করে তখন। ফিজিক্যাল স্টার টপোলজিতে প্রতিটি ডিভাইস একটি সেন্ট্রাল ডিভাইসের সাথে যুক্ত থাকে। নেটওয়ার্ক। ইন্টারফেস কার্ড, হাব কিংবা মাউ (MAU) এবং লেয়ার ২-এ ব্যবহৃত লেয়ার ২ প্রটোকলসমূহের উপর নির্ভর। করছে এর লজিক্যাল টপোলজি কি হবে।
লজিক্যাল বাস
বর্তমান ইথারনেট নেটওয়ার্ক আমরা সাধারণত ফিজিক্যাল স্টার টপোলজি ব্যবহার করে থাকি। ফিজিক্যাল স্টার টপােলজি ব্যবহার করা হলে সবকটি কম্পিউটার থেকে হাবে সংযােগ দেয়া হয়। যেকোনাে ডিভাইস থেকে সিগন্যাল পরিবাহিত হতে হলে সেটি যায় হাবের মধ্য দিয়েই। এই সিগন্যাল পরিবহনের জন্য হাব লজিক্যাল বাস টপােলজি ব্যবহার করে। কারণ হাব কোনাে সিগন্যাল পেলে সেটিকে এর সাথে যুক্ত সকল ডিভাইসের নিকট পাঠিয়ে দেয়।
লজিক্যাল বাস টপোলজির সুবিধা হলো:
- একটি কম্পিউটার বিকল হলে সেটি পুরাে নেটওয়ার্ককে অকেজো করে দিতে পারে না।
- এটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত লজিক্যাল টপোলজি।
- অন্যান্য কম্পিউটারের কাজ বিঘ্নিত না করে এ ধরনের টপোলজিতে সহজেই পরিবর্তন আনা যেতে পারে।
লজিক্যাল বাস টপোলজির অসুবিধা হলে:
- একই সময়ে কেবল একটি মাত্র ডিভাইস সিগন্যাল পাঠাতে পারে।
- একসাথে একাধিক কম্পিউটার সিগন্যাল পাঠাতে চাইলে সেসব সিগন্যালের মাঝে কলিশন বা সংঘর্ষ হতে পারে।
লজিক্যাল রিং
কোন ফিজিক্যাল টপোলজি ডাটা যদি রিং বা বলয়াকার পরিবাহিত হয় তাহলে সেটিকে বলা হবে লজিক্যাল রিং টপােলজি। লজিক্যাল রিং টপােলজির বাস্তব উদাহরণ হলাে টোকেন রিং নেটওয়ার্ক। এখানে ডাটা পরিবাহিত হয় বলয়ে। ফিডি (FDDI) নেটওয়ার্ক হলাে লজিক্যাল রিং টপােলজির আরেক উদাহরণ। ফিজিক্যাল স্টার টপোলজিতে লজিক্যাল রিং টপোলজি হতে পারে যদি হাবের স্থানে থাকে মাউ (MAU) বা। মাল্টিস্টেশন একসেস ইউনিট। এই মাউ দেখতে হাবের মতােই একটি ডিভাইস এবং এতে কম্পিউটারগুলি যুক্ত থাকে স্টার টপোলজির মতো করেই।
এন্টারপ্রাইজ নেটওয়ার্ক
এন্টারপ্রাইজ নেটওয়ার্ক তৈরি হয় খুবই বড় কোম্পানির জন্য যাদের কর্মক্ষেত্র শহর থেকে শহরে, দেশ থেকে দেশে বিস্তৃত। এধরনের নেটওয়ার্ক ডিজাইন, বাস্তবায়ন ও পরিচালনা করা সত্যিই বেশ কঠিন। যেমন ধরা যাক। মাইক্রোসফট কর্পোরেশনের কথা। বিশ্বজুড়ে মাইক্রোসফটের আছে বিভিন্ন আঞ্চলিক অফিস। এসব অফিসের। ইউজাররা যদি কেন্দ্রীয়ভাবে কোম্পানির তথ্য ব্যবহার করতে চায় তাহলে এন্টারপ্রাইজ নেটওয়ার্ক ডিজাইন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। হাজার হাজার ইউজার ও শত শত সার্ভারের সমন্বয়ে এন্টারপ্রাইজ নেটওয়ার্ক সত্যিই বেশ বিশাল আকার ধারণ করতে পারে। এধরনের নেটওয়ার্কে প্রতিটি অফিসকে মনে হয় একেকটি সিঙ্গল অথবা মাল্টিসার্ভার নেটওয়ার্ক। এসব নেটওয়ার্ক আবার পরস্পরযুক্ত হয়ে গড়ে তােলে এন্টারপ্রাইজ নেটওয়ার্ক। একটি নেটওয়ার্ক যখন আরেকটি নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত হয়ে বড় নেটওয়ার্ক তৈরি করে তখন তাকে বলা হয় ইন্টারনেটওয়ার্ক। এন্টারপ্রাই নেটওয়ার্ক হলে এ ধরনের ইন্টারনেট ওয়ার্ক।
হাইব্রিড নেটওয়ার্ক
এতক্ষণ আমরা পিয়ার-টু-পিয়ার ও ক্লায়েন্ট- সার্ভার নেটওয়ার্কের বিভিন্ন সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে জেনেছি। দুই ধরনের নেটওয়ার্কের সুবিধা যাতে পাওয়া যেতে পারে সেজন্য উভয় নেটওয়ার্কের ভালাে ফিচারগুলাে নিয়ে গড়ে ওঠে হাইব্রিড নেটওয়ার্ক। এটি একইসাথে পিয়ার-টু-পিয়ার এবং ক্লায়েন্ট- সার্ভার নেটওয়ার্ক। হাইব্রিড নেটওয়ার্ক রিসোর্স ও ইউজার ম্যানেজমেন্ট কেন্দ্রীয়ভাবে সার্ভার- বেসড রাখা হয়, একইসাথে ইউজাররা নিজ নিজ কম্পিউটারের রিসোর্স শেয়ার ও ম্যানেজ করতে পারেন। এখানে ওয়ার্কগ্রুপ ইউজাররা সার্ভারের রিসাের্সে একসেস করতে চাইলেই কেবল সেই সার্ভার বা ডােমেইনে লগ- অন করার দরকার পড়ে। কিন্তু ওয়ার্কগ্রুপের রিসাের্সে প্রবেশ করতে চাইলে সার্ভারে লগ- অন না করে সেই ওয়ার্কস্টেশনে লগ- অন করলেই চলে।
হাইব্রিড নেটওয়ার্ক সুবিধা গুলো হলো:
- ক্লায়েন্ট-সার্ভার অ্যাপ্লিকেশন গুলো কেন্দ্রীয়ভাবে রাখা ও ম্যানেজ করা যায়।
- এ ইউজাররা নিজ নিজ কম্পিউটারের রিসাের্সে প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং তাদের রিসাের্স শেয়ার করতে পারে।
হাইব্রিড নেটওয়ার্ক অসুবিধা হলে:
- দু’ধরনের নেটওয়ার্ক একসাথে থাকার ফলে নেটওয়ার্কে প্রবেশ ইউজারদের জন্য অসুবিধাজনক হয়ে উঠতে পারে।
- ওয়ার্কগ্রুপ এবং সার্ভার/ডােমেইনের জন্য ভিন্ন ভিন্ন পাসওয়ার্ড মনে রাখার দরকার পড়ে।
- বিভিন্ন কম্পিউটারের রিসোর্স থাকার ফলে সেগুলো কেন্দ্রীয়ভাবে ম্যানেজ করা যায় না। একই ফাইলের বিভিন্ন ভার্সন বিভিন্ন কম্পিউটারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে পারে। মত।
- বিভিন্ন ওয়ার্কস্টেশন সংরক্ষিত ফাইল সমূহ ব্যাকআপ করতে অসুবিধা হয়।
- ক্লায়েন্ট- সার্ভার মডেলে যে পরিমাণ নিরাপত্তা পাওয়া যায় তা এখানে থাকে না।
সারকথা
এ অধ্যায়ে আমরা বিভিন্ন নেটওয়ার্ক আর্কিটেকচার সম্পর্কে জানলাম। এর মধ্যে আছে পিয়ার-ট- সিয়া। নেটওয়ার্ক, ক্লায়েন্ট- সার্ভার নেটওয়ার্ক এবং হাইব্রিড নেটওয়ার্ক। প্রতিটি নেটওয়ার্কের কিছু সুবিধা ও অসঠি৮ আছে। আপনার সংস্থার প্রয়ােজন অনুসারে এবং এসব সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোন নেটওয়ার্ক মডেল আপনি বেছে নেবেন। । পিয়ার-টু-পিয়ার নেটওয়ার্ক ইউজাররা নিজ নিজ রিসোর্স শেয়ার ও ম্যানেজ করতে পারে। এখানে প্রত্যেকেট। নিজ নিজ ওয়ার্কস্টেশন ম্যানেজ করে এবং নেটওয়ার্ক এডমিনিস্ট্রেটর বলে কেউ থাকে না। এর সুবিধা হলো। সার্ভার হার্ডঅয়্যার এবং নেটওয়ার্কিং অপারেটিং সিস্টেম লাগে না। তবে এটি কেবল ১০ বা তার কমসংখ্যক। ইউজারের জন্যই উপযােগী। শেয়ার লেভেল একসেস কন্ট্রোল ব্যবহার করায় এতে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা নেই। ক্লায়েন্ট- সার্ভার নেটওয়ার্ক রিসোর্স সংরক্ষণ করা হয় সার্ভারে, ইউজাররা রিসোর্স শেয়ার বা ম্যানেজ করতে পারে। না। কোন রিসোর্স শেয়ার, ম্যানেজ এবং পুরো নেটওয়ার্ক পরিচালনার জন্য ডেডিকেটেড নেটওয়ার্ক। এডমিনিস্ট্রেটর দরকার পড়ে। সার্ভার হিসেবে উন্নতমানের হার্ডঅয়্যার ও নেটওয়ার্ক অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করতে হয়। এটি অনেক বেশিসংখ্যক ইউজার সাপাের্ট করে। ইউজার- লেভেল একসেস কন্ট্রোল ব্যবহার করে বলে এতে নিরাপত্তা অনেক শক্তিশালী। ক্লায়েন্ট- সার্ভার নেটওয়ার্কে একাধিক সার্ভার থাকতে পারে এবং একেকটি সার্ভারের একেকরকম ভূমিকা থাকতে পারে, যেমন- ফাইল সার্ভার, এপ্লিকেশন সার্ভার, প্রিন্ট সার্ভার, মেসেজিং সার্ভার, ডাটাবেজ সার্ভার, ইত্যাদি। আবার ক্লায়েন্ট- সার্ভার নেটওয়ার্কের আকার অনুসারে একে তিনভাগে ভাগ করা যেতে পারে: এক সার্ভারবিশিষ্ট নেটওয়ার্ক, একাধিক সার্ভারবিশিষ্ট নেটওয়ার্ক এবং এন্টারপ্রাইজ নেটওয়ার্ক। এন্টারপ্রাইজ নেটওয়ার্ক আসলে একাধিক নেটওয়ার্ক সমন্বয় কাকে বলা হয় ইন্টার নেটওয়ার্ক। পিয়ার-টু-পিয়ার নেটওয়ার্ক ও ক্লায়েন্টসার্ভার নেটওয়ার্কের সমন্বয়ে গড়ে ওঠে হাইব্রিড নেটওয়ার্ক। এতে রিসোর্স সার্ভারে সংরক্ষণ করা যেতে পারে এবং ইউজাররা ওয়ার্কগ্রুপ নিজ নিজ ওয়ার্কস্টেশনের রিসাের্স শেয়ার ও ম্যানেজ করতে পারে। এতে পিয়ার-টু-পিয়ার এবং ক্লায়েন্ট- সার্ভার উভয় ধরনের নেটওয়ার্কের সুবিধা-অসুবিধা বিদ্যমান।। নেটওয়ার্কে একটি কম্পিউটার আরেকটি কম্পিউটারের সাথে কীভাবে যুক্ত আছে সেই লেআউটকে বলা হয় টপােলজি। এটি দু’ধরনের হতে পারে: ফিজিক্যাল ও লজিক্যাল। ফিজিক্যাল টপােলজিগুলাে হলাে- বাস, স্টার, রিং হাইব্রিড এবং মেশ। আর লজিক্যাল টপোলজি হতে পারে দু’ধরনের: লজিক্যাল বাস ও লজিক্যাল রিং। এসব টপোলজির প্রতিটিতেই আছে সুবিধা-অসুবিধা। আপনার নেটওয়ার্কের জন্য সুবিধাজনক একটি টপােলজি বাছাইয়ের উপর নির্ভর করবে এর ব্যয়, গতি এবং আরাে কিছু বৈশিষ্ট্য।
HOME
Nice post
Good post